দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৬১টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৪৪ কোটি ৮০ লাখ ১৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে দুই কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৬৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে সন্ধানী ইন্সুরেন্সের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৫০ লাখ ২ হাজার টাকার।

এছাড়া, পদ্মা লাইফের ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার, সালভো কেমিক্যালের ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৫ হাজার টাকার, এক্সিম ব্যাংক প্রথম মিউচুয়াল ফান্ডের ২ কোটি ৪৯ লাখ ৪১ হাজার টাকার, মেট্রো স্পিনিংয়ের ১ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার, উত্তরা ব্যাংকের ১ কোটি ১৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকার, বেক্সিমকোর ১ কোটি ১৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকার, এসবিএসি ব্যাংকের ৮৯ লাখ ২০ হাজার টাকার, ম্যাকসন স্পিনিংয়ের ৮০ লাখ ৫ হাজার টাকার,

প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৭৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকার, ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ৭২ লাখ ১৭ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৭০ লাখ টাকার, ডিবিএইচ ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৬৭ লাখ ৯০ হাজার টাকার, শাহজিবাজার পাওয়ারের ৬৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকার, ন্যাশনাল পলিমারের ৬৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার, বারাকা পাওয়ারের ৫৪ লাখ ১৪ হাজার টাকার, কনফিডেন্স সিমেন্টের ৫০ লাখ ৪৯ হাজার টাকার, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৪৯ লাখ ৩০ হাজার টাকার, বেক্সিমকো ফার্মার ৪৬ লাখ ১১ হাজার টাকার, আইপিডিসির ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার,

জিবিবি পাওয়ারের ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকার, ঢাকা ডাইংয়ের ৩৪ লাখ ৬২ হাজার টাকার, হাইডেলবার্গ সিমেন্টের ৩৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার, কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজের ৩১ লাখ টাকার, ফর্চুন সুজের ৩০ লাখ টাকার, আমান ফিডের ২৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকার, এনসিসি ব্যাংকের ২৪ লাখ ১৫ হাজার টাকার, অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেনের ২৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকার,

পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ২০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকার, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ১৭ লাখ ৪২ হাজার টাকার, মালেক স্পিনিংয়ের ১৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকার, স্ট্যান্ডার্ড ইন্সুরেন্সের ১৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকার, মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের ১৫ লাখ ৩২ হাজার টাকার, ডেল্টা লাইফের ১৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকার, সামিট পাওয়ারের ১৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকার, এইচআর টেক্সটাইলের ১৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকার, আনলিমা ইয়ার্নের ১৪ লাখ ১৬ হাজার টাকার, ডরিন পাওয়ারের ১৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকার,

কে এন্ড কিউয়ের ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকার, সোনারগাঁওর ১৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকার, জেএমআই সিরিঞ্জের ১১ লাখ ৪৯ হাজার টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ১০ লাখ ৫৮ হাজার টাকার, অগ্নি সিস্টেমের ১০ লাখ ২৩ হাজার টাকার, সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার, এটিসিএসএল গ্রোথ ফান্ডের ৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকার, কেডিএস এক্সেসরিজের ৯ লাখ ৫৪ হাজার টাকার,

সেন্ট্রাল ফার্মার ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার, ফনিক্স ফাইন্যান্সের ৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকার, তৌফিকা ফুডসের ৯ লাখ ৭ হাজার টাকার, রবি আজিয়াটার ৮ লাখ ১৪ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকার, গ্রামীন ফোনের ৭ লাখ টাকার,

কর্ণফুলী ইন্সুরেন্সের ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার, কাট্টালি টেক্সটাইলের ৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকার, জিএসপি ফাইন্যান্সের ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকার, ভিএফএস থ্রেডের ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার, পাওয়ার গ্রিডের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার, কপারটেকের ৫ লাখ ৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের বোর্ড সভা ২৯ আগস্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভা আগামী ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ওইদিন কোম্পানিটির বোর্ড সভা বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩০ জুন, ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

বানকো ফাইন্যান্সকে লেনদেন চালুর অনুমতি: গ্রাহকদের অর্থ ও শেয়ার আত্মসাতের দায়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য প্রতিষ্ঠান বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান জেলে রয়েছেন। গ্রাহকদের প্রায় ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করলেও দুই মাসেও প্রতিষ্ঠানটি তা ফেরত দিতে পারেনি।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেও বানকো সিকিউরিটিজ ও এর পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের শেয়ার লেনদেন চালুর অনুমতি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসির )। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বন্ধ থাকা ব্যাংক হিসাবও চালু করতে ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে। গত ১৯ আগস্ট এমন নির্দেশনা দিয়েছে এসইসি।

গ্রাহকদের স্বার্থেই অর্থ আত্মসাৎ করা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে এসইসি জানিয়েছে। অবশ্য এসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের লেনদেন ও ব্যাংক হিসাব চালুর বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন এসইসির কমিশনার মো. আবদুল হালিম।

এ প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের প্রায় ১১ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। আর বানকো ফাইন্যান্সের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবেও প্রায় একই পরিমাণের অর্থ রয়েছে। ব্যাংক হিসাব বন্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে গ্রাহকরা টাকা তুলতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে সবকিছু বিবেচনা করে শুধু গ্রাহকদের লেনদেন চালু ও অর্থ উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গ্রাহকদের সমন্বিত হিসাব থেকে বানকো ফাইন্যান্স নিজস্ব প্রয়োজনে কোনো টাকা ব্যয় করতে পারবে না। আর অর্থ উত্তোলন ও শেয়ার লেনদেনের পুরো বিষয়টি নজরদারি করতে ডিএসইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এসইসি জানিয়েছে, বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের গ্রাহকরা প্রতিষ্ঠানটির কাছে তাদের পড়ে থাকা অর্থের বিপরীতে ২০ শতাংশ সুদ দাবি করছেন। গ্রাহকরা দাবি করছেন, বর্তমানের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে বিনিয়োগ করলে লাভবান হতে পারতেন। তাই অর্থ ফেরতের জন্য চাপ দিচ্ছেন তারা।

গত ৭ জুন বানকো সিকিউরিটিজে বিশেষ পরিদর্শন করে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ঘাটতি পান ডিএসইর কর্মকর্তারা। ঘাটতি সমন্বয় করতে বলা হলেও ব্রোকারেজ হাউজের মালিকপক্ষ ব্যর্থ হয়। ওই অর্থ আত্মসাতের আশঙ্কা করে প্রতিষ্ঠানটি যাতে গ্রাহকের কোনো শেয়ার বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিতে না পারে সেজন্য গত ১৪ জুন বানকো সিকিউরিটিজের লেনদেন স্থগিত করে ডিএসই।

একই দিনে বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণের অর্থ ও শেয়ার আত্মসাৎ করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মতিঝিল থানায় অভিযোগ দায়ের করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায় ডিএসই। বিষয়টি তদন্তের জন্য দুদকে পাঠায় মতিঝিল থানা।

এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের অর্থ পরিশোধ না করেই গত ২৯ জুন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক হন বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত। দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞার পরও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে লন্ডন যাওয়ার পথে তাকে আটকে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ। সেদিনই আবদুল মুহিতসহ প্রতিষ্ঠানটির আরও পাঁচ পরিচালকের বিরুদ্ধে প্রতারণার আশ্রয়ে অপরাধমূলক বিশ^াসভঙ্গের মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরদিন আবদুল মুহিতকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এখনো তিনি জেলে রয়েছেন।

গত ৭ জুলাই বিনিয়োগকারীদের ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বানকো সিকিউরিটিজ ও এর পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিএসইর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এমন পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাংক হিসাব স্থগিত হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বানকো সিকিউরিটিজ, বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সুব্রা সিস্টেমস, সুব্রা ফ্যাশনস, বানকো পাওয়ার, বানকো এনার্জি জেনারেশন, বানকো স্মার্ট সলিউশন, ক্ল্যাসিক ফুড ল্যাব, অ্যামুলেট ফার্মাসিউটিক্যালস ও সামিট প্রপার্টিজ লিমিটেড।

ঢাকা ব্যাংকের দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকিং খাতের কোম্পানি ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪৭ পয়সা। আগের অর্থবছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ২৯ পয়সা।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা। আগের অর্থবছর একই সময়ে সমন্বিত (ইপিএস ছিল ৭৯ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২০.৯৭ টাকায়।

পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় চমক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের প্রতিষ্ঠান পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৫১ পয়সা। গত বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ১ টাকা ৯৯ পয়সা। এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৫৪ পয়সা। গত বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৪ টাকা ০২ পয়সা।

দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৩ টাকা ৪৪ পয়সা, যা গত বছর ৩ টাকা ৪ পয়সা ছিল। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৪ টাকা ৩২ পয়সা।

হঠাৎ রবি ও গ্রামীণফোনের শেয়ারে সুবাতাস: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের দুই বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা ও গ্রামীণফোন লিমিটেডের শেয়ারে হঠাৎ সুবাতাস বইছে। আজ মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) এই দুই কোম্পানিকে একই পথে হাঁটতে দেখা গেছে। আজ কোম্পানি দুটির অবদানে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স বেড়েছে প্রায় ১১ পয়েন্ট। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রবি: আজ রবি আজিয়াটার শেয়ার দর বেড়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা বা ৩.১০ শতাংশ। এতে করে আজ ডিএসইর ব্রড ইনডেক্সে কোম্পানিটির অবদান ছিলো ৬.৩৭ পয়েন্ট। যা ছিলো ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স বৃদ্ধিতে সর্বোচ্চ। আজ কোম্পানিটির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫০ লাখ ৯৫ হাজার ৪৫১টি। যার বাজার মূল্য ছিলো ২১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

গ্রামীণফোন: আজ গ্রামীণফোনের শেয়ার দর বেড়েছে ৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ০.৯৬ শতাংশ। এতে করে আজ ডিএসইর ব্রড ইনডেক্সে কোম্পানিটির অবদান ছিলো ৪.৪২ পয়েন্ট। যা ছিলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আজ কোম্পানিটির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৯২৮টি। যার বাজার মূল্য ছিলো ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। অনেক দিন কোম্পানি দুটিকে এক সঙ্গে সামনে অগ্রসর হতে দেখা গেছে। আজ কোম্পানি দুটি সামনে অগ্রসর হওয়ায় ডিএসইর প্রধান সূচক বৃদ্ধিতে বড় অবদান রেখেছে।

ডিএসই ১০ কোম্পানির উপর ভর করে পুঁজিবাজার চাঙ্গা: সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স বেড়েছে ২২ পয়েন্ট। যার মধ্যে প্রায় ২২ পয়েন্টই অবদান রেখেছে ১০ কোম্পানি। এর মধ্যে ৬ কোম্পানির অবদান রয়েছে ১৮ পয়েন্ট। কোম্পানিগুলো হলো-রবি, গ্রামীণ ফোন, তিতাস গ্যাস, বেক্সিমকো ফার্মা, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক এবং আইপিডিসি। আমার স্টক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার ডিএসইতে ইনডেক্স বাড়ানোতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড। আজ কোম্পানিটি দর বেড়েছে ৩.১০ শতাংশ। এরফলে কোম্পানিটি ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স সূচক বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে ৬.৩৭ পয়েন্ট।

একইভাবে শেয়ার দর বৃদ্ধির কারণে পাওয়ায় গ্রামীণ ফোনের অবদান রয়েছে ৪.৪২ পয়েন্ট এবং তিতাস গ্যাসের ২.৫৯ পয়েন্ট। এই তিন কোম্পানির ডিএসইএক্স-এ মোট অবদান রেখেছে ১৩ পয়েন্টের বেশি। এছাড়াও, ডিএসই ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স-এর সূচক বৃদ্ধিতে অবদান রাখার শীর্ষ অন্য কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার অবদান রয়েছে ২.৩৮ পয়েন্ট, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের অবদান রয়েছে ১.৫৪ পয়েন্ট, আইপিডিসির অবদান রয়েছে ১.১৮ পয়েন্ট।

ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স বৃদ্ধিতে অবদান রাখা শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে বাকি আরও চার কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো ডেসকো, আরএকে সিরামিক, স্কয়ার ফার্মা এবং পদ্মা ওয়েল।

এই চার কোম্পানির মধ্যে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্সে ডেসকোর অবদান ০.৯৩ পয়েন্ট, আরএকে সিরামিকের অবদান ০.৭৬ পয়েন্ট, স্কয়ার ফার্মার অবদান ০.৫৮ পয়েন্ট এবং পদ্মা ওয়েলের ০.৪৫ পয়েন্ট। ডিএসইর প্রধান ইনডেক্সে উত্থানে এই ১০ কোম্পানিটর মোট অবদান ছিলো প্রায় ২২ পয়েন্ট।

ডিএসই ৭ খাতের কোম্পানির শেয়ারের উস্ফল্লণ: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে চাঙ্গা পুঁজিবাজারে সব সূচক বেড়েছে। এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২১৩টির বা ৫৬.৬৪ শতাংশ শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। আজ ডিএসইর ২০ খাতের মধ্যে ৭ খাতে বেশিরভাগ শেয়ার দরে চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খাতগুলো হলো- আর্থিক, বস্ত্র, বিমা, প্রকৌশল, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ওষুধ ও রসায়ন খাত।

আর্থিক খাত: আর্থিক খাতে আজ লেনদেন হওয়া ২২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৯টির বা ৮৬.৩৬ শতাংশ কোম্পানির। দর কমেছে ১টি বা ৪.৫৯ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টির বা ৯.০৯ শতাংশ কোম্পানির। এখাতে আজ দর বেশি বেড়েছে ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১০ শতাংশ, আইপিডিসির ৯.৯৭ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ৫.৮১ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্সের ৫.৫১ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৩.৪১ শতাংশ, উত্তরা ফাইন্যান্সের ২.২৮ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ২.০৪ শতাংশ, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ১.৮০ শতাংশ, মাইডাস ফাইন্যান্স ১.৯৬ শতাংশ। এখাতে আজ কেবল ন্যাশনাল হাউজিংয়ের দর কমেছে। আর আইসিবি ও ইন্টার‌ন্যাশনাল লিজিংয়ের শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

বস্ত্র খাত: বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর বেড়েছে ৪৩টির বা ৭২.৮৮ শতাংশ কোম্পানির। দর কমেছে ১৩টি বা ২২.০৩ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টির বা ৫.০৮ শতাংশ কোম্পানির। খাতটিতে আজ দর বেশি বেড়েছে মেট্রো স্পিনিংয়ের ৯.৯৩ শতাংশ, মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিংয়ের ৯.৯০ শতাংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের ৯.৬২ শতাংশ,

ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের ৬.৪৭ শতাংশ, এইচআর টেক্সটাইলের ৬.৩০ শতাংশ, ঢাকা ডাইংয়ের ৩.৬২ শতাংশ, এস্কোয়ার নিটের ৩.৪৮ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের ২.৯২ শতাংশ, সিমটেক্সের ২.৮৯ শতাংশ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২.৮৪ শতাংশ।

প্রকৌশল খাত: প্রকৌশল খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর বেড়েছে ২৬টির বা ৬১.৯০ শতাংশ কোম্পানির। দর কমেছে ১৪টি বা ৩৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত ছিল ২টির বা ৪.৭৬ শতাংশ কোম্পানির। এখাতে দর বেশি বেড়েছে আফতাব অটোর ৮.৪৫ শতাংশ, ন্যাশনাল পলিমারের ৪.২৯ শতাংশ, কেডিএস এক্সেসরিজের ৩.৯৪ শতাংশ, গোল্ডেন সনের ২.১২ শতাংশ।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত: খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর বেড়েছে ১২ টির বা ৬০ শতাংশ কোম্পানির। দর কমেছে ৭টি বা ৩৫ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত ছিল ১টির বা ৫ শতাংশ কোম্পানির। এখাতে দর বেশি বেড়েছে শ্যামপুর সুগারের ৯.৯৫ শতাংশ, তৌফিকা ফুডের ৪.৩৯ শতাংশ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের ২.৩২ শতাংশ।

বিমা খাত: বিমা খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর বেড়েছে ৩৫ টির বা ৬৮.৬২ শতাংশ কোম্পানির। দর কমেছে ১৪টির বা ২৪.৪৫ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত ছিল ১টির বা ৫ শতাংশ কোম্পানির। খাতটিতে দর বেশি বেড়েছে জনতা ইন্সুরেন্সের ৮.৯৮ শতাংশ, স্টান্ডার্ড ইন্সুরেন্সের ৭.৫৯ শতাংশ এবং পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্সের ৭.২১ শতাংশ, কমিন্টকেন্টাল ইন্সুরেন্সের ৪.১৪ শতাংশ, কর্ণফুলি ইন্সুরেন্সের ৩.৪৭ শতাংশ, সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের ৩.৩৬ শতাংশ, বিজিআইসির ৩ শতাংশ, পূরবী জেনারেল ইন্সুরেন্সের ৩.১৭ শতাংশ।

মিউচুয়াল ফান্ড খাত: মিউচুয়াল ফান্ড খাতে লেনদেন হওয়া ৩৬টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর বেড়েছে ২০টির বা ৫৫.৫৬ শতাংশ কোম্পানির। দর কমেছে ২টি বা ৫.৫৬ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত ছিল ১৪টির বা ৩৮.৮৯ শতাংশ কোম্পানির। এখাতে দর বেশি বেড়েছে ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৫.৬৮ শতাংশ, আইসিবি এপ্লয়িজ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৩.৫৭ শতাংশ, ফার্স্ট জনতা মিউচুয়াল ফান্ডের ৩.৫২ শতাংশ।

ওষুধ ও রসায়ন খাত: ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হওয়া ৩১টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর বেড়েছে ১৬টির বা ৫৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির। দর কমেছে ১২টি বা ৪০ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত ছিল ২টির বা ৬.৬৭ শতাংশ কোম্পানির। এখাতে দর বেশি বেড়েছে এএফসি এগ্রোর ৪.০৮ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মার ৩.০১ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার ২.৯২ শতাংশ, লিবরা ইনফিউশনের ২.২৫ শতাংশ।

বেক্সিমকো’র সুকুক বন্ড সাবস্ক্রিপশনের সময় বাড়াল : সুকুক বন্ডের মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের লক্ষ্যে পাবলিক সাবস্ক্রিপশনের সময় বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো)। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, বেক্সিমকোর ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ডের মধ্যে পাবলিক অফারে ৭৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য গত ১৬ আগস্ট চাদাঁ সংগ্রহ শুরু করে। যার জন্য নির্ধারিত সর্বশেষ সময় ছিল ২৩ আগস্টের বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। এই সময়ে বন্ডটির চাহিদার ৭৫০ কোটি টাকার বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা মাত্র ৫৫ কোটি ৬১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার বা ৭.৪১৫% আবেদন করেন। এতে ৭১ জন বিনিয়োগকারী আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে কোম্পানিটি সাবস্ক্রিপশনের সময় বাড়িয়েছে। যা আগামি ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহি পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম  বলেন, বন্ডটির পাবলিক অফারে সর্বোচ্চ ১৫ কার্যদিবস চাঁদা সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে। তবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ প্রথম দফায় ৫ দিন চাঁদা সংগ্রহের জন্য সময় নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু ওইসময়ে চাহিদার পুরো আবেদন জমা না পড়ায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সাবস্ক্রিপশনের সময় বাড়িয়েছে।

উল্লেখ্য বেক্সিমকোর প্রস্তাবিত গ্রিন সুকুকটির আকার ৩ হাজার কোটি টাকার। এরমধ্যে ৭৫০ কোটি টাকা আইপিওতে উত্তোলনের জন্য বরাদ্দ। বাকি ২ হাজার ২৫০ কোটি টাকার প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। এরমধ্যে বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের থেকে ৭৫০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের থেকে ১৫০০ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য বরাদ্দ।

গত ২৩ জুন কতিপয় শর্তসাপেক্ষে বিএসইসি বেক্সিমকো লিমিটেডের ৩ হাজার কোটি টাকার ৫ বছর মেয়াদী সিকিউরড কনভার্টেবল অথবা রিডেম্বল অ্যাসেট ব্যাকড গ্রিন সুকুক এর প্রস্তাব প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়।

এই সুকুকের প্রতি ইউনিটে অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা। সুকুকটির নূন্যতম সাবস্কিপশন ৫ হাজার টাকা ও নূন্যতম লট ৫০টি। সুকুকটির সর্বনিন্ম প্রিয়ডিক ডিস্ট্রিবিউশন রেট ৯ শতাংশ। সুকুকটির ট্রাস্টি হিসেবে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এবং ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে যথাক্রমে সিটি ব্যংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস ও অগ্রণী ইক্যুইটি এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কাজ করছে।