দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিভিন্ন ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে দায়ী করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিয়ে যেন ফেসবুক একাউন্ট খোলার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়, সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হয়নি।

সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার ঘটনাটি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড না হতো তাহলে এ ঘটনা বিস্তৃত হয়ে সারাদেশে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। রংপুরের পীরগঞ্জের ঘটনাও সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে ঘটেছে। রোববার (২৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে রাজধানীর সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলাম। সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর বিষয় নিয়ে বসেছিলাম। ইউরোপে একটি জরিপে উঠে এসেছে যে, ইউরোপের ৮০ ভাগ মানুষ মনে করেন সোশ্যাল মিডিয়া অনেকক্ষেত্রে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, সমাজের শান্তির জন্য হুমকি।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমি ইউরোপের পার্লামেন্টারি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে জানিয়েছি যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়ার পরেই এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটে থাকে। নাসিরনগর, কক্সবাজারের রামুর ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার কারণেই ঘটেছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছি, এরকম পরিস্থিতিতে আপনারা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন?

তিনি জানিয়েছেন দোষী ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। সে পরিচয় লুকিয়ে কিংবা বিদেশ থেকে পোস্ট দেয়। উই ফাইন্ড অথরিটি, সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস প্রোভাইডার। যেসব ঘটনা ঘটেছে সেটির দায় সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। এটি নিয়ে ভাবার বিষয় আছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী এটি উদ্বেগ তৈরি করেছে।

মন্ত্রী বলেন, ফোনের সিম কিনতে গ্রাহকের আইডি কার্ড লাগে। একজন ব্যক্তি কয়টি সিম পাবে সেটিও নির্ধারণ করা আছে। একটি কর্পোরেট হাউজ কয়টি সিম পাবে সেটিও নির্ধারণ করা আছে। সরকারের পক্ষ থেকে অনেক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। বাংলাদেশেও আইডি কার্ড দিয়ে যেন ফেসবুক আইডি খুলতে পারে, সেটি করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি।

হাছান মাহমুদ বলেন, যারা ফেসবুকে চাকরি করেছেন, তারা চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর বলছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার এইসব সাবেক কর্মকর্তাদের বক্তব্য যে, তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার চেয়েও নিজেদের লাভটাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, সবকিছুই এমনভাবে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন, সেটি যাতে খারাপ কাজে ব্যবহৃত না হয় এবং সেখানে যাতে স্বচ্ছতা থাকে। এখন ফেইসবুকে পরিচয় গোপন করে ‘ফেইক আইডি’ থেকে পোস্ট দেওয়া হয়, তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এটির প্রতিকার দরকার আছে।