দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া ২০২০ সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ ডিভিডেন্ড অনুমোদন করেছে কোম্পানিটির পর্ষদ।

হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫১ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ টাকা ৩৬ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৯৩ পয়সা।

ঘোষণাকৃত ডিভিডেন্ড শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় ডিজিটাল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। এ সংক্রান্ত কোম্পানির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর।

পুঁজিবাজারে ৭ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৪ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৪ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা ৯৪ লাখ টাকা। তবে ১১ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ১৪ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে (এপ্রিল-জুন) দেশের ব্যাংক খাতের প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে দুই হাজার ২২৮ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুন শেষে ঋণমানের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি ১১ ব্যাংক।

এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ৪টি, বেসরকারি ৬টি ও ১টি বিশেষায়িত ব্যাংক রয়েছে। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির অঙ্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি, বেসরকারি, বিদেশিসহ সব ধরনের ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করে, তার গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রভিশন হিসেবে জমা রাখতে হয়। কোনো ঋণ শেষ পর্যন্ত মন্দ ঋণে পরিণত হলে তাতে যেন ব্যাংক আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে, সে জন্য এ নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা, বেসিক, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক আর বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, মিউচুয়াল টাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। এছাড়া বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে।

জুন মাস শেষে এই ১১ ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণ বা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতিতে পড়েছে। এ ঘাটতির পরিমাণ ১৪ হাজার ৮৭৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যদিও সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতির পরিমাণ ৫ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। কোনো কোনো ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে রেখে দেয়ায় সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি করা জুন (২০২১) প্রান্তিকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ১৩ হাজার ১৬৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ৯৯ হাজার ২০৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ১৮ শতাংশ।

গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে খেলাপি বেড়েছে ১০ হাজার ৪৭১ কোটি টাকার বেশি। আলোচিত সময়ে যে ১১ ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতিতে রয়েছে তার মধ্যে সরকারি চার ব্যাংকের ঘাটতি ১১ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি জনতা ব্যাংকের।

জুন শেষে জনতা ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৫১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এরপরই বেসিক ব্যাংকের ৩ হাজার ৬৭১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি এক হাজার ৫২৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের ৯৪৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। বেসরকারি খাতের ছয় ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি তিন হাজার ৩৬২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতি ন্যাশনাল ব্যাংকের।

জুন মাস শেষে ব্যাংকটির ঘাটতি দুই হাজার ৩৯৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৪৮২ কোটি ৪০ লাখ, ঢাকা ব্যাংক ২০৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৫৯ কোটি ৬২ টাকা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১৫ কোটি টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতি ১০৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২১ কোটি ৬ লাখ টাকা।

কোনো কোনো ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত (উদ্বৃত্ত) অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে রাখায় সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কম হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংক খাতে প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ৭০ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। এর বিপরীতে সংরক্ষণ করা হয়েছে ৬৫ হাজার ৩৬৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ফলে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে মোট নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫৮২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে তার বেশিরভাগই আমানতকারীদের অর্থ। আমানতকারীদের অর্থ যেন কোনো প্রকার ঝুঁকির মুখে না পড়ে সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে। এর একটি হলো প্রভিশনিং। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে ৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়।

এর মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণের (এসএমই) বিপরীতে সবচেয়ে কম দশমিক ২৫ শতাংশ আর ক্রেডিট কার্ডে রাখতে হয় সর্বোচ্চ, ৫ শতাংশ নিরাপত্তা সঞ্চিতি। এছাড়া নিম্নমান বা সাব স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা কুঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়।

ব্যাংকের আয় খাত থেকে অর্থ এনে প্রভিশনিং করা হয়। খেলাপি ঋণ বাড়লে, আর সে অনুযায়ী ব্যাংকের আয় না হলে এতে ঘাটতি দেখা দেয়। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, প্রভিশন ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শেয়ারহোল্ডাদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যাচাই-বাছাই না করে ঋণ দেয়ায় তা আদায় হচ্ছে না। এছাড়া বিভিন্ন ছাড়ের কারণে গ্রহীতাদের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করার প্রবণতা বেড়েছে। ফলে খেলাপির পাশাপাশি প্রভিশন ঘাটতিও বেড়েছে। যারা প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়, তাদের মূলধন ঘাটতিতে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

তিনি বলেন, ঋণের ঝুঁকি কমাতে হলে আদায় বাড়াতে হবে। যাচাই-বাছাই করে সঠিক নিয়মে ঋণ দিতে হবে। ঋণ আদায়ের জোড় দিতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত ও স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে। এখন ব্যাংক খাতের উদ্বৃত্ত তারল্য আছে, এ অর্থ সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করতে হবে। বড় ঋণে নিরুৎসাহিত করে ছোট ছোট ঋণে বেশি জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক এ গভর্নর। এছাড়া নির্দিষ্ট কোনো ব্যাংকে অপ্রীতিকর ঘটনা বেশি বেশি ঘটলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা শক্তিশালী হওয়া দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

এসবিএসি ব্যাংকের ৮ কার্যদিবসে শেয়ারের দাম দ্বিগুণ: পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের শেয়ারের দাম মাত্র আট কার্যদিবসে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এই আট দিনে প্রতিদিনই ব্যাংকটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ হারে বেড়েছে। তাতে ৮ কার্যদিবসের ব্যবধানে ১০ টাকার শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ২১ টাকা ২০ পয়সা।

নিয়ম অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম এক দিনে ১০ শতাংশের বেশি বাড়তে বা কমতে পারে না। এতে তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রথম দিন থেকে সাউথ বাংলা ব্যাংকের শেয়ারের দাম প্রতিদিন ১০ শতাংশ বেড়েছে।

কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ১১ আগস্ট। এর আগে ৫ জুলাই থেকে এটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর চাঁদা গ্রহণ শুরু হয়। কোম্পানিটি আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকায় বিক্রি করেছে। আর আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে সংগ্রহ করে ১০০ কোটি টাকা। লেনদেন শুরুর হওয়ার কয়েক দিন পর্যন্ত প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এটির শেয়ারের কোনো বিক্রেতা ছিল না।

আইপিওতে যাঁরা ব্যাংকটির শেয়ার পেয়েছেন, সবাই সেই শেয়ার বিক্রি না করে নিজের হাতে ধরে রেখেছেন। অন্যদিকে প্রথম কয়েক দিনে এটির শেয়ারের বিপুল ক্রেতা ছিল। প্রথম তিন–চার দিন খুব বেশি বিক্রেতা না থাকলেও এরপর ধীরে ধীরে বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। তাতে হাতবদল হওয়া শেয়ারের পরিমাণও বেড়েছে। আজ সোমবার ডিএসইতে কোম্পানিটির ৩২ লাখ ২৬ হাজার শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৭ কোটি টাকা।

এদিকে একটানা ৮ কার্যদিবসে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির ফলে চতুর্থ প্রজন্মের এই ব্যাংকের শেয়ারের দাম প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের অনেক ব্যাংকের চেয়ে বেশি। এমনকি পুরোনো অনেক ভালো মানের ব্যাংকের শেয়ারের দামের চেয়ে সাউথ বাংলার শেয়ারের দাম বেশি। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি অযৌক্তিক। কারণ, ভালো মানের অনেক ব্যাংকের শেয়ার এখন ১২ থেকে ১৫ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে চতুর্থ প্রজন্মের এই ব্যাংকের শেয়ার বিনিয়োগকারীরা কেন এত বাড়তি দামে কিনছেন, তা বোধগম্য নয়।

বর্তমানে পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংকসহ প্রায় ১৬টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম সাউথ বাংলার চেয়ে কম। এর আগে চতুর্থ প্রজন্মের প্রথম ব্যাংক হিসেবে গত মার্চে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এনআরবিসি ব্যাংক।

লেনদেন শুরুর একপর্যায়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কারসাজির মাধ্যমে এনআরবিসি ব্যাংকের ১০ টাকার শেয়ারের দাম একটানা বাড়িয়ে প্রায় ৪০ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেটি একটু একটু করে কমতে কমতে আজ দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকায়। এ অবস্থায় তাই বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, সাউথ বাংলা ব্যাংকের শেয়ারের ক্ষেত্রেও কি একই ধরনের ঘটনা ঘটছে?

তথ্য প্রযুক্তির ৮ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে ভাটা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে জুলাই মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ৩টি কোম্পানিতে এবং কমেছে ৮টিতে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। সূত্রমতে, জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে আমরা নেটে ২.৩৩ শতাংশ।

অন্যদিকে, জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে অগ্নি সিস্টেমে ৪.৪৩ শতাংশ, আমরা টেকে ৩.৪৩ শতাংশ এবং আইটি কনসালটেন্সে ২.৮৩ শতাংশ। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরা হলো:

অগ্নি সিস্টেমস: ৩০ জুন অগ্নি সিস্টেমের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৪৪.৯৭ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ৪০.৭০ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ৪.১৭ শতাংশ।

আমরা টেক: ৩০ জুন আমরা টেকের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৪৭.৪১ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ৪৩.৯৮ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ৩.৪৩ শতাংশ।

আইটি কনসালট্যান্টস্: ৩০ জুন আইটি কনসালট্যান্টসের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৩.৬৬ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ২০.৮২ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ২.৮৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগও কমেছে ০.১২ শতাংশ।

ইনফরমেশন সার্ভিসেস: ৩০ জুন ইনফর্মেশন সার্ভিসেসের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৩.৩৮ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ১০.৯৭ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ২.৪১শতাংশ।

ই-জেনারেশন: ৩০ জুন ই- জেনারেশনের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৩১.৩২ শতাংশ। যা ৩০ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ২৯ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ২.৩২ শতাংশ।

বিডিকম: ৩০ জুন বিডি কমের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৫.৭৮ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ২৩.৭৭ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ২.০১ শতাংশ।

ইনটেক: ৩১ মে ইনটেচ লিমিটেডের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৮.৯৬ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ৮.০৯ শতাংশে। দুই মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.৮৬শতাংশ।

জেনেক্স ইনফোসিস: ৩০ জুন জেনেক্স ইনফোসিসের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২০.৫৫ শতাংশ। যা ৩০ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ১৮.৯৫ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ০.৬০ শতাংশ।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়া ৩ কোম্পানি: আমরা নেট: ৩০ জুন আমরা নেটে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৭.৯৩ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ৩০.২৬ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ২.৩৩ শতাংশ।

এডিএন টেলিকম: ৩০ জুন এডিএন টেলিকমের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২১.৭৭ শতাংশ। যা ৩১ জুন এসে দাঁড়িয়েছে ২২.৮৬ শতাংশে। এক মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ১.০৯ শতাংশ।

ড্যাফোডিল কম্পিউটার: ৩০ মে ড্যাফোডিল কম্পিউটারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৫.০৭ শতাংশ। যা ৩১ জুলাই এসে দাঁড়িয়েছে ২৫.৪৭ শতাংশে। দুই মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে ০.৪০ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগও বেড়েছে ০.০২ শতাংশ।

সিনেসিস আইটি পুঁজিবাজারে আসতে চায় এএএ ফিন্যান্সের সাথে চুক্তি: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসতে চায় দেশের অন্যতম শীর্ষ তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটি লিমিটেড। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি এএএ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাথে একটি ইস্যু ম্যানেজমেন্ট চুক্তি করেছে। গত রোববার প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সিনেসিস আইটি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সিনেসিস আইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী এবং এএএ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান এফসিএস নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এতে স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এএএ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক আবদুস সালাম খান, ম্যানেজার আহমেদ আশিকুর রহমান সি.এফ.এ, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অ্যান্ড হেড অব ইস্যু ম্যানেজমেন্ট মোহাম্মদ খালিদ হোসেন এবং সিনেসিস আইটি লিমিটেডের ভাইস-চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, পরিচালক আব্দুর রশিদ, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এ কে এম করিম উশ শান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সিনেসিস আইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী বলেন, আইপিওর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে আমরা আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চাই। দেশে তথ্য-প্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা সীমাহীন। আমরা এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চাই। দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও আমাদের সেবা সম্প্রসারিত করতে চাই আমরা। পুঁজিবাজারে আসার মাধ্যমে আমাদের সাফল্য এই বাজারের বিনিয়োগকারী তথা দেশের মানুষের সাথে ভাগাভাগি করতে চাই।

তিনি বলেন, এএএ ফিনান্সের সাথে চুক্তি করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। কারণ এএএ ফিনান্সের রয়েছে ১০০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে আইপিওতে নিয়ে আসার সফল অভিজ্ঞতা। আশা করি এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যেই পুঁজিবাজারে অভিষিক্ত হবো।

এএএ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান এফসিএস বলেন, সিনেসিস এর সাথে যুক্ত হতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের বিশ্বাস সিনেসিস আইটি পুঁজিবাজারে এলে দেশের পুঁজি বাজারের আরও সম্প্রসারণ হবে এবং এধরনের আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হবে।

উল্লেখ, সিনেসিস আইটি লিমিটেড দেশের অন্যতম শীর্ষ তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। সরকারি-বেসরকারি খাতের বেশ কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সাফল্য রয়েছে তাদের। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত প্রকল্প হচ্ছে-ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)। অবৈধ ও নকল মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নেওয়া এই প্রকল্পের সফটওয়্যার সলিউশন দিয়েছে সিনেসিস আইটি। সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফরমসহ আরও কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

তথ্য প্রযুক্তি খাতে অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রবর্তন করা ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার, বেসিসের ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডস, আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি-উইসিস পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছে।

ডিএসই সূচকের উত্থানে ১০ কোম্পানির অবদান ১৯ পয়েন্ট: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স বেড়েছে ২০ পয়েন্ট। যার মধ্যে ১৯ পয়েন্টই অবদান রেখেছে ১০ কোম্পানি। এই ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো বাংলাদেশ, পাওয়ার গ্রিড, গ্রামীণ ফোন, তিতাস গ্যাস, সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক, সাইনপুকুর সিরামিক, রেনাটা বাংলাদেশ এবং ইউনাটেড পাওয়ার। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, সোমবার ডিএসইতে ইনডেক্স বাড়ানোতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো বাংলাদেশ লিমিটেড। আজ কোম্পানিটি দর বেড়েছে ১.১৬ শতাংশ। এরফলে কোম্পানিটি ডিএসইর ব্রড ইনডেক্সে বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে ৩.৭৭ পয়েন্ট। একইভাবে শেয়ার দর বৃদ্ধির কারণে পাওয়ার গ্রিড লিমিটেড অবদান রেখেছে ২.৪৫ পয়েন্ট ও গ্রমীণ ফোন লিমিটেডের অবদান রয়েছে ২.১৭ পয়েন্ট। এই তিন কোম্পানির ডিএসইএক্স-এ মোট অবদান রেখেছে ৮ পয়েন্টের বেশি।

এছাড়াও, ডিএসই ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স-এর সূচক বৃদ্ধিতে অবদান রাখার শীর্ষ অন্য সাত কোম্পানির মধ্যে তিতাস গ্যাসের অবদান রয়েছে ২.০২ পয়েন্ট, সামিট পাওয়ারের অবদান রয়েছে ১.৮৩ পয়েন্ট, বেক্সিমকো ফার্মার অবদান রয়েছে ১.৮২ পয়েন্ট, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের অবদান রয়েছে ১.৬০ পয়েন্ট, সাইনপুকুর সিরামিকের অবদান রয়েছে ১.২৪ পয়েন্ট,

রেনাটা বাংলাদেশের অবদান রয়েছে ১.১৪ পয়েন্ট এবং ইউনাটেড পাওয়ারের অবদান রয়েছে ১.১২ পয়েন্ট। ১০ কোম্পানিটর ইনডেক্সকে টেনে উঠানোর মোট অবদান ছিলো ১৯.১৬ পয়েন্ট।

ডিএসই চার খাতের শেয়ারে মন্দাভাব: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন চাঙ্গা প্রবণতায় শেষ হয়েছে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক বেড়েছে। আগের দিনের চেয়ে আজ লেনদেনও বেড়েছে। আজ আগের দিনের চেয়ে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৬৮ কোটি টাকার বেশি। তবে লেনদেন চাঙ্গা হলেও আজ চার খাতে লেনদেনে ভাটার টান দেখা দিয়েছে। খাতগুলো হলো- ব্যাংক, বস্ত্র, আর্থিক ও সিমেন্ট খাত।

ব্যাংক: ব্যাংক খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ১১৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছে ১৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন কমেছে ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

বস্ত্র: বস্ত্র খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ১৩৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছে ১৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন কমেছে ৩০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

আর্থিক: আর্থিক খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন কমেছে ২১ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

সিমেন্ট: সিমেন্ট খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি টাকা। আজ লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

ব্লক মার্কেটে ৩ কোম্পানি লেনদেনের শীর্ষে : পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৫১টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে। এসব কোম্পানির ৭৫ কোটি ৮২ লাখ ৬২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজ দুই কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের।
কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৬৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৮ টাকা থেকে ৭০ টাকা ২০ পয়সার মধ্যে। ব্লক মার্কেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে জিবিবি পাওয়ারের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৬০ লাখ ৯ হাজার টাকার। শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৮ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৪৩ টাকা ১০ পয়সার মধ্যে।
তৃতীয় সর্বোচ্চ এসএস স্টিলের ৩ কোটি ১৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার  লেনদেন হয়েছে, ড্রাগন সোয়েটারের ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকার, পাওয়ার গ্রীডের ২ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আল-আরাফা ইসলামি ব্যাংকের ২ কোটি ৩৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকার, সালভো কেমিক্যালের ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার, কনফিডেন্স সিমেন্টের ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯১ হাজার টাকার, যমুনা ব্যাংকের ১ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকার, ফনিক্স ফাইন্যান্সের ১ কোটি ১১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার, সামিট পাওয়ারের ১ কোটি ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার,
কেয়া কসমেটিকের ৯৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকার, বিকন ফার্মার ৯১ লাখ ১১ হাজার টাকার, কেডিএস লিমিটেডের ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ৭৮ লাখ ২০ হাজার টাকার, কাট্টালি টেক্সটাইলের ৬৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার, ফর্চুন সুজের ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার, জেনেক্স ইনফোসিসের ৫৬ লাখ ৬ হাজার টাকার, প্যাসিফিক ডেনিমের ৪৯ লাখ ২১ হাজার টাকার, পূরবী জেনারেলের ৪৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার,
সাইফ পাওয়ারের ৪৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকার, লাফার্জ হোলসিমের ৪৪ লাখ ১৫ হাজার টাকার, কে এন্ড কিউয়ের ৪১ লাখ ৮১ হাজার টাকার, ঢাকা ডাইংয়ের ৩৭ লাখ ৮০ হাজার টাকার, মীর আক্তারের ৩৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকার, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকার, শাহজিবাজার পাওয়ারের ৩০ লাখ ৮৫ হাজার টাকার, সোনালী পেপারের ২৯ লাখ ২৬ হাজার টাকার, বিডি থাইয়ের ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার, অ্যাডভেন্টের ২৮ লাখ টাকার, প্রিমিয়ার সিমেন্টের ২৬ লাখ ১০ হাজার টাকার, মেঘনা লাইফের ২৬ লাখ ২ হাজার টাকার,
প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকার, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ২২ লাখ ৬৩ হাজার টাকার, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ডেল্টা স্পিনিংয়ের ২০ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ২০ লাখ ১৮ হাজার টাকার, মারিকোর ১৮ লাখ ৭২ হাজার টাকার, ডমিনেজের ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকার, আইএফআইসি ব্যাংকের ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার, মুন্নু সিরামিকের ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকার,
ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার, এসইএমএলএলইসি মিউচুয়াল ফান্ডের ৮ লাখ ৭১ হাজার টাকার, মেট্রো স্পিনিংয়ের ৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকার, ঢাকা ব্যাংকের ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার, এসবিএসি ব্যাংকের ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার, অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেনের ৬ লাখ ৮ হাজার টাকার, মোজাফফর হোসেনের ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার, পদ্মা লাইফের ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার, আনলিমা ইয়ার্নের ৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকার, সিলকো ফার্মার ৫ লাখ ১ হাজার টাকার।

বাটা সু কোম্পানির বোর্ড সভা ২৬ আগস্ট : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের কোম্পানি বাটা সু’র বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৬ আগস্ট দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ কোম্পানির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, সভায় ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হবে।

রিলায়েন্স ওয়ানের ট্রাস্টি সভা ২৯ আগস্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রিলায়েন্স ওয়ান মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ফান্ডের ট্রাস্টি সভা আগামী ২৯ আগস্ট দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, সভায় ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের নিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হবে।

ডিএসই ৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির কারন অজানা: মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত৫ কোম্পানির শেয়ার দর। কোম্পানিগুলো হলো- মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্স মিল্ক, রিং শাইন টেক্সটাইল,পেপার প্রোসেসিং লিমিটেড এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, এসব কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিক বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে সম্প্রতি কোম্পানিগুলোকে তদন্ত নোটিশ পাঠায় ডিএসই। এর জবাবে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে গত ২২ আগস্ট জানানো হয়েছে, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে শেয়ার দর।

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দর গত ০২ আগস্ট ছিল ১৫.৩০ টাকায়। আর ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২৬.১০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১১ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০.৮০ টাকা বা ৭১ শতাংশ বেড়েছে।

মেঘনা কনডেন্স মিল্কের শেয়ার দর গত ০৩ আগস্ট ছিল ১৪.৪০ টাকায়। আর ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২০.৫০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১০ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৬.১০ টাকা বা ৪২ শতাংশ বেড়েছে।

রিং শাইন টেক্সটাইলের শেয়ার দর গত ১১ আগস্ট ছিল ১০.৪০ টাকায়। আর ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ১৪.৫০ টাকায়। অর্থাৎ এই ৫ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.১০ টাকা বা ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।

ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের শেয়ার দর গত ৩ আগস্ট ছিল ৭.২০ টাকায়। আর ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ১০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১০ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৮০ টাকা বা ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।

বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের (বিজিআইসি) ক্রেডিট রেটিং সম্পন্নকরা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, আর্গুস ক্রেডিট রেটিং সার্ভিসেস লিমিটেডের (এসিআরএসএল) রেটিং অনুযায়ী বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সকে দীর্ঘমেয়াদে রেটিং হয়েছে ‘এএ+’ এবং স্বল্প মেয়াদে রেটিং হয়েছে ‘এসটি-২’। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব এবং ৩০ জুন ২০২১ সমাপ্ত ছয় মাসের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী এই রেটিং নির্ণয় করা হয়েছে।

মূল্য সংবেদনশীল তথ্যে কারসাজি বন্ধে হার্ডলাইনে বিএসইসি: পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সার্ভিল্যান্স বিভাগের সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্ভিল্যান্স বিভাগের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে পুঁজিবাজার সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে প্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ব্রোকারেজ হাউজে একই ধরনের ইউনিফর্ম ব্যাকঅফিস সফটওয়্যার ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ সকল প্রকার কারসাজি রোধে সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

রোববার (২২ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে বিএসইসির কমিশনার অধ‌্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএসইসির পক্ষে নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিমসহ সার্ভিল্যান্স বিভাগের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, ডিএসইর পক্ষে ব্যবস্থপনা পরিচালক তারিক আমিন ভুঁইয়াসহ সার্ভিল্যান্স বিভাগের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষেয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমানে শেয়ারবাজারের ট্রেন্ড দুই পক্ষের আলোচনায় তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে, যেসব কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ, শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ও শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) খারাপ থাকা সত্ত্বেও শেয়ারের দাম বাড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কোম্পানিগুলোর তথ্য কীভাবে আরও সহজে পাওয়া যায় এবং তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনাকে কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ওয়েবসইট সচল রাখা ও তথ্য হালনাগাদ করার বিষয়টি আলোচনায় তুলে ধরা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উভয় পক্ষের আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে প্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য বাস্তবায়নের ওপর। কারণ, বেশিরভাগ সময়ে দেখা যায়, একাধিক কোম্পানি বিভিন্ন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করে থাকে। তবে পরে দেখা যায়, সেটার প্রকৃত বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

তাই, শেয়ারের মূল্য বাড়ানোর লক্ষ্যে কোম্পানি এ সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করছে কি না, তা যাচাই করে দেখা হবে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রকাশিত সংবেদনশীল তথ্যের বাস্তবায়নের হালনাগাদ অবস্থা নির্ধারিত সময় পর পর অবহিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদি কোম্পোনির প্রকাশিত সংবেদনশীল তথ্যের সঙ্গে বাস্তবায়নের হালনাগাদ অবস্থার মিল খুঁজে না পাওয়া যায়, তখন সে বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ব্রোকারেজ হাউজের সমন্বিত ব্যাংক হিসাবে তহবিল ঘাটতি ও গরমিলের বিষয়টি আলোচনা উঠে এসেছে। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, অনেক ব্রোকার তাদের বিনিয়োগকারীদের টাকা দিতে পারছে না। এর জন্য ইউনিফর্ম ব্যাকঅফিস সফটওয়্যার ব্যবহার দ্রুত নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বরোপ করা হয় আলোচনায়। ইনসাডারদের জন্য একটি ডাটাবেস তৈরি করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং যেকোনো ধরনের কারসাজি সার্ভিল্যান্স কার্যক্রমের মাধ্যমে চিহ্নিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

পুঁজিবাজারে বিমা ও জ্বালানি খাতের দাপটে দরপতন থেকে রক্ষা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস টেলিযোগাযোগ, বিমা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াকে কেন্দ্র করে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে।

দিনের শুরুতে বস্ত্র, প্রকৌশল, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারের দাম বাড়লেও শেষ ঘণ্টায় এসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রির চাপে দাম কমেছে। পক্ষান্তরে দিনের শুরুতে ব্যাংক খাতের সব শেয়ারের দাম কমলেও শেষভাগে মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে।

ফলে দিন শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ২০ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ৭৫ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনও। এর ফলে সপ্তাহের প্রথম দুদিন রোব ও সোমবার সূচকের উত্থান হলো। তবে তার আগের সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস বুধ ও বৃহস্পতিবার দরপতন হয়েছিল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সোমবার গ্রামীণফোন, রবি, রেনেটা, ইউনিলিভার, বার্জার পেইন্টস এবং ইউনিলিভারসহ বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। দেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিমা খাতে তালিকাভুক্ত ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৪১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ৯টির দাম। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে একটির দাম। এছাড়া ব্যাংক খাতের ৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৭টির।

সব মিলিয়ে ডিএসইতে মোট ৩৮৩টির প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সোমবার লেনদেন হয়েছে ৩৭৬টির প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ১৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৮৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। তাতে মোট ৮৪ কোটি ২৯ লাখ ৭৩ হাজার ৩৭৯টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। হাত বদল হওয়া শেয়ার থেকে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭৭৪ কোটি ৮১ লাখ ১ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭০৬ কোটি ৩১লাখ ৮১ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।

বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমার পরও বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২০ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৮৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৭ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৮৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাওয়ার গ্রিড। এরপর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে লাফার্জহোলসিমের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে ছিল আইএফআইসি ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ব্যাংক, ফরচুন সুজ, রিংশাইন, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক এবং সামিট পাওয়ার লিমিটেড।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৫ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৯৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৪টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ১৪৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ১০১ কোটি ৩৭ লাখ ৯ হাজার ৫৮১ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১০০ কোটি ৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৬০ টাকা।

পুঁজিবাজারে লেনদেন ৫ হাজার কোটি সময়ের ব্যাপার: কিছু ভুল সংশোধনের পরই পুঁজিবাজার চাঙা হয়েছে। লেনদেন দেড়শ কোটি টাকা থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার উন্নীত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে ভালো ভালো কোম্পানি ও বন্ডসহ নতুন নতুন প্রোডাক্ট বাজারে আনতে পারলে এ বছরের মধ্যেই পুঁজিবাজারে দৈনিক লেনদেন ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বাজার সামনে বহুদূর এগিয়ে যাবে।

একটি অনলাইন পোর্টালের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এসব প্রত্যাশার কথা জানান পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ।

বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০২০ সালের ১৭ মে। এরপর কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ, ড. মিজানুর রহমান এবং আব্দুল হালিম।

এই কমিশনের নেতৃত্বের প্রথম লেনদেনের দিন অর্থাৎ ৩১ মে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ছিল চার হাজার ৬০ পয়েন্টে। সেখান থেকে ২২ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২ হাজার ৭৮২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৮৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

আর লেনদেন ১৪৩ কোটি ২৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা থেকে ২০-২২ গুণ বেড়ে এখন প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকায়। লেনদেন ও সূচক বাড়ায় প্রায় দেড় বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন ৩ লাখ ১৬ হাজার ১৭৬ কোটি ১৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ ৩৮ হাজার ২৬০ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা বেড়ে রোববার (২২ আগস্ট) দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২৩ হাজার টাকায়।

কিছু ভুল সংশোধনের পরই এ অবিস্মরণীয় উত্থান হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক সামসুদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামনে ভালো ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। বিভিন্ন ধরনের বন্ড চালুসহ অচিরেই নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসবে। তাতে বিনিয়োগকারীরা বেশ খুশি হবে। তারা বাজারে বিনিয়োগের জন্য আকৃষ্ট হবে।

‘আমরা পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করতে পারলে চলতি বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারের লেনদেন ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। লেনদেন বাড়লে অটোমেটিক সূচক ও বাজার মূলধন বাড়বে। সূচক এখন ৭ হাজার ছুঁইছুঁই, এটা আরও অনেক দূর যাবে,’ যোগ করেন তিনি।

শেখ সামসুদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনীতির সত্যিই এখন অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এ অগ্রগতির সঙ্গে তালমিলিয়ে পুঁজিবাজার চলবে। অর্থনীতিতে এখন পুঁজিবাজারের অবদান ২০ শতাংশ রয়েছে। জিডিপিতে শতভাগ অবদান রাখবে পুঁজিবাজার। ফলে পুঁজিবাজারের আকার আরও অনেক বাড়বে।

বিএসইসির এই কমিশনার জানান, ডিএসইতে নতুন কোম্পানির লেনদেন কিংবা এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলেই সফটওয়্যারে কারিগরি ক্রুটির কারণে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেত। সেই সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে যাতে কোনো ধরনের কারসাজি না হয় সে জন্য মনিটরিং করা হচ্ছে।

অসৎ উপায়ে মুনাফা অর্জনের জন্য কোম্পানি কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে কেউ যেন পুঁজিবাজারে ভুয়া মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশ করতে না পারে তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক সামসুদ্দিন। তিনি বলেন, কিছু কোম্পানি সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করে যে ‘সাতটি বা পাঁচটি জাহাজ কিনছে’, ‘বিদেশিরা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছে’।

এরপর শেয়ারের দাম বাড়ার পর শেয়ার বিক্রি করে দেয়। কিন্তু বাস্তবে এরকম জাহাজ কিংবা বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না। অর্থাৎ ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে শেয়ার বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়। আর যাতে এসব পিএসআই প্রকাশের মাধ্যমে কোনো কারসাজি করতে না পারে সেই বিষয়টি দেখা হবে।