দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বন্ড ছেড়ে বেক্সিমকোর শেয়ারধারীদের কাছ থেকে ৭৫০ কোটি টাকা ‍তুলতে চেয়েছিল কোম্পানিটি। কিন্তু বিনিয়োগাকারীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফায় আবেদনের মেয়াদ বাড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। জানানো হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোটা পূরণ না হলে আইপিও বাতিল হবে। সরকারি সুকুক বন্ডে ব্যাপক সাড়া মিললেও দেশের প্রথম বেসরকারি শরিয়াহভিত্তিক গ্রিন সুকুক বন্ডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তেমন নেই বললেই চলে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের শীর্ষ করপোরেট প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড সুকুক বন্ড ইস্যু করে ৩ হাজার কোটি টাকা উত্তোলনের প্রথম ধাপে হোঁচট খেয়েছে। প্রথম দফার সাবস্ক্রিপশনে ব্যর্থ হয়ে দ্বিতীয় দফায় ১০ কার্যদিবস সময় বাড়ালেও বিনিয়োগকারীরা বন্ডটির আইপিওতে তেমন আগ্রহ দেখাননি।

দ্বিতীয় দফার বাড়তি সময়ে মাত্র একটি আবেদন জমা পড়েছে। ফলে ১৫ কার্যদিবসের আবেদনকালীন সময়ে বন্ডটির আইপিও আকারের সাড়ে ৭ শতাংশের কম আবেদন জমা পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে বেক্সিমকোর আবেদনের প্রেক্ষিতে সুকুক বন্ডের সাবস্ত্রিপশনের সময় ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলার অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। বিশেষ ক্ষমতায় সাবস্ক্রিপশনের সময় বাড়ানোর এমন সুযোগ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বর্ধিত সময়ের মধ্যে ন্যূনতম আবেদন জমা না পড়লে আইপিও বাতিল হবে বলে জানিয়েছেন এসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তবে ন্যূনতম কী পরিমাণের আবেদন জমা না পড়লে বন্ডটির আইপিও বাতিল হবে, তা জানাননি তিনি।

বেক্সিমকো লিমিটেডের ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ডের মধ্যে পাবলিক অফারে ৭৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য গত ১৬ আগস্ট চাঁদা সংগ্রহ শুরু হয়। যার জন্য প্রথম দফায় নির্ধারিত সর্বশেষ সময় ছিল ২৩ আগস্টের বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ে বন্ডটির চাহিদার ৭৫০ কোটি টাকার বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা মাত্র ৫৫ কোটি ৬১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার বা ৭ দশমিক ৪১৫ শতাংশ আবেদন করেন। এতে ৭১ জন বিনিয়োগকারী আবেদন করেন।

প্রথম দফায় কাক্সিক্ষত আবেদন জমা না পড়ায় সাবস্ক্রিপশনের সময় আরও ১০ কার্যদিবস বাড়ানো হয়, যার শেষ সময় ছিল গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু বাড়তি ১০ কার্যদিবসে আইপিও আবেদনে তেমন পরিবর্তন হয়নি। এ সময় মাত্র একজন বিনিয়োগকারী ১০ লাখ টাকার বন্ড কেনার আবেদন জানান। এতে করে আবেদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৫ কোটি ৭১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, যা মোট চাহিদার মাত্র ৭ দশমিক ৪২৯ শতাংশ। এক্ষেত্রে ঘাটতি দাঁড়ায় ৬৯৪ কোটি ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকার।

৩ হাজার কোটি টাকার বেক্সিমকোর গ্রিন সুকুকটির মধ্যে ৭৫০ কোটি টাকা বিদ্যমান শেয়ারধারীদের কাছ থেকে এবং ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা শেয়ারহোল্ডার বাদে অন্যান্য বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। অবশিষ্ট ৭৫০ কোটি টাকা আইপিও ইস্যুর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।

গত ২৩ জুন শর্তসাপেক্ষে ৩ হাজার কোটি টাকার সুরক্ষিত রূপান্তরযোগ্য অথবা অবসায়নযোগ্য সম্পদভিত্তিক গ্রিন সুকুক বন্ডটির অনুমোদন দেয় এসইসি। বন্ডটির নাম হচ্ছে বেক্সিমকো সুকুক আল ইস্তিসনা, অর্থাৎ এর মাধ্যমে অর্থায়নকারীর অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে এবং বাস্তবায়ন শেষে তার মালিকানা হবে অর্থায়নকারীরা। প্রস্তাবিত বন্ডের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। বন্ডটির অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা ও ৫০টি বন্ডে একটি লট। মুনাফার ভিত্তি হবে ন্যূনতম ৯ শতাংশ বা সর্বশেষ বছরে প্রদত্ত লভ্যাংশের সঙ্গে মুনাফার পার্থক্যের ১০ শতাংশ বেশি।

বেক্সিমকোর গ্রিন সুকুকটি শতভাগ শেয়ারে রূপান্তরের সুবিধা রয়েছে। অবশ্য কোনো বন্ডধারী চাইলে রূপান্তর নাও করতে পারেন। বন্ডধারী চাইলে প্রতি বছর ২০ শতাংশ হারে আংশিক বা পুরো বন্ড বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারে রূপান্তর করতে পারবেন।  এক্ষেত্রে রূপান্তর মূল্য হবে ডিএসইর ২০ কার্যদিবসের ভারিত গড়ের ৭৫ শতাংশ। সুকুক বন্ডটি দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করা হবে। এসইসির অনুমোদনসাপেক্ষে বন্ড ইস্যুর জন্য একটি স্পেশাল পারপাস ভেহিকল গঠন করেছে বেক্সিমকো।

বেক্সিমকো জানিয়েছে , বন্ডের বেশিরভাগ অর্থ ব্যয় হবে বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান তিস্তা সোলার লিমিটেড ও করতোয়া সোলার লিমিটেডে। তিস্তা সোলার চীনা কোম্পানি টিবিইএ সানোয়াসিসের সঙ্গে যৌথভাবে গাইবান্ধায় ২০০ মেগাওয়াট এবং পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অপর এক চীনা কোম্পানি জুয়াংসু জংতিয়ান টেকনোলজির সঙ্গে যৌথভাবে করোতোয়া সোলার নামের ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে সুকুক বন্ডের অর্থ খরচ করা হবে।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দা ও লাঠশালার চরে ১ হাজার একর জমির ওপর তিস্তা সোলারে নির্মাণ হচ্ছে ২০০ মেগাওয়াটের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র। এটিই দেশে এ ধরনের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর তিস্তা সোলারের সঙ্গে সরকারের বিদ্যুৎ ক্রয় ও বাস্তবায়ন চুক্তি হয়েছে। অন্যদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নির্মিত হচ্ছে ৩০ মেগাওয়াটের করতোয়া সোলার লিমিটেড বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৮০ শতাংশের মালিক। বাকি ২০ শতাংশের মালিকানায় রয়েছে চীনা কোম্পানি জুয়াংসু জংতিয়ান টেকনোলজি। এই কেন্দ্র থেকে আগামী ২০ বছর ১৩ টাকা ৯০ পয়সা করে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। প্রসঙ্গত, বেক্সিমকো পাওয়ারের ৭৫ শতাংশের মালিক বেক্সিমকো লিমিটেড।

পুঁজিবাজারের খবর পড়তে ক্লিক করুন

স্বল্পমূলধনী কোম্পানিতে বিনিয়োগে সর্তক থাকার পরামর্শ: শিবলী রুবাইয়াত

মুন্নু সিরামিক ও মুন্নু এগ্রো উৎপাদনে ফিরেছে

বুধবার ডিএসই ৩ কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা উধাও

চার কোম্পানির শেয়ার মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই বাড়ছে

বেক্সিমকো সুকুকের আইপিও বাতিলের আশঙ্কা, ১টি আবেদন জমা

পুঁজিবাজারে সীমার মধ্যে থেকেই বিনিয়োগ করছে ব্যাংকগুলো

দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স বৃহস্পতিবার স্পট মার্কেটে

তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

ইস্টার্ন হাউজিংয়ের লভ্যাংশ ঘোষণা ১৫ সেপ্টেম্বর

পুঁজিবাজারের আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন

এমারেল্ড অয়েলের নতুন চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম

বেক্সিমকোর বন্ডে ১ মাস সাবস্ক্রিপশনের সময় বাড়াল বিএসইসি

পুঁজিবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগের জন্য এনআরবিসি ব্যাংককে জরিমানা

প্রকৌশল খাতের ৮ কোম্পানির ডিভিডেন্ড নিয়ে শঙ্কা!

তাল্লু স্পিনিং তথ্য গোপনের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে বিএসইসি

ডিএসই ৩ কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা উধাও

সাউথবাংলা ব্যাংকের ডিভিডেন্ড আসছে বিকালে

পূরবী ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তার শেয়ার বিক্রির ঘোষণা

ন্যাশনাল পলিমারের তৃতীয় প্রান্তিক সংশোধন

লভ্যাংশ পাঠিয়েছে জনতা ইন্স্যুরেন্স

ওয়ালটন হাইটেকের এজিএম ২৯ সেপ্টেম্বর