দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ার দর বৃদ্ধির পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য না থাকায় কোম্পানিগুলো সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

কোম্পানি ১০টি হলো: মেট্রো স্পিনিং, আনলিমা ইয়ার্ন, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্স মিল্ক, রিং শাইন টেক্সটাইল, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, সাউথবাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, সালভো কেমিক্যাল, ঢাকা ডাইং, জনতা ইন্স্যুরেন্স। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।

ডিএসই জানায়, সম্প্রতি কোম্পানি ১০টির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে কোম্পানিগুলোর কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠায় ডিএসই। এর জবাবে কোম্পানি দশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বেড়েছে।

মেট্রো স্পিনিং: গত ২৫ জুলাই মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ছিল ১৭ টাকা ২০ পয়সা। ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩০ টাকায় উঠেছে। অর্থাৎ এই ২২ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১২.৮০ টাকা বা ৭৪.৪১ শতাংশ বেড়েছে।

আনলিমা ইয়ার্ন: গত ২৫ জুলাই সময়ে আনলিমা ইয়ার্নের শেয়ার দর ছিল ৩৮ টাকা ১০ পয়সা। ২২ আগস্ট কোম্পানিটির দর বৃদ্ধি পেয়ে ৪৯ টাকা ৪০ পয়সায় উঠে। অর্থাৎ এই ২২ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১১.৩০ টাকা বা ২৯.৬৫শতাংশ বেড়েছে।

মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ: বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দর গত ০২ আগস্ট ছিল ১৫.৩০ টাকায়। আর ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২৬.১০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১১ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০.৮০ টাকা বা ৭১ শতাংশ বেড়েছে।

মেঘনা কনডেন্স মিল্ক: শেয়ার দর গত ০৩ আগস্ট ছিল ১৪.৪০ টাকায়। আর ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২০.৫০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১০ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৬.১০ টাকা বা ৪২ শতাংশ বেড়েছে।

রিং শাইন টেক্সটাইল: শেয়ার দর গত ১১ আগস্ট ছিল ১০.৪০ টাকায়। আর ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ১৪.৫০ টাকায়। অর্থাৎ এই ৫ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.১০ টাকা বা ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।

ফারইস্ট ফাইন্যান্স: শেয়ার দর গত ৩ আগস্ট ছিল ৭.২০ টাকায়। আর ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ১০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১০ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৮০ টাকা বা ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।

সাউথবাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক: শেয়ার দর গত ১১ আগস্ট ছিল ১১ টাকায়। আর ২৫ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ এই ৯ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৪.৬০ টাকা বা ১৩৩ শতাংশ বেড়েছে।

সালভো কেমিক্যাল: শেয়ার দর গত ১৬ আগস্ট ছিল ৪৩ টাকা ৩০ পয়সায়। আর ২৫ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ৫৪ টাকা ৫০ পয়সায়। অর্থাৎ এই ৭ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১১ টাকা ২০ পয়সা বা ২৬ শতাংশ বেড়েছে।

ঢাকা ডাইং: শেয়ার দর গত ১৮ আগস্ট ছিল ২৩ টাকায়। আর ২৫ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ এই ৫ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ১৬ শতাংশ বেড়েছে।

জনতা ইন্স্যুরেন্স: শেয়ার দর গত ১৬ আগস্ট ছিল ৩৯ টাকায়। আর ২৫ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ৫৮ টাকা ২০ পয়সায়। অর্থাৎ এই ৭ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৯ টাকা ২০ পয়সা বা ৪৯ শতাংশ বেড়েছে।

এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় ধস: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন,২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ২৭৭ তম সভায় আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

জানা গেছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৮ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৫৫ পয়সা। ফলে কোম্পানিটির মুনাফায় ধস নামছে।

আর অর্ধ-বার্ষিকীতে (জানুয়ারি-জুন,২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮৫ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৮৩ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সমন্বিত সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ১৬ টাকা ৩৭ পয়সা।

‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার ভোগান্তির নিরসন চায় বিনিয়োগকারীরা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচায় যে ভোগান্তি হয়, সেই ভোগান্তির নিরসন চায় বিনিয়োগকারীরা। একই সঙ্গে ‘জেড’ ক্যাটাগরির নাম পরিবর্তন করারও দাবি জানিয়েছে বিনিয়োগকারীরা।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি একেএম মিজান-উর রশিদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়।

বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিনের মন্দা ভাব কাটিয়ে পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। আপনার সুযোগ্য নেতৃত্ব, পুরো কমিশনের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সব অংশীজনের সহযোগিতার ফলে পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি হয়েছে। পুঁজিবাজারের সূচক ও দৈনন্দিন লেনদেন বেড়েছে।

সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্যাপিটাল গেইনের পাশাপাশি ভালো ডিভিডেন্টের প্রত্যাশা করছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় শেয়ারের বিভাজনের কারণে ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে বিনিয়োগকারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে, নগদ টাকা দিয়ে শেয়ার কিনতে হয়। অন্য কোনো শেয়ার বিক্রি করে ওই দিন শেয়ার কেনা যায় না।

‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার ক্রয়ের পর চতুর্থ কার্যদিবসে ম্যাচুরিটি (বিক্রয় যোগ্য) হয়। শেয়ার বিক্রির টাকা ম্যাচুরিটি হওয়ার পূর্বে ওই টাকা দিয়ে অন্য কোন শেয়ার ক্রয় আদেশ দেওয়া যায় না। এতে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পুঁজিবাজারে লেনদেনের গতি কিছুটা কমে যায় এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের চিঠিতে আরও বলা হয়, বিশ্বের কোন দেশে ‘জেড’ ক্যাটাগরি বলতে কোনো ধরনের শেয়ার নেই। একই মার্কেটে দুই ধরনের নিয়ম থাকা ঠিক নয় বলে মনে করেন অনেক বাজার বিশ্লেষকরা। তাই পুঁজিবাজারের লেনদেনের গতি বৃদ্ধি ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ‘জেড’ ক্যাটাগরির নাম পরিবর্তন করারসহ শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘এন’ ক্যাটাগরির মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ডিএসই মার্কেট লিডারের তালিকায় নতুন ৬ কোম্পানি: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মার্কেট লিডারের তালিকায় নতুন ৬ কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো: পাওয়ার গ্রিড, বেক্সিমকো ফার্মা, এনসিসি ব্যাংক, শাহজিবাজার পাওয়ার, ম্যাকসন স্পিনিং ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা বলছেন, নতুন কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বড় বিনিয়োগকারীদের বাই প্রেসার বেশি ছিল। সে কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ছিল। আগামী সপ্তাহেও যদি কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বড় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অব্যাহ থাকে, তাহলে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বৃদ্ধি পেতে পারে। আর যদি বগ বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তোলার প্রবণতায় থাকে, তাহলে কোম্পানিগুলোর দরে সংশোধনে হতে পারে।

পাওয়ার গ্রিড: পাওয়ার গ্রিড লেনদেনের তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ২৯১ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৫২ টাকা ৮০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ৪ টাকা ৭০ পয়সা বা ৮.৯০ শতাংশ।

বেক্সিমকো ফার্মা: বেক্সিমকো ফার্মা লেনদেনের তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ২৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ১৯১ টাকা ২০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ২০৩ টাকা ৭০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা বা ৬.৫৩ শতাংশ।

এনসিসি ব্যাংক: এনসিসি ব্যাংক লেনদেনের তালিকার ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ২০৫ কোটি ৪০ লাখ ২৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ১৫ টাকা ৭০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ১৫ টাকা ৮০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ১০ পয়সা বা ০.৬৩ শতাংশ।

শাহজিবাজার পাওয়ার: শাহজিবাজার পাওয়ার লেনদেনের তালিকার সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ২০০ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৯০ টাকা ১০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ১৬ টাকা ৮০ পয়সা বা ১৮.৬৪ শতাংশ।

ম্যাকসন স্পিনিং: ম্যাকসন স্পিনিং লেনদেনের তালিকার অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ১৬৮ কোটি ১১ লাখ ৮৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ২৪ টাকা ১০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ২৫ টাকা ৮০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ৭.০৫ শতাংশ।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক লেনদেনের তালিকার দশম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ ২৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ১২ টাকা ১০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ১২ টাকা ৮০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ৭০ পয়সা বা ৫.৭৮ শতাংশ।

বিএসসির নতুন জাহাজ জার্মানিতে আটক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) নতুন একটি জাহাজ আটক করেছে জার্মানি। ২৩ আগস্ট জার্মানির ব্রেমেন বন্দরে জাহাজটি আটক করা হয়েছে। আটক জাহাজটির নাম এমটি বাংলার অগ্রদূত।

জার্মানির কর্তৃপক্ষ বলছে, জাহাজটিতে ২৭টি ত্রুটি শনাক্ত করেছে জার্মানির পোর্ট স্টেট কন্ট্রোল বা পিএসসি। ইউরোপিয়ান মেরিটাইম সেফটি এজেন্সির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজটি তেল পরিবহন করছিল। গত বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশের নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ নৌ বাণিজ্য কার্যালয় থেকে এই বিষয়ে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।

আদেশে বলা হয়েছে, অসংখ্য ত্রুটি নিয়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ আটকের ঘটনা উদ্বেগের বিষয়। জাহাজের নাম উল্লেখ না করে সেখানে আরও বলা হয়, বেশিরভাগ ত্রুটিই জাহাজ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা সম্পর্কিত। এটি দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার প্রতিফলন। বারবার এ ধরনের ঘটনার কারণে যাতে ওই সব অঞ্চলে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ কালো তালিকাভুক্ত না হয়, সে জন্য কঠোরভাবে নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হবে।

আদেশ জারির বিষয়ে নৌ বাণিজ্য কার্যালয়ের মুখ্য কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশে নিবন্ধিত সমুদ্রগামী জাহাজগুলো যাতে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন প্রতিপালন করে, বহির্বিশ্বে যেন বাংলাদেশের সম্মান ক্ষুণ্ন না হয়, সে জন্যই এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জাহাজটির নির্মাণ সংক্রান্ত কোনো ত্রুটি নেই দাবি করে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমোডর সুমন মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে কাগজপত্র হালনাগাদ করা হয়নি। তাই সমস্যা হয়েছে। এখন হালনাগাদ করা হয়েছে। জাহাজটি বন্দর ত্যাগের অনুমতি পাবে শিগগিরই।

বাটা সু দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় উস্ফল্লণ: কভিড-১৯-এর প্রভাবে গত বছরের দুই ঈদ, পূজা ও পহেলা বৈশাখে জুতা বিক্রিতে ধস নামে। এতে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকভুক্ত বহুজাতিক জুতা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান বাটা সু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডকে বড় লোকসানে পড়তে হয়েছে। তবে চলতি ২০২১ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ব্যবসায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে কোম্পানিটি। এ সময়ে আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৯৯ শতাংশ ব্যবসা বেড়েছে কোম্পানিটির। অন্যদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ৪২৬ শতাংশ।

চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রথমার্ধে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৪০১ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ২০৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৭০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৪৪ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ঋণাত্মক ৫১ টাকা ৬৭ পয়সা। এ বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৬৫ টাকা ৫০ পয়সায়।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ২১৭ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৪১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৭৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ঋণাত্মক ৫৩ টাকা ৭৪ পয়সা। কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, বিক্রি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মজুদ পণ্য ছাড়ে বিক্রি করে দেয়ার কারণে দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাটা সুর আয় বেড়েছে।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে লোকসান হওয়ার কারণে বাটা সু বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের প্রস্তাব করেছে, যেখানে আগের ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আলোচ্য হিসাব বছরে ১৩২ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে কোম্পানিটির, যেখানে আগের বছরে ৫৫ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছিল।

২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৯৬ টাকা ৯৪ পয়সা, যেখানে আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ৩৬ টাকা ১ পয়সা। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৬৭ টাকা ৯৪ পয়সায়।