দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজার ইস্যুতে ২ প্রজ্ঞাপন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মুলত কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুঁজিবাজারের ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ তথ্য দৈনিক ভিত্তিতে জানতে চেয়েছে। অন্যদিকে সূচকের সঙ্গে সমন্বয় করে মার্জিন ঋণের হার পুনঃনির্ধারণ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে প্রেরিত বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা উদ্বৃত্ত তারল্য যেন পুঁজিবাজারসহ অনুৎপাদনশীল খাতে চলে না যায়, সেজন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এদিকে, সূচকের সঙ্গে সমন্বয় করে মার্জিন ঋণের হার পুনঃনির্ধারণ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসইর) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আট হাজারের নিচে থাকলে মার্জিন ঋণের হার হবে শতকরা ৮০ শতাংশ। আর ইনডেক্স আট হাজারের বেশি হলে মার্জিন ঋণের হার হবে শতকরা ৫০ শতাংশ। শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বিএসইসির চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন গণমাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, করোনা সংক্রমণের প্রভাব মোকাবেলায় সরকারি প্রণোদনার আওতায় কম সুদের ঋণের একটি অংশ পুঁজিবাজার, জমি, ফ্ল্যাট কেনাসহ অনুৎপাদনশীল খাতে চলে যাওয়ার তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত ২৫ জুলাই সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে প্রথমবার সতর্ক করা হয়। পরবর্তীতে প্রণোদনার আওতায় ঋণের ব্যবহারসহ বিভিন্ন তথ্য চেয়ে আরও একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে ঋণের সঠিক ব্যবহার যাচাইয়ের জন্য মাঠ পর্যায়েও পরিদর্শনের সিদ্ধান্তও প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ চিঠিতে পুঁজিবাজারের ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ তথ্য দৈনিক ভিত্তিতে জানতে চেয়ে ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এদিকে, সুচক ৭০০০ পয়েন্ট এর পরিবর্তে সুচক ৮০০০ পয়েন্ট পর্যন্ত বিদ্যমান মার্জিন ঋণ হার পুনঃনির্ধারণ করেছে বিএসইসি। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্য নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা যায়।

পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একদিনের ব্যবধানে দুই প্রজ্ঞাপন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএসইসির প্রজ্ঞাপনকে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক বললেও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনকে কোনভাবেই ইতিবাচক বলে গ্রহণ করতে পারছেন না তারা।

তবে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে যেকোন তথ্য চাইতেই পারে। এছাড়া, প্রণোদনার অর্থ কোথায় কিভাবে ব্যবহ্নত হচ্ছে, তা জানাটা খুবই জরুরী। কারণ এই অর্থ অন্য কোথায়ও ব্যবহারের জন্য নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষোদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর লেনদেনের যে তথ্য চেয়েছে, তা পুঁজিবাজারের জন্য খুবই ভালো একটি উদ্যোগ। এতে করে পুঁজিবাজারে আরও বেশি স্বচ্চতা ফিরে আসবে।

প্রতিদিনের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানানোর স্বক্ষমতা তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর রয়েছে কি না? তা আগে দেখতে হবে। যদি স্বক্ষমতা না থাকে তাহলে তথ্য দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে স্বক্ষম করে তুলতে হবে। এতে করে বাজার থেকে অর্থ প্রাচার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। অনেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তকে বাজারের জন্য আতঙ্ক মনে করলেও, আসলে পুঁজিবাজারের জন্য এটি একটি ভালো উদ্যোগ।

তিনি আরও বলেন, বিএসইর চেয়্যারম্যান মার্জিণ ঋণের হার যে পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা থেকেই বুঝা যায় বাজার আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। বিএসইসির চেয়ারম্যান বিচঙ্খনতার সাথে যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন, এতে করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। আতঙ্ক সৃষ্টি করে এই বাজারকে থামিয়ে রাখা যাবে না।

ইতোমধ্যে, দূর্বল কোম্পানিগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনার জন্য সময় দিচ্ছে, যারা পারছে না তাদেরকে নার্সিং করা হচ্ছে। অর্থাৎ বাজার ভালো করার জন্য বিএসইসির যা যা করার প্রয়োজন তাই করা হচ্ছে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। এমন আস্থাশীল পুঁজিবাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে কুচক্র মহল বেশি দূর এগিয়ে যেতে পারবে না।

পুঁজিবাজার অতীতের চেয়ে খুব ভালো অবস্থানে: বিএসইসি চেয়ারম্যান: দেশের পুঁজিবাজার অতীতের চেয়ে খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে। বাজার মুলধন ৩ লাখ কোটি টাকা থেকে ৫ লাখ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। অনেকে এই বাজারকে ওভার-ভ্যালুড বলে মনে করছেন, যা সঠিক নয়। পুঁজিবাজার আরও অনেক দূর যাবে বলে জানান পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল ইসলাম। রোববার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন না হলে আজ এত সুন্দর পুঁজিবাজার উপহার দিতে পারতাম না, স্বাধীনভাবে বাজারকে এগিয়ে নিতে পারতাম না। পুঁজিাবাজর সংশ্লিষ্ট সকলেই সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পুঁজিবাজার গড়তে কাজ একযোগে করছে। বাজারকে আরও এগিয়ে নিতে সকলের সমন্বিত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও আদর্শ হলো দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি ও সোনার বাংলা গড়া। আসুন আমরা অর্থনৈতিক মুক্তি ও সোনার বাংলা গড়ে ভালো পুঁজিবাজার উপহার দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও আব্দুল হালিম।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান, বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনস্টিটিউশনের (বিআইসিএম) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার প্রমুখ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় পুঁজিবাজারের সেরা ১০ ব্যাংক: প্রথমবারের মতো দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাসটেইনেবল রেটিং প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তালিকায় বেসরকারি খাতের সেরা ১০ ব্যাংককে টেকসই ব্যাংকের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইসলামি ধারার ব্যাংক রয়েছে তিনটি। বাকি সাতটি কনভেনশনাল ব্যাংক। সেরা টেকসই মর্যাদা পেয়েছে পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানও।

মূলত চারটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে এই মান যাচাই করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। টেকসই অর্থায়ন নির্দেশক (সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ইন্ডিকেটর), সবুজ পুনঃঅর্থায়ন (গ্রিন রিফাইন্যান্স), সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম (সিএসআর) ও মূল ব্যাংকিং কার্যক্রমের টেকসই সক্ষমতা (কোর ব্যাংকিং সাসটেইনেবিলিটি)।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকগুলোকে সুশাসন, শুদ্ধাচার ও সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনে অনুপ্রাণিত করতে শীর্ষ ১০ ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সিএসআর ব্যয়, গ্রিন ফাইন্যান্স, কোর ব্যাংকিং কার্যক্রম, খেলাপি ঋণের হারসহ বেশকিছু সূচকের ভিত্তিতে সাসটেইনেবিলিটি রেটিং তৈরি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, টেকসই কোর ব্যাংকিং সূচকের মধ্যে ব্যাংকগুলোর ঋণের মান, মূলধন পরিস্থিতি, এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সবুজ অর্থায়ন, ঋণগ্রহীতার সংখ্যা, গ্রামীণ অর্থায়ন, নারী ঋণগ্রহীতার সংখ্যা, কৃষিতে টেকসই অর্থায়ন, সবুজ অর্থায়নের ক্যাটাগরি ও প্রকল্পের পরিমাণ, ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন,

টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে খেলাপি ঋণ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সবুজ ব্যাংকিংয়ের চর্চাকেও এ মানদণ্ডের অন্যতম নির্ধারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগ গত সপ্তাহে টেকসই ব্যাংকের নাম প্রকাশ করেছে। সেখানে ক্রমতালিকা সাজানো হয়েছে আদ্যক্ষরের ভিত্তিতে। ফলে মানের দিক থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে কোন তিনটি ব্যাংক তা জানা যায়নি।

টেকসই ১০-এর তালিকায় নাম থাকা ব্যাংকগুলো হচ্ছে: আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক।

এ প্রসঙ্গে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সেরা টেকসই ব্যাংকের তালিকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক রয়েছে। এটা খুবই আনন্দের ব্যাপার।’ তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবেশবান্ধব প্রকল্প, সৌরবিদ্যুৎসহ জলবায়ুর ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় না—এমন প্রকল্পে অর্থায়ন করেছি।’ তার ব্যাংককে এই স্বীকৃতির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এদিকে সেরা টেকসই মর্যাদা পাওয়া পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হলো হজ ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, সৌদি-বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এবং ইউনাইটেড ফাইন্যান্স লিমিটেড।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার মোরশেদ মিল্লাত বলেন, ‘২০২০ সালের প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠানো তথ্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮টি বিভাগের তথ্যের যাচাই-বাছাই করে এই মান নির্ধারণ করা হয়েছে।’

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগ, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের সহযোগিতায় সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগ রেটিংটি তৈরি করেছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগ থেকে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের প্রতি একটি সার্কুলার জারি করা হয়। এতে সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স পলিসির নির্দেশনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) ভিত্তিতে সাসটেইনেবিলিটি রেটিং প্রণয়নের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

জানা গেছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল ব্যাংকিং কার্যক্রমের টেকসই সক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে মোট খেলাপি ঋণের হার, ঝুঁকিভারিত সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত, লিকুইডিটি কাভারেজ রেশিও, নেট স্টেবল ফান্ডিং রেশিও, কোর রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট, সম্পদের বিপরীতে আয়, ইকুইটির বিপরীতে আয়, নিট ইন্টারেস্ট মার্জিন ও এফিসিয়েন্সি রেশিওর মতো বিষয়গুলোর ভিত্তিতে।

এদিকে সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ও জলবায়ু ঝুঁকি তহবিলের অনুদানের অর্থ ব্যয়ের মতো বিষয়গুলোও বিবেচনায় এসেছে। পাশাপাশি সবুজ পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হয়েছে বার্ষিক পুনঃঅর্থায়নের হার, খাত ও পণ্যভিত্তিক পুনঃঅর্থায়নের পাশাপাশি গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ডের ডলার ও ইউরো কম্পোনেন্টের ভিত্তিতে।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সবুজ অর্থায়ন কার্যক্রম নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, গত বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬০৪ কোটি টাকা সবুজ অর্থায়ন করেছে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড।

তালিকায় এর পরের অবস্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ (৫৯৫ কোটি টাকা), এক্সিম ব্যাংক (৫০২ কোটি), ব্র্যাক ব্যাংক (৪২১ কোটি), আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক (১৪২ কোটি), ব্যাংক এশিয়া (১২২ কোটি), আইএফআইসি ব্যাংক (১০৭ কোটি), এনআরবি ব্যাংক (৬৫ কোটি), মার্কেন্টাইল ব্যাংক (১৮ কোটি) ও বেসিক ব্যাংক (১৩ কোটি টাকা)।

এই ব্যাংকগুলো তাদের মোট বিতরণকৃত ফান্ডেড মেয়াদি ঋণের ১০ শতাংশের বেশি অর্থ সবুজ অর্থায়ন করেছে। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেড (বিআইএফএফএল) বিতরণকৃত মোট ফান্ডেড মেয়াদি ঋণের ৫ শতাংশের বেশি অর্থ সবুজ অর্থায়ন করেছে।

ডিএসই খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে বস্ত্র খাত: সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে বস্ত্র খাত। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেনের ১৬ শতাংশ অবদান রয়েছে এই খাতে। ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আলোচ্য সপ্তাহে প্রকৌশল খাতে ১৪ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ফার্মা খাতে ১১ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

তালিকায় থাকা অন্য খাতগুলোর মধ্যে বিবিধ খাতে ১০ শতাংশ, আর্থিক খাতে ৯ শতাংশ, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতে ৬ শতাংশ, সাধারণ বিমা ও খাদ্য খাতে ৪ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও আইটি খাতে ৩ শতাংশ। এছাড়া জীবন বিমা, কাগজ, টেলিকমিউনিকেশন, ট্যানারি ও বিবিধ খাতে ১ শতাংশ করে লেনদেন হয়েছে।

ডিএসই সাপ্তাহিক রিটার্ন মুনাফায় শীর্ষে ৩ খাত: পুঁজিবাজারে সপ্তাহজুড়ে চাঙ্গাভাব বিরাজ ছিল। বেড়েছে সূচক, বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর, বেড়েছে লেনদেনও। লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। গেল সপ্তাহে ডিএসইর ২০ খাতের মধ্যে ১২ খাতের শেয়ার দর বেড়েছে। দর বাড়াতে এই ১২ খাতের বিনিয়োগকারীরা সাপ্তাহিক রির্টানে ভালো মুনাফায় রয়েছেন।

খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা পেয়েছেন বিবিধ খাতের বিনিয়োগকারীরা। এ খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ৬.৫৬ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা পেয়েছেন আর্থিক খাতের বিনিয়োগকারীরা ৫.২৫ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা পেয়েছেন সিমেন্ট খাতের বিনিয়োগকারীরা ৪.৬৮ শতাংশ।

এছাড়া, তালিকায় থাকা অন্য খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র খাতে ৩.৫৩ শতাংশ, আইটি খাতে ২.৫৫ শতাংশ, ব্যাংক খাতে ২.২৬ শতাংশ, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতে ১.৭৬ শতাংশ, ওষুধ খাতে ১.৬২ শতাংশ কাগজ খাতে ১.১৯ শতাংশ, সিরামিক খাতে ০.৯২ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ০.৭০ শতাংশ ও ট্যানারি খাতে ০.৩৯ শতাংশ মুনাফা পেয়েছেন।

তবে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা লোকসানে রয়েছেন। খাতগুলো হচ্ছে- সাধারণ বিমা ৫.৪১ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৫.৪১ শতাংশ, জীবন বিমা ২.৮৩ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন ১.৮১ শতাংশ, সেবা-আবাসন ১.৬৩ শতাংশ, প্রকৌশল ১.৫৮ শতাংশ, পাট ০.৮০ শতাংশ, ভ্রমণ-অবকাশ খাতে ০.৮০ শতাংশ ।

তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির শেয়ার সম্পদ মূল্যের কয়েক গুণ দরে: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মুল্যের কয়েক গুণ বেশি দরে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬ গুণ বেশি দরেও লেনদেন হচ্ছে কোন কোন শেয়ার। তথ্য প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে আমরা নেটওয়ার্ক, আমরা টেকনোলজিস, এডিএন টেলিকম, অগ্নি সিস্টেমস, বিডিকম অনলাইন, ডেফোডিল কম্পিউটারস, ই-জেনারেশন, জেনেক্স ইনফোসিস, ইনটেক, ইনফর্মেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালটেন্টস লিমিটেড।

এই ১১টি কোম্পানির মধ্যে সম্পদ মূল্যের সবচেয়ে বেশি দরে শেয়ার লেনদেন হচ্ছে জেনেক্স ইনফোসিসের। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ডেফোডিল কম্পিউটার্স। ইনফর্মেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে।

জেনেক্স ইনফোসিস: জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ৬ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১৮.০৭ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৮.৬০ টাকায়।

ডেফোডিল কম্পিউটারস: ডেফোডিল কম্পিউটার্সের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ৫.১১ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১৩.৪৫ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৮.৮০ টাকায়।

ইনফর্মেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক: ইনফর্মেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ৩.৫৯ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১২.৮৭ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৬.৩০ টাকায়।

ইনটেক: ইনটেকের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ৩.৩৮ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১০.৮৮ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬.৮০ টাকায়।

ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালটেন্টস: ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালটেন্টস শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ২.৭৬ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১৬.১০ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৪.৫০ টাকায়।

ই-জেনারেশন:ই-জেনারেশনের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ২.৬৫ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ২৪.৯৮ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৩.৯০ টাকায়।

এডিএন টেলিকম: এডিএন টেলিকমের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ২.৪৭ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ২৫.৫৩ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৩.১০ টাকায়।

অগ্নি সিস্টেমস: অগ্নি সিস্টেমসের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ১.৬৫ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১৪.৫৭ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪.১০ টাকায়।

বিডিকম অনলাইন : বিডিকম অনলাইনের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ১.৭৬ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১৫.১৭ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬.৮০ টাকায়।

আমরা নেটওয়ার্ক লিমিটেড: আমরা নেটওয়ার্কের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ১.৪৩ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ৩৬.৭০ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫২.৬০ টাকায়।

আমরা টেকনোলজিস: আমরা টেকনোলজিসের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে সম্পদ মূল্যের ১.৩২ গুণ বেশি দরে। কোম্পানিটির সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসের আর্থিক প্রতিদেন অনুযায়ী সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ২৩.৪২ টাকায়। আর সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১.১০ টাকায়।

৩ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা চলতি সপ্তাহে: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩ কোম্পানি চলতি সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে। ডিভিডেন্ড ঘোষণার জন্য কোম্পানিগুলো বোর্ড সভার তারিখও জানিয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো-রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স, সান লাইফ ইন্সুরেন্স ও সী পার্ল রিসোর্ট লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স: কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ২২ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হবে।

এদিকে, তিন প্রান্তিক বা ৯ মাসে (জানুয়ারি,২০-সেপ্টেম্বর,২০) কোম্পানিটির প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর লাইফ ফান্ডের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। গত বছর কোম্পানিটি সাড়ে ১২ শতাংশ ক্যাশ এবং ২ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

সান লাইফ ইন্সুরেন্স: কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ২২ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হবে।

এদিকে, তিন প্রান্তিক বা ৯ মাসে (জানুয়ারি,২০-সেপ্টেম্বর,২০) কোম্পানিটির প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর লাইফ ফান্ডের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি।

সী পার্ল রিসোর্ট: কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ২২ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হবে। তৃতীয় প্রান্তিক শেষে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) বা নয় মাসে ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

সপ্তাহজুড়ে ফুরফুরে মেজাজে আর্থিক খাতের বিনিয়োগকারীরা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহজুড়ে ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন আর্থিক খাতের বিনিয়োগকারীরা। আগের সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে উত্থান হয়েছে। আলোচ্য সপ্তাহে তালিকাভুক্ত ২০টি খাতের মধ্যে আর্থিক খাতে বেড়েছে শতভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর। সাম্প্রতিককালের মধ্যে সপ্তাহজুড়ে খাতটিতে শতভাগ প্রতিষ্ঠানের রিটার্ন বা মুনাফা বিনিয়োগকারীরা দেখেনি।

আলোচ্য সপ্তাহে আর্থিক খাতে লেনদেন হওয়া ২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বৃদ্ধিতে চমক দেখিয়েছে ৯টি কোম্পানি। এই ৯টি কোম্পানির সবগুলোর শেয়ার দর বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।

এই ৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বে-লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, আইএলএফএসএল, আইপিডিসি, ইসলামিক ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল হাউজিং, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ও উত্তরা ফাইন্যান্স লিমিটেড। লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, গত সপ্তাহে আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রিটার্ণ দিয়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স লিমিটেড। গত সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটি রিটার্ণ দিয়েছে ২৯.৮০ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ইসলামিক ফাইন্যান্সের নাম। সপ্তাহটিতে আর্থিক খাতের এই প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকারীদের রিটার্ণ দিয়েছে ২৩ শতাংশ। ১৫.২০ শতাংশ রিটার্ণ দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে আইপিডিসি লিমিটেড।

এছাড়াও, সপ্তাহটিতে আইএলএফএস বিনিয়োগকারীদের রিটার্ণ দিয়েছে ১৪.৬০ শতাংশ, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ১৩.২০ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্স ১২.৭০ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্স ১২.৭০ শতাংশ, বে-লিজিং ১১.৩০ শতাংশ এবং উত্তরা ফাইন্যান্স বিনিয়োগকারীদের রিটার্ণ দিয়েছে ১০.৩০ শতাংশ।

আর্থিক খাতের বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে গেল সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের রিটার্ন দিয়েছে-লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স ৯.৫০ শতাংশ, এফএএস ফাইন্যান্স ৮.৮০ শতাংশ, জিএসপি ফাইন্যান্স ৮.০০ শতাংশ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ৭.৭০ শতাংশ, ইউনিয়ন কেপিট্যাল ৭.৭০ শতাংশ, মাইডাস ৮.৮০ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্স ৫.১০ শতাংশ।

ওষুধ ও রসায়ন খাতে সম্পদ মূলের ৪ গুণের বেশি ১২ কোম্পানির শেয়ার: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১ কোম্পানির মধ্যে সম্পদ মূল্যের তুলনায় ৪ গুণ থেকে ৩৮ গুণ পর্যন্ত বেশি দরে লেনদেন হচ্ছে ১২ কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিগুলো হলো- ম্যারিকো, কেয়া কসমেটিকস, রেকিট বেনকিজার, এমবি ফার্মা, বিকন ফার্মা, কহিনুর কেমিক্যাল, ওরিয়ন ইনফিউশন, রেনেটা, ইমাম বাটন, ফার্মা এইড, ওয়াটা কেমিক্যাল এবং ইবনেসিনা। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সম্পদ মূল্যের ৪ গুণ থেকে ১০ গুণের বেশি দরে লেনদেন হচ্ছে বিকন ফার্মা, কোহিনুর কেমিক্যাল, ওরিয়ন ইনফিউশন, রেনেটা, ইমাম বাটন, ফার্মা এইড, ওয়াটা কেমিক্যাল এবং ইবনেসিনার শেয়ার দর। আর সম্পদ মূল্যের ১০ থেকে ৩৮ গুনের বেশি দরে লেনদেন হচ্ছে ম্যারিকো, কেয়া কসমেটিকস, রেকিট বেনকিজার এবং এমবি ফার্মার শেয়ার।

জানা যায়, সম্পদ মূল্যের তুলনায় সবচেয়ে বেশি দরে লেনদেন হচ্ছে কেয়া কসমেটিকসের। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯ টাকা ৫০ পয়সা এবং সম্পদমূল্য ২৫ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদ মূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৩৮ গুণ বেশি।

এরপর সম্পদ মূল্যের সবচেয়ে বেশি গুণ দরে লেনদেন হচ্ছে ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২ হাজার ৩৫৭ টাকা ২০ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য ৮৬ টাকা ২৪ পয়সা। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর সম্পদ মূল্যের ২৭.৩৩ গুন বেশি দরে লেনদেন হচ্ছে।

অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে: রেকিট বেনকিজারের শেয়ার দর ৪ হাজার ৪৮৩ টাকা ৩০ পয়সা এবং সম্পদ মূল্য ২৩২ টাকা ৯৮ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূ ল্যের তুলনায় শেয়ার দর ১৯.২৪ গুণ বেশি। এমবি ফার্মার শেয়ার দর ৪৮০ টাকা এবং সম্পদমূল্য ২৪ টাকা ১০ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ১৯.৯১ গুণ বেশি।

বিকন ফার্মার শেয়ার দর ২১৩ টাকা ৯০ পয়সা এবং সম্পদমূল্য ২২ টাকা ৭১ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৯.৪১ গুণ বেশি। কহিনুর কেমিক্যালের শেয়ার দর ৪২৪ টাকা ৯০ পয়সা এবং সম্পদ মূল্য ৫২ টাকা ২১ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদ মূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৮.১৩ গুণ বেশি।

ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার দর ৭৮ টাকা ৯০ পয়সা এবং সম্পদ মূল্য ১২ টাকা ৯৫ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদ মূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৬.০৯ গুণ বেশি। ইমাম বাটনের শেয়ার দর ৩১ টাকা ৭০ পয়সা এবং সম্পদমূল্য ৪ টাকা ৮১ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৬.৫৯ গুণ বেশি।

রেনেটার শেয়ার দর এক হাজার ৪২৩ টাকা ৮০ পয়সা এবং সম্পদ মূল্য ২৪৯ টাকা ১০ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদ মূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৫.৭১ গুণ বেশি। ফার্মা এইডের শেয়ার দর ৪৪৮ টাকা ৯০ পয়সা এবং সম্পদমূল্য ৮৯ টাকা ৪৫ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদমূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৫.০১ গুণ বেশি।

ওয়াটা কেমিক্যালের শেয়ার দর ৩০৯ টাকা ৭০ পয়সা এবং সম্পদ মূল্য ৫৯ টাকা ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদ মূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৫.১৯ গুণ বেশি। ইবনেসিনার শেয়ার দর ২৫৮ টাকা ৭০ পয়সা এবং সম্পদ মূল্য ৬৪ টাকা ৮ পয়সা। অর্থাৎ সম্পদ মূল্যের তুলনায় শেয়ার দর ৪.০৩ গুণ বেশি।

বীমা খাতের ২১ কোম্পানিকে সতর্ক করল আইডিআরএ: লাইফ ও নন-লাইফ বীমা খাতের ২১ কোম্পানিকে সতর্ক করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । তিন দফা চিঠি দেয়ার পরও নির্ধারিত তথ্য না দেয়ায় বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) এসব কোম্পানিকে সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।

আইডিআরএ’র পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, আগামী ২২ আগস্ট পর্যন্ত ৪টি লাইফ ও ১৭টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে সময় দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তাদেরকে নির্ধারিত তথ্য পাঠাতে হবে। অন্যথায় পরবর্তী দুই কার্যদিবস সময় দিয়ে তাদেরকে শোকজ করা হবে।

এক্ষেত্রে বীমা আইনের ৪৯ ধারার বিধান মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই আইনের বিধান অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড এবং উক্ত অপরাধ সংঘটন চলমান থাকলে প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা করে অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।

এ সংক্রান্ত আইডিআরএ’র চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরে বীমাকারীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক/ মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়ে কর্তৃপক্ষের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় উপস্থাপনের জন্য এবং বীমা ব্যবসার দক্ষতা মূল্যায়ন ও বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের চাহিদা অনুযায়ী তথ্য চাওয়া হয়।

এ বিষয়ে গত ৩০ জুন, ১২ জুলাই এবং ১৮ জুলাই বীমা উন্নয় ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পত্র প্রেরণ করা হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২১টি লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানি তথ্য প্রেরণ করেনি। যা বীমা আইনের ৪৯ ধারার বিধানের লঙ্ঘন। এই প্রেক্ষিতে কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে।

সতর্ক বার্তা প্রাপ্ত লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো হলো- ডেল্টা লাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ, প্রগ্রেসিভ লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

এ ছাড়াও গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, জনতা ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, পাওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, সিকদার ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স এবং তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে সতর্ক করা হয়েছে।

মুজিব আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে পুঁজিবাজার উন্নয়নে কাজ করতে হবে: শিবলী রুবাইয়াত:  পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, মুজিব আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। শনিবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতীয় শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ঠিক রাখতে হবে, কারো হুংকার বা হুমকিতে পিছপা হবো না।’ অধ্যাপক রুবাইয়াত আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকব তাই আমাদেরকে হিংসা বিদ্বেষ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সবাইকে এক থাকতে হবে, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে একসাথে কাজ করতে হবে।’

পুঁজিবাজারের অতীত ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালে দেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা থাইল্যান্ড ও কোরিয়ার সমান ছিল এখন তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে তবে আমরা শিগগিরই তাদেরকে ধরে ফেলব।’

“দেশের অর্থনীতির অর্জনকে প্রচার করার জন্যই আমরা ‘ইউ এস ট্রেড শো, রোড শো ইত্যাদি’ করছি। আমাদেরকে আমাদের অর্জনগুলো প্রচার করতে হবে যাতে সবাই বিনিয়োগে আগ্রহী হয়। দেশে বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে তারা পুঁজিবাজারে আসবে এতে পুঁজিবাজারের লাভ হবে।তাই সবাইকে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে কাজ করতে হবে।”

পৃথিবীর জিডিপির এক-তৃতীয়াংশ উপমহাদেশের থেকে অর্জিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “ ‘এই মাটি সোনার মাটি’ এখানে প্রাকৃতিক এবং খনিজ সম্পদে ভরপুর। এখানে সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো মানবসম্পদ।” পুঁজিবাজারের বর্তমান উন্নতি কারও একক অবদান নয় বরং সকলের সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিশেষ অতিথীর বক্তব্যে বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার ভিশন ও মিশন এবং তার আদর্শ আমাদের পাথেয় হয়ে থাকবে।বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা বিনির্মাণে তার সবটুকু দিয়ে গেছেন। আমরা পথ হারাব না বরং শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সাফল্য দিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিশোধ নেব।’ এ সময় সোনার বাংলা বিনির্মাণে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সবাইকে নির্মোহ নির্লোভ ও দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতো এমন নেতা অনেক দিন পর পর আসে। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন পরোপকারী এবং প্রতিবাদী।তাই তিনি মানুষের অধিকার আদায়ে বার বার কারাবরণ করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর শক্তি ছিল মানুষের ভালোবাসা বঙ্গবন্ধুর দুর্বলতাও ছিল মানুষের ভালোবাস’ স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু যখন দেশে এসেছিলেন তখন এসে দেখেন ৪৩ হাজার ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

৩ কোটি মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে আর এক কোটি মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সরকারের ৭ কোটি মানুষ ছিল কিন্তু ছিলনা কোন ব্যাংক রিজার্ভ, ছিলনা অর্থনীতির ভিত্তি তবুও তিনি নিজ যোগ্যতায় দেশকে গড়ে তুলেছেন ”

সভায় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত। এতে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে নিহতদের শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এবং দেশবাসীর জন্য দোয়া করা হয়।

জিএসপি ফাইনান্সের ১১ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক খাতের কোম্পানি জিএসপি ফাইনান্স ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১১ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর মধ্যে ৫.৫ শতাংশ নগদে আর সাড়ে ৫ শতাংশ বোনাস। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি ১০.৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি, যার পুরোটাই ছিল বোনাস। শনিবার প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৫৫ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৩২ পয়সা। কোনো অর্থবছর শেষ হওয়ার ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করতে হলেও এবার করোনার কারণে আরও ৩০ কর্মদিবস সময় বাড়িয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে বিশেষ কোনো কারণে এর মধ্যেও লভ্যাংশ ঘোষণা করতে না পারলে সময় বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ আছে।

সপ্তাহজুড়ে ১৫ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা: সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড এবং ১৪টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

ওয়ালটন হাইটেক: ৩০ জুন, ২০২১ অর্থবছরের জন্য ২৫০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর কোম্পানিটি ২০০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। সমাপ্ত অর্থবছরের মুনাফা থেকে কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা নেবেন ১৭০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড। অর্থাৎ তারা সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের চেয়ে ৮০ শতাংশ কম ডিভিডেন্ড নেবেন।

সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৪ টাকা ২১ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ছিল ২৪ টাকা ২১ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৩৩১ টাকা ৫৯ পয়সা। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর।

এনএলআইফাস্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য সাড়ে ১৭ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ১৪ পয়সা। সম্পদ মূল্য হয়েছে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২ সেপ্টেম্বর।

এসইএমএল আইবিবিএল শরীয়াহ ফান্ড: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৩৫ পয়সা। সম্পদ মূল্য হয়েছে ১১ টাকা ৩১ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২ সেপ্টেম্বর।

এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি আলোচ্য বছরে ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ২.৫০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৮৭ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে বাজার মূল্য অনুযায়ী ফান্ডটির ইউনিট প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪০ পয়সা। ফান্ডটির ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট আগামী ২ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসইএমএল লেকচার ইক্যুয়িটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি আলোচ্য বছরে ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৮৪ পয়সা।

সমাপ্ত অর্থবছরে বাজার মূল্য অনুযায়ী ফান্ডটির ইউনিট প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৮৪ পয়সা। ফান্ডটির ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট আগামী ২ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

আইসিবি থার্ড এনআরবি মিউচ্যুয়াল : ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৭ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৫২ পয়সা। আগের বছর হয়েছিলো ২৪ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

আইএফআইএল ইসলামিক: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৪ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৪ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো।

আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৩১ পয়সা। আগের বছর হয়েছিলো ২২ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৮ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৩৭ পয়সা।আগের বছরে ছিলো ৩০ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

আইসিবি এমপ্লয়ীজ প্রভিডেন্ট: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৬ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৪১ পয়সা। আগের বছরে ছিলো ২০ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

প্রাইম ব্যাংক ফাস্ট আইসিবি: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৭.৫০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৪৭ পয়সা। আগের বছরে ছিলো ৩১ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

আইসিবি এএমসিএল সোনালী: ফান্ডটি ইউনিটহোল্ডারদের জন্য ৭ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৫৩ পয়সা। আগের বছরে ছিলো ৪১ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

ফিনিক্স ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ডের: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৬ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো।
আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৩২ পয়সা। আগের বছর হয়েছিলো ২৬ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

আইসিবি এএমসিএল অগ্রণী: ফান্ডটি ইউনিটহোল্ডারদের জন্য ৭ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৬৮ পয়সা। আগের বছরে ছিলো ৩৪ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

এশিয়ান টাইগার গ্রোথ ফান্ড: ফান্ডের ট্রাস্টি কমিটি ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মুনাফা (ইপিইউ) হয়েছে ১ টাকা ৯৩ পয়সা। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিইউ) মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪১ পয়সা। ইউনিটহোল্ডারদের মাঝে ডিভিডেন্ড বিতরণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ সেপ্টেম্বর।

সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি কমিটি ৩০ জুন, ২০২১ অর্থবছরের জন্য ১৩ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় (আইপিইউ) হয়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা। আগের অর্থবছরে ইউনিট প্রতি লোকসান ছিল ৭৫ পয়সা।

ব্যাংক ও আর্থিক খাতের ১০ কোম্পানির লেনদেনে চমক: পুঁজিবাজারে বেশ কিছু দিন ধরে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কোম্পানিতে সুবাতাস বইছে। গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ১০ ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কোম্পানির লেনদেনে চমক দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো দশ কোটি টাকার বেশি করে লেনদেন করেছে প্রতিদিন। প্রতিষ্ঠান ১০টির মধ্যে ব্যাংক খাতের রয়েছে ৩টি।

এর মধ্যে রয়েছে এবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের রয়েছে ৭টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে বে-লিজিং, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি, ইসলামিক ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স লিমিটেড।

লেনদেনে চমক দেখানো এই ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্যাংক খাতে সবচেয়ে বেশি লেনেদেন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড। আর আর্থিক খাতে লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স ও ইসলামিক ফাইন্যান্স সবচেয়ে বেশি লেনদেন করেছে।

আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড: আইএফআইসি ব্যাংকের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৯৭ শতাংশ বেশি। সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে ব্যাংক খাতের মোট লেনদেনের ৩৮.৮৮ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৫.৯০ শতাংশ বা ৩ টাকা। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৯.২৩ পয়েন্টে।

এবি ব্যাংক লিমিটেড: এবি ব্যাংকের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ১৭১ শতাংশ বেশি। সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে ব্যাংক খাতের মোট লেনদেনের ৯.৯৬ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ১২.১০ শতাংশ বা ১ টাকা ৯০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ২৫.৩২ পয়েন্টে।

ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড: ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ২২ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৫৯ শতাংশ বেশি। সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে ব্যাংক খাতের মোট লেনদেনের ৫.১৫ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর কমেছে ৪.২০ শতাংশ বা ২ টাকা। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৪.৩৮ পয়েন্টে।

লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড: গেল সপ্তাহে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ১৪৪ শতাংশ বেশি। সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট লেনদেনের ২৩.৯৫ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৫০ শতাংশ। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ২৪.৫৭ পয়েন্টে।

ইসলামিক ফাইন্যান্স লিমিটেড: ইসলামিক ফাইন্যান্সের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৪১০ শতাংশ বেশি।সপ্তাহ জুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট লেনদেনের ১৪.১০ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ২৩.৩০ শতাংশ।সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৯.৮৬ পয়েন্টে।

ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স লিমিটেড: ন্যাশনাল হাউজ ফাইন্যান্সের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ২৫০ শতাংশ বেশি।সপ্তাহ জুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট লেনদেনের ৯.৯৮ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ২৯.৮০ শতাংশ। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ২৩.৮৩ পয়েন্টে।

জিএসপি ফাইন্যান্স লিমিটেড: জিএসপি ফাইন্যান্সের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৫৩ শতাংশ বেশি।সপ্তাহ জুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট লেনদেনের ৯.১২ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ৮ শতাংশ।সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৭.৩০ পয়েন্টে।

আইপিডিসি লিমিটেড: গেল সপ্তাহে আইপিডিসির প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৩১৪ শতাংশ বেশি।সপ্তাহ জুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট লেনদেনের ৪.৪৬ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৫.২০ শতাংশ।সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৫.৬৮ পয়েন্টে।

বে-লিজিং লিমিটেড: বে-লিজিংয়ের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৯ শতাংশ বেশি।সপ্তাহ জুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট লেনদেনের ৪.৮৯ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ১১.৩০ শতাংশ।সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ২৩.৫১ পয়েন্টে।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড: বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৪৬ শতাংশ বেশি।সপ্তাহ জুড়ে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট লেনদেনের ৭.৬২ শতাংশ। সপ্তাহটিতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ৭.৭০ শতাংশ।সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ২২.৬১ পয়েন্টে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ৯টি, কমেছে ১১টি: পুঁজিাবাজারের তালিকাভুক্ত বিদুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ৯টি বা ৩৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। কমেছে ১১টি বা ৪৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। অপরিবর্তিত রয়েছে ৯ শতাংশ বা ২টি প্রতিষ্ঠানের। প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে বারাকা পাওয়ার, ডেসকো, যমুনা অয়েল, পদ্মা অয়েল, পাওয়ার গ্রিড, শাহজীবাজার পাওয়ার, জিবিবি পাওয়ার, সামিট পাওয়ার এবং তিতাস গ্যাস লিমিটেড।

বারাকা পাওয়ার: বারাক পাওয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.৪৩ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২৭.৫৭ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ শতাংশে।

ডেসকো: ডেসকোতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.২৩ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২৩.১৬ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে অবস্থান করছে ২৩.৩৯ শতাংশে।

জিবিবি পাওয়ার: জিবিবি পাওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ২.১৬ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২৯.৯০ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২.০৬ শতাংশে।

যমুনা অয়েল: যমুনা অয়েলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.০৩ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২৬.৭১ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে অবস্থান করছে ২৬.৭৪ শতাংশে।

পদ্মা অয়েল: পদ্মা অয়েলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.১৩ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ৩১.১১ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে অবস্থান করছে ৩১.২৪ শতাংশে।

পাওয়ার গ্রিড: পাওয়ার গ্রিডে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ১.৩২ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ১৪.৯২ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে অবস্থান করছে ১৬.২৪ শতাংশে।

শাহজীবাজার পাওয়ার: শাহজীবাজার পাওয়ার লিমিটেডের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.৪০ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২০.০৪ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে অবস্থান করছে ২০.৪৪ শতাংশে।

সামিট পাওয়ার: সামিট পাওয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.১৭ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ১৮.৬৩ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে অবস্থান করছে ১৮.৮০ শতাংশে।

তিতাস গ্যাস: তিতাস গ্যাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.১১ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ১৪.৬৪ শতাংশ। জুন মাসে তা বেড়ে অবস্থান করছে ১৪.৭৫ শতাংশে।

প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে যাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, ডরিন পাওয়ার, ইস্টার্ণ লুব্রিকেন্টস, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার, ইন্ট্রাকো সিএনজি, খুলনা পাওয়ার, লুব-রেফ, এমজেএল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং ইউনাইটেড পাওয়ার লিমিটেড। কোম্পানিগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমার ধারাবাহিক বিবরণ নিচে তুলে ধরা হলো:

এনার্জিপ্যাক: এনার্জিপ্যাকের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ১.২৮ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ১৭.৯৮ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ১৬.৭০ শতাংশে।

খুলনা পাওয়ার: খুলনা পাওয়ার লিমিটেডের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ১.১৬ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ১.৬৮ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ০.৫২ শতাংশে।

ইন্ট্রাকো সিএনজি: ইন্ট্রাকো সিএনজির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ১.০৬ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২০.১৩ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ১৯.০৭ শতাংশে।

অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন: অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেনের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.৯৫ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২৩.৩০ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২২.৩৫ শতাংশে।

ইস্টার্ণ লুব্রিকেন্টস: ইস্টার্ণ লুব্রিকেন্টসের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.৩৬ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ১১.৩৪ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ১০.৯৮ শতাংশে।

সিভিও: সিভিওর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.৩২ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২২.৩৯ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ২২.০৭ শতাংশে।

লুব-ব্রেফ: লুব-ব্রেফের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.৩৬ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২২.৫৭ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ২২.২১ শতাংশে।

এমজেএল: এমজেএলের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.১৪ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২০.১৬ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ২০.৪৭ শতাংশে।

ডরিন পাওয়ার: ডরিন পাওয়ারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.০৬ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ২৩.০৫ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২২.৯৯ শতাংশে।

ইউনাইটেড পাওয়ার: ইউনাএটড পাওয়ারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.০৬ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ৭.২৪ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ৭.১৮ শতাংশে।

মেঘনা পেট্রোলিয়াম: মেঘনা পেট্রোলিয়ামের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.০২ শতাংশ। মে মাসে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিলো ৩২.১১ শতাংশ। জুন মাসে তা কমে অবস্থান করছে ৩২.০২ শতাংশে।

২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে ৪ কোম্পানির শেয়ার: ভালো কোম্পানিকে পেছনে ফেলে পুঁজিবাজারে উত্থান হচ্ছে দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির দর। যা পুঁজিবাজারের জন্য নেতিবাচক পরিস্থিতি বয়ে আনবে। গত সপ্তাহে ডিএসই’র সাপ্তাহিক গেইনারের তালিকায় দেখা গেছে দুর্বল ও ঝুঁকপূর্ণ ৪ কোম্পানি জায়গা করে নিয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো: এপোলো ইস্পাত, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড এবং ডেল্টা স্পিনার্স। বেশ কিছুদিন ধরেই ধারাবাহিকভাবে এসব দুর্বল কোম্পানির দর বেড়ে চলেছে।

এর ফলে সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির তালিকায় ওঠে এসেছে এই ৪ কোম্পানি। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর দর বর্তমানে ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে ৩টি কোম্পানিই ধারাবাহিকভাবে লোকসান দেখিয়েছে। এরপর কিভাবে কোম্পানিগুলোর দর বাড়ছে তার কারণ অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, উল্লেখিত কোম্পানিগুলোর মধ্যে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্সের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ২৩.৫৩ শতাংশ। এর ফলে কোম্পানিটির সাপ্তাহিক গেইনার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট ১৪১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৫০ টাকার।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর ৯০ পয়সা ৬.৫২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৭০ পয়সায়, যা গত ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ৮ কার্যদিবস ধরেই ধারাবাহিকভাবে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে। ৮ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৪ টাকা ৯০ পয়সা বা ৫০ শতাংশ।
২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া প্রকৌশল খাতের ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৫০০ কোটি টাকা ও ৪০১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ২৬৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত তিন প্রান্তিকেই

ধারাবাহিকভাবে লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে লোকসান ৯ পয়সা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান ১৪ পয়সা এবং তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসান ১৮ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও নেগেটিভ, যা বিনিয়োগের জন্য খুবই ঝুঁকিপুর্ণ।

কোম্পানিটি গত ২ বছর যাবত বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ৩ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। কোম্পানিটির ৪০ কোটি ১৩ লাখ ৮ হাজার ৬০০ শেয়ারের মধ্যে ২০.২৪ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ২১.০৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ০.৫১ শতাংশ বিদেশি এবং ৫৮.২০ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল : সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১৪.৯৩ শতাংশ। এর ফলে কোম্পানিটির সাপ্তাহিক গেইনার তালিকায় ৮ নম্বরে ছিল। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট ৪১ কোটি ১৭ লাখ ১ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ২৯ লাখ ২৫ হাজার ২৫০ টাকার।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর ১৪ টাকা ১০ পয়সা ৯.৯৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৫ টাকা ৫০ পয়সায়, যা গত ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ৬ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৪৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ৩৮.৯৬ শতাংশ।

১৯৯০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ১৫০ কোটি টাকা ও ২৫ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

গত তিন প্রান্তিকেই ধারাবাহিকভাবে লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে লোকসান ৬৮ পয়সা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান ৬০ পয়সা এবং তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসান এক টাকা ২৮ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও নেগেটিভ, যা বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপুর্ণ। কোম্পানিটি গত বছর বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

কোম্পানিটির ২ কোটি ৫২ লাখ ৪৫ হাজার শেয়ারের মধ্যে ৪৫.৩১ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ২২.০৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ০.২৭ শতাংশ বিদেশি এবং ৩২.৩৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস : সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১৪.৬৩ শতাংশ। এর ফলে কোম্পানিটির সাপ্তাহিক গেইনার তালিকায় ৯ নম্বরে উঠে আসে। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট ১৮ কোটি ৫৯ লাখ ৫২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকার।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর ৩০ পয়সা ৩.৩০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৪০ পয়সায়, যা গত ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ৩ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর বেড়েছে এক টাকা ২০ পয়সা বা ১৪.৬৩ শতাংশ।

২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আর্থিক খাতের ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- ৩০০ কোটি টাকা ও ২২১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পুঁঞ্জিভুত লোকসানের পরিমাণ ২ হাজার ৭৪২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

গত তিন প্রান্তিকেই ধারাবাহিকভাবে লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে লোকসান ৪ টাকা ৪২ পয়সা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান ২ টাকা ৯৬ পয়সা এবং তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসান ৭ টাকা ৩৮ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও নেগেটিভ, যা বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপুর্ণ। কোম্পানিটি গত ২ বছর বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। কোম্পানিটির ২২ কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার ২৪৬টি শেয়ারের মধ্যে ৪১.৫৪ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ২৫.৫৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ০.১৬ শতাংশ বিদেশি এবং ৩২.৭৪ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

ডেল্টা স্পিনার্স : সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১৪.২৯ শতাংশ। এর ফলে কোম্পানিটির সাপ্তাহিক গেইনার তালিকায় ১০ নম্বরে ছিল। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট ৬০ কোটি ৩০ লাখ ৪৯ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৭ লাখ ৬২ হাজার ২৫০ টাকার।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর ৮০ পয়সা ৬.৬৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৮০ পয়সায়, যা গত ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ৯ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ২ টাকা ৮০ পয়সা বা ২৮ শতাংশ।

১৯৯৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বস্ত্র খাতের ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে: ১৭৫ কোটি টাকা ও ১৬৬ কোটি ৪৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। গত তিন প্রান্তিকেই ধারাবাহিকভাবে মুনাফা দেখিয়েছে কোম্পানিটি। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে ৩ পয়সা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৪ পয়সা এবং তৃতীয় প্রান্তিকে ৪৮ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও ৮৭.২৭ পয়েন্ট, যা বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপুর্ণ বিবেচিত।

কোম্পানিটি গত ৩ বছর (২০১৮-২০২০) বিনিয়োগকারীদের ১ শতাংশ করে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। কোম্পানিটির ১৬ কোটি ৬৪ লাখ ৮১ হাজার ৯৬৪ শেয়ারের মধ্যে ১৯.০৫ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৪.৭২ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ৬৬.২৩ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

সপ্তাহজুড়ে ব্লকে ৯ কোম্পানির লেনদেনের চমক: সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে ৯ কোম্পানির লেনদেনের শীর্ষে। আলোচ্য সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৯ কোম্পানির বিশাল লেনদেনে হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিদায়ী সপ্তাহে বিশাল লেনদেন হওয়া ৯ কোম্পানি হলো- আরাফা ইসলামী ব্যাংক, ডেল্টা লাইফ, ন্যাশনাল হাউজিং, সাফকো স্পিনিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, বেক্সিমকো ফার্মা, রেনাটা, ব্র্যাক ব্যাংক এবং জেনেক্স ইনফোসিস।

কোম্পানিগুলো মধ্যে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের ৭৭ কোটি ২০ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা, ডেল্টা লাইফের ৩৫ কোটি ৮৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ন্যাশনাল হাউজিংয়ের ২২ কোটি ১৮ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা, সাফকো স্পিনিংয়ের ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ১১ কোটি ৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা, বেক্সিমকো ফার্মার ১০ কোটি ৮৭ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা, রেনাটার ১০ কোটি ১৭ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকের ৮ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা, জেনেক্স ইনফোসিসের ৭ কোটি ৪৪ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

জুলাই মাসে ডিএসইর রাজস্ব বেড়েছে: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে জুলাই মাসে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে। লেনদেন বাড়ায় গতবছরের জুলাই মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুলাই মাসে সরকার ১০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব পেয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, দ্বিতীয় দফায় করোনার প্রকোপ রোধে বিধিনিষেধের মাস জুলাইয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। তবে ঈদ ও করোনা রোধে জুলাই মাসে শুক্র ও শনিবারের পাশাপাশি প্রায় সপ্তাহে রোববার ও বুধবার পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ ছিল। ফলে আগের মাসের তুলনায় কম দিন লেনদেন হয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে দিনের লেনদেনের পরিমাণ কম হলেও গড় লেনদেন বেশি হয়েছে।

আগের মাস জুলাইয়ে সরকারের ডিএসই থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৯৪ লাখ ৭০ হাজার ৮১৮ টাকা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৬৫ হাজার ৫৩২ টাকা। অর্থাৎ সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে ১০ কোটি ১৫ লাখ ৫ হাজার ২৮৬ টাকা। ব্রোকার হাউজের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের লেনদেন থেকে আয় হয়েছে ২৩ কোটি ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৬৪১ টাকা। যা আগের বছর ছিল ৫ কোটি ৯৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৭ টাকা। অর্থাৎ ১৭ কোটি টাকা বেড়েছে।

অপরদিকে, উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি বাবদ লেনদেন থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৫ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা। যা গতবছর জুলাই মাসে ছিল ১২ কোটি ৭৯ লাখ ৭২ হাজার ৬৬৫ টাকা।

সার্বিক বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, পুঁজিবাজার এখন ভালো, তাই রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। এখানে যত বেশি শেয়ার কেনাবেচা হবে সরকার তত বেশি রাজস্ব পাবে। সরকারের উচিত এ খাতের দিকে আরও বেশি নজর দেওয়া।

পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা: পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা, লেনদেন বেড়েছে ৫২ শতাংশ। একদিন সূচক পতন আর তিনদিন উত্থানের মধ্য দিয়ে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে (৯-১২ আগস্ট) সূচক, লেনদেন ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর তাতে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন অর্থাৎ পুঁজি বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধে বিধিনিষেধের মধ্যে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (৮ আগস্ট) পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। ফলে সোম, মঙ্গল বুধ ও বৃহস্পতিবার মোট চার দিন লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র বুধবার পুঁজিবাজারে সূচক কমেছে, আর বাকি তিনদিন সূচক বেড়েছে। এর আগের সপ্তাহে তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়েছি। আলোচিত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) আগের সপ্তাহের চেয়ে ১০৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৬৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। যা সূচকটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে।

এই সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অপর দুই সূচক ডিএসইএস সূচক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৫৯ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪২৭ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। এই দুটি সূচকও ইতিহাসের সেরা স্থানে অবস্থান করছে। বেশির ভাগ শেয়ার ও সূচক বাড়ায় নতুন করে গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরেছে ৩ হাজার ৫৪২ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৬ টাকা।

শুধু তাই নয়, বাজার মূলধনের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এখন ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৫৬৮ টাকায় অবস্থান করছে। এর আগের সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরেছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে চার দিনে মোট ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৭ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে মোট তিন কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল সাত হাজার ১৩কোটি ৯৯ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯৬ টাকা লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ, আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন ৫১ দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে একদিন ২৯শ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। যা গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন। বিদায়ী সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহের গড় লেনদেন ছিল ২ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা।

অর্থাৎ, গড় লেনদেন বেড়েছে। এই সময়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮৮টির, কমেছে ১৭৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছিল ২৮৩টি, কমেছিল ৮৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় সূচকের বাজার মূলধন ৩ হাজার ৫৪২ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৬টাকা বেড়ে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৫৬৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

যা এর আগের সপ্তাহের ছিল ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৬ কোটি ১০ লাখ ৯৪ হাজার ৯৭২ টাকা। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) চার কার্যদিবসে মোট ৪০৮ কোটি ৩৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৬২৫ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৪৭৫ টাকা। অর্থাৎ, লেনদেন বেড়েছে।

লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৭২টির, কমেছে ১৫৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টি কোম্পানির শেয়ারের। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় সিএসইর প্রধান সূচক সিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৫১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

করোনায় ওষুধ খাতের কোম্পানির মুনাফায় রমরমা: করোনা মহামারির ধাক্কায় প্রায় সবখাতের অবস্থা বেহাল। কারো কারো টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। তবে উল্টো চিত্র ওষুধ খাতে। মহামারির এ সময়ে ব্যাপক মুনাফা করেছে অধিকাংশ ওষুধ কোম্পানি। তাতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারের গত দেড় মাসে দাম বেড়েছে ১১৫ টাকা। আর করোনার সর্বশেষ এক বছরে দাম বেড়েছে ১৭০ টাকা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, করোনা শুরুর বছর ২০২০ সালের ৫ জুলাই বিকন ফার্মার শেয়ারের দাম ছিল ৬০ টাকা। সেখান থেকে গত ৩ আগস্ট শেয়ারটির দাম ১৭০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ২৩০ টাকায়। এর মধ্যে চলতি বছরের ২০ জুন শেয়ারটির দাম ছিল ১১৫ টাকা। অর্থাৎ দেড় মাসে শেয়ারটির দাম দ্বিগুণ বেড়েছে।

৩০ জুন ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ৬ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিটি ২০২০-২১ অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ২৭ পয়সা। যা ২০১৯-২০ বছরের একই সময়ে ছিল ৫৫ পয়সা। আগের বছরের তুলনায় গত বছরের নয় মাসে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ২ টাকা ৭২ পয়সা। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ৩০ জুন ২০২১ সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের আরও বেশি মুনাফা দেবে।

পুঁজিবাজারে সবচেয়ে ভালো কোম্পানিগুলোর একটি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ১৯৯৫ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ারের দাম চলতি বছরের ২৩ মে ছিল ২১০ টাকা ৩০ পয়সা। সেখান থেকে ২০ টাকা বেড়ে ২৩১ টাকা ৯০ পয়সা দাঁড়িয়েছে। কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস অর্থাৎ তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৩ টাকা ১২ পয়সা। যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১ টাকা ৮৫ পয়সা। অর্থাৎ ১ টাকা ২৭ পয়সা বেড়েছে।

তিন প্রান্তিকের মধ্যে তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৩৬ পয়সা। যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪ টাকা ৮ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে ২৮ পয়সা। দেশে চলমান করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধে কোম্পানির উৎপাদিত ‘এইস’, ‘এইস প্লাস’, ‘সিভিট’ এবং ‘ফেক্সো’ এই তিন ধরনের ওষুধের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। আর তাতে কোম্পানিটির ব্যবসাও ভালো হয়েছে।

ওষুধ খাতের আরেক কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। গত ৯ আগস্ট এই কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ বিক্রি হয়েছে ১৮৮ টাকা ৬০ পয়সায়। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২০ সালের ৯ আগস্ট শেয়ারটির দাম ছিল ৯৮ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে শেয়ারটির দাম বেড়েছে ৯০ টাকা। গত ২৭ জুন শেয়ারটির দাম ছিল ১৭২ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে দাম বেড়ে ৯ আগস্ট বিক্রি হয়েছে ১৮৮ টাকায়।

ডিএসইর তথ্য মতে, কোম্পানিটির জুলাই ২০২০ থেকে ৩১ মার্চ ২০২১ সালে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ২৩ পয়সা। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে করোনার ৫০ লাখ টিকার মাধ্যমে মুনাফা হয়েছে ৩৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

তাতে তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ২৮ পয়সা। যা আগের বছরের চেয়ে ১ দশমিক ২৪ পয়সা বেশি। জুন পর্যন্ত সময়ে মোট ৭০ লাখ ডোজ টিকা সেরামের মাধ্যমে আনা হয়েছে। ফলে আরও ২০ লাখ ডোজ টিকার মুনাফা পাবে বেক্সিমকো ফার্মা। এছাড়াও চলমান করোনাকালীন ‘নাপা’, ‘নাপা

এক্সট্রা’, ‘নাপা এক্সটেন্ড’, ‘নাপা রেপিড’সহ কোম্পানির উৎপাদিত প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ বিক্রি বেড়েছে। কোম্পানিটির সচিব মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ বলেন, করোনার বছরে বেক্সিমকো গ্রুপের সবকটি কোম্পানির মুনাফাও বেড়েছে। কারণ আমাদের ওষুধের বিক্রি বেড়েছে। এই কোম্পানিগুলোর মতো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে প্রায় সবকটি কোম্পানির জুলাই- ২০২০ সাল থেকে ৩১ মার্চ ২০২১ সাল পর্যন্ত মুনাফা বেড়েছে। কোম্পানিগুলো আরও মুনাফা করবে এমন প্রত্যাশায় ওষুধ খাতের শেয়ারে আগ্রহ বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের। আর তাতে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম সর্বশেষ দুই মাসে ব্যাপক বেড়েছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার বছরে ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে ৯ শতাংশের কম মুনাফা দিচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান কিংবা বিমায় বিনিয়োগ আরও বেশি অনিরাপদ। ঠিক সেই সময় পুঁজিবাজারে ওষুধ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে তার চেয়ে কয়েকগুণ রিটার্ন বেশি পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনা কারো জন্য আশির্বাদ হয়ে এসেছে। এ সময়ে দেশের শিল্প কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। তবে এই সময় সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থায় ছিল দেশের পুঁজিবাজার।

এই পুঁজিবাজারে বিমা, পোশাক এবং ওষুধ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে পুঁজিবাজার এখন ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে কোম্পানিগুলোর শেয়ার ও আর্থিক প্রতিবেদনে যেন কোনো ধরনের কারসাজি না হয় সেই বিষয়ে কমিশনকে খেয়াল রাখতে হবে।

ডিএসইর তথ্য মতে, দ্য একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের শেয়ার গত ২৮ জুলাই লেনদেন হয়েছে ৭৪ টাকা ৭০ পয়সায়। সেখান থেকে ২০ টাকা বেড়ে গত ১০ আগস্ট দাঁড়িয়েছে ৯৪ টাকায় ১০ পয়সায়। ২০১৬ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি সর্বশেষ বছরে ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। কোম্পানিটির জুলাই ২০২০ থেকে ৩১ মার্চ ২০২১ সময়ে ৯ মাসে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। এর আগের বছরের একই সময় যা ছিল ৫ টাকা ৩৪ পয়সা। অর্থাৎ ২৫ পয়সা মুনাফা বেড়েছে। করোনাকালে কোম্পানিটি উৎপাদিত ওষুধ ‘মোনাস’ এর চাহিদা বেড়েছে।

কোম্পানি সচিব আরসাদুল কবির বলেন, করোনার বছরেও ভালো মুনাফা হয়েছে। মুনাফা বাড়ায় বিনিয়োগকারীরাও লাভমান হচ্ছেন। ২৮ জুন থেকে দাম বেড়েছে এক্টিভ ফাইনের শেয়ারের। ২০১০ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির ২৮ জুন দাম ছিল ১৭ টাকা ৬০ পয়সা। সেখান থেকে বেড়ে ২৬ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে গত ২ আগস্ট। সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ২৪ টাকা।

এসিআই লিমিটেড ২৭ জুন লেনদেন হয়েছে ২৫৮ টাকা ৯০ পয়সা। ৯ আগস্ট বিক্রি হয়েছে ২৯৮ টাকা ১০ পয়সা। এ সময়ে দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। ১৯৭৬ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানির গত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে আগের বছরের তিন প্রান্তিকের চেয়ে মুনাফা বেড়েছে। গত তিন প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৫ পয়সা। আগের বছরের একই সময় লোকসান ছিল ৪ টাকা ৮১ পয়সা। প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগও বেড়েছে।

এমবি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ার ১৫ জুলাই ছিল ৪০৮ টাকা ৬০ পয়সা। সেখান থেকে বেড়ে ৪৮৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম বেড়েছে ৮১ টাকা। ১৯৮৬ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত বছরে শেয়ার হোল্ডারদের ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। আগামী ১৭ আগস্ট কোম্পানিটির তিন প্রান্তিকে আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে বোর্ড সভা রয়েছে।

এডভেন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ার ৩০ মে বিক্রি হয়েছে মাত্র ২০ টাকা ৯০ পয়সা দরে। সেখান থেকে সাত টাকা বেড়ে ৯ আগস্ট  লেনদেন হয়েছে ২৭ টাকা ৪০ পয়সায়।

সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারের দাম গত ৮ জুন ছিল ১১ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে ১১ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ২২ টাকা ৬০ পয়সা। অর্থাৎ দ্বিগুণের বেশি দাম বেড়েছে।

ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ ৭ জুলাই ২৪৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে ১৮ জুলাই ২৬০ টাকা ২০ পয়সা হয়েছে। ১৫ টাকা বেড়েছে।
জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইস লিমিটেডের শেয়ারের দাম ২৭ জুন ছিল ৩১৭ টাকা। সেখান থেকে বেড়ে ৯ আগস্ট ৩৮৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে ৬৮ টাকা দাম বেড়েছে শেয়ারটির।

ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস ৩০ জুন ২০২০ সালের জন্য ৪ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ আর ২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আগামী ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের লভ্যাংশ আসছে। গত ১ জুন শেয়ারটির দাম ছিল ১৭ টাকা। সেখান থেকে ৭ টাকা বেড়ে ৯ আগস্ট দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকায়।

২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অরিয়ন ফার্মা শেয়ারের দাম ২৭ জুন ছিল ৫২ টাকা ৫০ পয়সা। সেখান থেকে ২৩ টাকা বেড়ে ৭৩ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ বছরে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।

ফার্মা এইড কোম্পানিটি ১৯৮৭ সালে তালিকাভুক্ত হয়। এক মাস দশ দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৭৬ টাকা। ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২৭ জুন ছিল ৩৮১ টাকা ৪০ পয়সা। সেখান থেকে ৭৬ টাকা

বেড়ে ৯ আগস্ট দাঁড়িয়েছে ৪৫৭ টাকা ২০ পয়সায়।
২০১৯ সালে তালিকাভুক্ত সিলকো ফার্মা ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২৩ টাকা থেকে বেড়ে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বহুজাতিক কোম্পানি লিবরা ইনফিউশন ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করবে। শেয়ারটির দাম গত ৬ জুলাই ছিল ৫২৬ টাকা। সেখান থেকে বেড়ে ৭০৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ শেয়ারটি দাম বেড়েছে প্রায় ২শ টাকা।

রেনেটা লিমিটেড ১৯৭৯ সালে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত বছরের জন্য ১৪০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। গত ২ জুন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ১২৭১ টাকা ৯০ পয়সা। সেখান থেকে বেড়ে ১৩৮৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১১৪ টাকা বেড়েছে।

ওয়ালটনের শেয়ার কিনছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা: চলতি বছরের জুন মাসে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের দশমিক ৮ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। আর সেই শেয়ার কিনছেন বিদেশিরা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর তথ্যমতে, চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ওয়ালটনের দশমিক ৪৫ শতাংশ শেয়ার ছিল। এর এক মাস পর গত ৩০ জুন সেখান থেকে কমে দশমিক ৩৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করেছেন।
একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন।

আর এই শেয়ার কিনেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। মে মাসে কোনো শেয়ার না থাকা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বর্তমানে রয়েছে দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ওয়ালটনের শেয়ার বিক্রি হয়েছে ১৪১৪ টাকা ৯০ পয়সায়।

এদিকে গত সপ্তাহে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ৩০ জুন ২০২১ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানির পর্ষদ।

সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের নগদ ২৫০ শতাংশ অর্থাৎ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারপ্রতি ২৫ টাকা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। তবে উদ্যোক্তা পরিচালকরা নেবেন ১৭০ শতাংশ। ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদনের লক্ষ্যে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর।

বিদায়ী বছরে ওয়ালটনের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৪ টাকা ২১ পয়সা। আগের বছর শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ২৪ টাকা ২১ পয়সা। গত ৩০ জুন ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৩১ টাকা ৫৯ পয়সা।

সূচকের সঙ্গে মার্জিনের সমন্বয় করে বিএসইসি’র নির্দেশনা জারি: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স এর সঙ্গে মার্জিন ঋণের সমন্বয় করে নির্দেশনা জারি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বর্তমান করোনা মহামারীর অবস্থা বিবেচনায় এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সাক্ষরিত এক নির্দেশনা জারি করেছে কমিশন। নতুন নির্দেশনায় ডিএসইএক্স সূচক ৮০০০ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা তাদের নিজস্ব বিনিয়োগের বিপরীতে মার্জিন ঋণ গ্রহনের রেশিও ১:০.৮০ করা হয়েছে। যা এর আগে ছিল ডিএসইএক্স ৭০০০ পর্যন্ত। এর উপরে বা বেশি সূচকের ক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ রেশিও ১:০.৫০ নির্ধারন করা হয়েছিল।

এ হিসাবে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার পর্যন্ত ডিএসইএক্স সূচকে মার্জিন ঋণ রেশিও ১:০.৫০ থেকে বাড়িয়ে ১:০.৮০ করা হয়েছে। এরফলে বিনিয়োগকারীরা ৭ হাজার সূচকের পরেও নিজস্ব ১ টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮০ পয়সা মার্জিন পাবে। একইসঙ্গে ডিএসইএক্স ৮ হাজার এর উপরের ক্ষেত্রে বা বেশি সূচকের ক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ রেশিও ১:০.৫০ নির্ধারন করা হয়েছে।

এর আগে গত ৪ এপ্রিল মার্জিন ঋণ প্রদানের রেশিও ১:০.৫০ থেকে বাড়িয়ে ১:০.৮০ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন। যে নির্দেশনা ডিএসইএক্স ৭০০০ পর্যন্ত কার্যকর ছিল। তবে সর্বপ্রথম গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সূচকের সঙ্গে সমন্বয় করে মার্জিন ঋণের নির্দেশনা জারি করে শিবলী কমিশন। যার আগে সবক্ষেত্রেই মার্জিন রেশিও ১ টাকার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা বা ১:০.৫০ ছিল।

শিবলী কমিশনের সূচকের সঙ্গে মার্জিন ঋণের সমন্বয়ের প্রথম নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ডিএসইএক্স সূচক ৪ হাজারের নিচে থাকাকালীন ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ১:১ হারে মার্জিন ঋণ দিতে পারবে।

অর্থাৎ গ্রাহকের নিজস্ব ১ টাকার বিনিয়োগের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১ টাকা মার্জিন ঋণ দেওয়া যাবে। এছাড়া ৪০০১-৫০০০ পর্যন্ত সূচকের ক্ষেত্রে ১:০.৭৫ হারে, ৫০০১-৬০০০ পর্যন্ত সূচকের ক্ষেত্রে ১:০.৫০ হারে এবং ৬০০০ এর উপরে সূচকের ক্ষেত্রে ১:০.২৫ হারে মার্জিন ঋণ দিতে পারবে।

যা কার্যকর হওয়ার আগেই সংশোধনী আনে শিবলী কমিশন। ওই সংশোধনীতে ডিএসইএক্স সূচক ৪ হাজারের নিচে থাকাকালীন ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ১:০.৭৫ হারে মার্জিন দিতে পারবে বলে জানানো হয়। এছাড়া ৪০০১-৭০০০ পর্যন্ত সূচকের ক্ষেত্রে ১:০.৫০ হারে এবং ৭০০০ এর উপরে সূচকের ক্ষেত্রে ১:০.২৫ হারে মার্জিন ঋণ দিতে পারবে বলে বলা হয়েছিল।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকের বিনিয়োগ নজরদারিতে: মহামারী করোনায় গত এক বছরেরও বেশি সময়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৬৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এ সময়ে ডিএসইর বাজার মূলধনও বেড়েছে ৭২ শতাংশের বেশি। মহামারীতে বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ থাকায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে, যাতে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদ্বেগে পড়েছে।

১৯৯৬ কিংবা ২০১০ সালের মতো আবারও ধস নামে কি-না, এমন শঙ্কায় গত তিন সপ্তাহ ধরেই নানামুখী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কিছুতেই পুঁজিবাজারের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না আর্থিক খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এমন পরিস্থিতিতে সব ধরনের উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পর এবার ব্যাংক ও এর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এখন থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট ছকে প্রতিদিন বিকেল ৫টার মধ্যে বিনিয়োগের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পাঠাতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংক থেকে অন্যান্য ব্যাংক, এনবিএফআই, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কী পরিমাণ তহবিল হস্তান্তর করা হয়েছে তার তথ্য প্রতিদিন আলাদা ছকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মূলত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ তথা লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন পদক্ষেপ। এর আগে মহামারী করোনার প্রভাব মোকাবিলায় সরকারি প্রণোদনার কম সুদের ঋণের একটি অংশ পুঁজিবাজার, জমি, ফ্ল্যাট কেনাসহ বিভিন্ন অনুৎপাদনশীল খাতে চলে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে গত ২৫ জুলাই সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া প্রণোদনার আওতায় ঋণের ব্যবহারসহ বিভিন্ন তথ্য চেয়ে পরবর্তীতে আরও একটি চিঠি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ঋণের সঠিক ব্যবহার যাচাইয়ের জন্য মাঠপর্যায়ে পরিদর্শনের সিদ্ধান্তও নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

পরবর্তীতে ব্যাংকে থাকা অলস অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে তুলে নিতে শুরু করে সংস্থাটি। কিন্তু কোনো পদক্ষেপেই পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। বরং গত ২৫ জুলাইয়ের পর ডিএসইর প্রধান সূচকটি আরও ২৭৬ পয়েন্ট বেড়েছে। ডিএসইর লেনদেন বেড়ে দ্বিগুণে উন্নীত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল দৈনিক ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও এর সাবসিডিয়ারির লেনদেন ও বিনিয়োগের পাশাপাশি গ্রাহককে দেওয়া মার্জিন ঋণের প্রতিদিনের তথ্য পাঠাতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বৃহস্পতিবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে চিঠি দিয়ে এ নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা উদ্বৃত্ত তারল্য যেন পুঁজিবাজারসহ অনুৎপাদনশীল খাতে চলে না যায় সেজন্য নিয়মিত তদারকির এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ২০১৬-১৭ সালের দিকে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারের লেনদেন নিয়মিত তদারকির জন্য মাস ও সপ্তাহভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করত কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এরপর পুঁজিবাজার দীর্ঘ মন্দায় পড়লে এবং ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণ কমে গেলে এ ধরনের তথ্য নেওয়া বন্ধ করে দেয় সংস্থাটি। পুঁজিবাজারের উল্লম্ফনে ব্যাংক ও এর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, ২০১০ সালের পর পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ কমিয়ে আনতে আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলো মোট দায়ের পরিবর্তে রেগুলেটরি মূলধনের মাত্র ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। সাবসিডিয়ারিসহ ব্যাংকগুলো রেগুলেটরি মূলধনের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। তবে পুঁজিবাজারে বেশিরভাগ ব্যাংকের বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমার অনেক নিচে রয়েছে বলে এসইসি সূত্রে জানা গেছে। যে কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পরও পুঁজিবাজারে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।

অবশ্য মার্জিন ঋণে ব্যাংকের সাবসিডিয়ারিগুলোর অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। পুঁজিবাজারে শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর অধিকাংশই ব্যাংক ও এনবিএফআইয়ের সাবসিডিয়ারি। বর্তমানে যে মার্জিন ঋণ রয়েছে, তার বড় অংশই এসব সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ।

চলতি বছরের শুরুতে মার্জিন ঋণ বিতরণের অনুপাত বাড়িয়ে দেওয়ার পর থেকেই পুঁজিবাজারে এর বড় প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া এসব সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানেরও উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে। ফলে ব্যাংকের সাবসিডিয়ারির বিনিয়োগ খতিয়ে দেখার মাধ্যমে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ করতে চায়  বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিদিন মুদ্রাবাজার থেকে তহবিল কোথায় যাচ্ছে বা কোথা থেকে মুদ্রাবাজারে তহবিল আসছে সে-বিষয়ক তথ্য পাঠানোর জন্য ছক দেওয়া হয়েছে। ছকে ব্যাংকের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে নতুন বিনিয়োগ, সিকিউরিটিজের মোট বিক্রয়মূল্য ও নেট এক্সপোজার পাঠানোর জন্য আলাদা আলাদা ঘর রয়েছে।

এ ছাড়া নিজস্ব সাবসিডিয়ারিতে প্রতিদিনের ঋণসীমা, তহবিল ছাড়, তহবিল সমন্বয় এবং নেট এক্সপোজারের তথ্য দিতে হবে। প্রতিদিনের মার্জিন ঋণের পরিমাণ, স্থিতি ও সমন্বয় জানাতে হবে। এ ছাড়া কলমানি মার্কেটের লেনদেন ব্যতিরেকে ব্যাংক থেকে অন্যান্য ব্যাংক, এনবিএফআই, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কী পরিমাণ তহবিল হস্তান্তর করা হয়েছে তারও তথ্য দেওয়ার জন্য আলাদা একটি ছক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাংকগুলোর হাতে প্রচুর উদ্বৃত্ত তারল্য থাকায় এ নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত জুন শেষে ব্যাংকগুলোর অলস তারল্য দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর ২ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকার উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। সম্প্রতি এই অতিরিক্ত তারল্য বাজার থেকে তুলে নেওয়ার জন্য ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিল’ নিলাম শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতিমধ্যে এই নিলামের মাধ্যমে বাজার থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি তুলে নিয়েছে সংস্থাটি।