দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশের জন্য এখন বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধামনন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে বলেও জানিয়েছেন সরকারপ্রধান। রবিবার বাংলাদেশে নবনিযুক্ত নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত অ্যান জিরার্ডভ্যান লিউয়েন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর ইতিমধ্যে তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং তারা আমাদের জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা কক্সবাজারে পরিবেশ ও বনসম্পদ ধ্বংস করছে।

রোহিঙ্গা ও আটকে পড়া পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের জন্য একটি বোঝা আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, নেদারল্যান্ডের দূত রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বাস্তু এবং এনজিও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কাছে মনে হয়েছে, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজস্ব মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।

এদিকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রোস্টার। তিনি জানিয়েছেন, জলবায়ু ও জ্বালানি খাতে তার দেশ বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়।

বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশ চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর অতিক্রম করছে।বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে আচিম ট্রোস্টার বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় তিনি অভিভূত।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সফলতার প্রশংসা করে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, কোভিড-১৯ ভাইরাস পরিস্থিতি বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে কারণে মৃত্যুহার কম।

এ সময় করোনা মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে রবিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বংশীধর মিশ্র। সাক্ষাৎকালে নেপালের রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন সংকটে দেশটিকে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা সামগ্রীসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপাল বাংলাদেশের মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের ইপিজেড, বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়নে তার হৃদয় স্পর্শ করেছে বলে মন্তব্য করেন নেপালের রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশের হাড়িভাঙ্গা আম উপহার দেওয়ায় বংশীধর মিশ্র তার দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।