দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ পর্যন্ত (৩০ আগস্ট) ২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৭০০ ডোজ টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি মাসে যাতে এক কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়া যায়, তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিনোফার্ম থেকে পাওয়া শিডিউল অনুযায়ী অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি হিসেবে ডিসেম্বরের মধ্যে ৬ কোটি টিকা পাওয়া যাবে।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, মহামারি করোনা প্রতিরোধ করার জন্য এ পর্যন্ত (৩০ আগস্ট) ১ কোটি ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ১৮ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ১৬৯ জনকে দ্বিতীয় ডোজসহ ২ কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার ১৮৭ ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। মজুত রয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৩ ডোজ। টিকা সংগ্রহ এবং বিনা মূল্যে প্রদান কাজ চলমান রয়েছে।

করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পরপরই সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে বিনা মূল্যে টিকা দেওয়ার বিষয়টি সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। করোনার টিকা সংগ্রহে বিশ্বের সব টিকা উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গেই সরকার যোগাযোগ করেছে।

এগুলোর মধ্যে কেবল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সাড়া পাওয়া যায়। তাদের অগ্রিম টাকা দিয়ে তিন কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহের চুক্তি করা হয়। অন্যান্য উৎপাদনকারী সংস্থা থেকে টিকা পাওয়ার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীকালে কেবল চীনের সিনোফার্ম ও রাশিয়ার স্পুতনিক-ভি থেকে সাড়া পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে সিনোফার্মের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের জন্য সমঝোতা চুক্তিও হয়েছে।

জাতীয় পার্টির সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার নদীভাঙনের স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। বন্যা থেকে রক্ষা, নদীভাঙন নিয়ন্ত্রণ, নদীশাসন, নাব্যতা রক্ষাসহ সামগ্রিক নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ডেলটা প্ল্যান ২১০০ গ্রহণ করা হয়েছে।

এতে সারা দেশকে সাতটি নদী বেসিনে বিভক্ত করে সমীক্ষা সম্পাদন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কর্ণফুলী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর বেসিনভিত্তিক সমীক্ষা শেষ হয়েছে। সমীক্ষার সুপারিশের আলোকে প্রকল্প প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন আছে। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, লোয়ার মেঘনা অংশ সমীক্ষার জন্য প্রকল্প প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন আছে। পানিপ্রবাহের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নদীগুলোকে স্থিতিশীল রাখা এবং যথাযথ পলি ব্যবস্থাপনা কৌশল অনুসরণ করে কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে দেশের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস ও নদীভাঙনকবলিত এলাকার ভাঙন রোধ করে টেকসই উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত অর্জন সম্ভব হবে।

মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে চার বছর ধরে দেশীয় গবাদিপশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। গত ঈদুল আজহার সময় কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ, আর কোরবানি হওয়া পশু ছিল ৯০ লাখ ৯৩ হাজার। বিগত ১২ বছরে দেশে দুধ উৎপাদন ৫ গুণ এবং ডিমের উৎপাদন ৪ গুণ বেড়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।