রুহুল আমীন,ঢাকা: কোরি অ্ বিধ্বস্ত উইন্ডিজযান্ডারসন ও জেসি রাইডার ‘ঝড়ো’ শতকে তৃতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিধ্বস্ত করে ১৫৯ রানের জয় পেয়েছে নিউ জিল্যান্ড।পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এখন ১-১ সমতা। শনিবার নেলসনে হবে চতুর্থ ওয়ানডে।

কুইন্সটাউনে বুধবার বৃষ্টির কারণে তৃতীয় ওয়ানডের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ২১ ওভারে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে অ্যান্ডারসন, রাইডারের জোড়া শতকে ৪ উইকেটে ২৮৩ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে নিউ জিল্যান্ড।

দ্বিতীয় ওভারে মার্টিন গাপটিল বিদায় নিলেও নিউ জিল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়ার কৃতিত্ব অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। মাত্র ১১ বলের সাহায্যে ৩টি করে ছক্কা ও চারের সাহায্যে ৩৩ রান করেন তিনি।

বেশিক্ষণ টেকেননি টেস্ট সিরিজের সেরা ব্যাটসম্যান রস টেইলর। ৮ বলে ৯ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। এরপরের সময়টুকু অতিথিদের জন্য শুধুই হতাশার।

চতুর্থ উইকেটে মাত্র ৭৫ বলে ১৯১ রানের চমৎকার এক জুটি দলকে উপহার দেন রাইডার ও অ্যান্ডারসন। পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদির প্রায় দেড় যুগ পুরনো ৩৭ বলে শতকের বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে ৩৬ বলে শতকে পৌঁছান ম্যাচ সেরা অ্যান্ডারসন।

শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ১৩১ রানে অপরাজিত থাকেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তার ৪৭ বলের ইনিংসে ছিল ১৪টি ছক্কা ও ৬টি চার। ইনিংসে তার চেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর কৃতিত্ব আছে কেবল রোহিত শর্মা (১৬) ও শেন ওয়াটসনের (১৫)।

অ্যান্ডারসনের আড়ালে পড়ে গেলেও রাইডারের কৃতিত্বও কম নয়। ষষ্ঠ দ্রুততম শতক করেছেন তিনি। ৪৬ বলে ১২টি চার ও ৫টি ছক্কায় তিন অঙ্কে পৌঁছান রাইডার। আউট হওয়ার আগে ৫১ বলে করেন ১০৪ রান।

ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড গড়েছে নিউ জিল্যান্ড। গত বছরের ২ নভেম্বর ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। ব্যাঙ্গালোরের সেই ম্যাচে ১৯টি করে ছক্কা হাঁকিয়েছিল দুই দলই। ২২ ছক্কা হাঁকিয়ে সেই রেকর্ড ভেঙ্গেছেন ম্যাককালাম-অ্যান্ডারসন-রাইডাররা।

ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে ‘সম্পূর্ণ’ ইনিংসের ক্ষেত্রে রান রেটের নতুন রেকর্ডও গড়েছে নিউ জিল্যান্ড। ওভার প্রতি ১৩.৪৭ গড়ে রান সংগ্রহ করেছে তারা। আগের রেকর্ডটি ছিল শ্রীলঙ্কার। ২০০৬ সালে নেদাল্যান্ডরসের বিপক্ষে ওভার প্রতি ৮.৮৬ গড়ে ৯ উইকেটে ৪৪৩ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা।

ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে দ্রুত রান সংগ্রহের রেকর্ডটি নিউ জিল্যান্ডেরই। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের ৬ ওভারে ১৫.৮৩ গড়ে ৯৫ রান করে ১০ উইকেটের জয় পেয়েছিল তারা।

কী ঝড় গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের ওপর দিয়ে সহজেই অনুমান করা যায়। সবচেয়ে ‘হিসেবী’ নিকিতা মিলার দিয়েছেন ওভার প্রতি ১১ রান। রবি রামপল ৩ ওভারে দিয়েছেন ৬৪ রান।

ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ডদের অনুপস্থিতিতে শক্তি হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে এতো বড় লক্ষ্য অতিক্রম করা ছিল প্রায় অসম্ভব। ৫৬ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানের বিদায়ে লক্ষ্য তাড়া করারও চেষ্টা করতে পারেনি তারা।

৪৩ বলে ৩টি করে ছক্কা ও চারের সাহায্যে অধিনায়ক ডোয়াইন ব্রাভোর অপরাজিত ৫৬ রানে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১২৪ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে মিচেল ম্যাকক্লেনাগান নিউ জিল্যান্ডের সেরা বোলার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউ জিল্যান্ড: ২১ ওভারে ২৮৩/৪ (গাপটিল ১, রাইডার ১০৪, ম্যাককালাম ৩৩, টেইলর ৯, অ্যান্ডারসন ১৩১*, রনকি ৩*; হোল্ডার ২/৪৮, মিলার ১/৪৪, সুনীল ১/৫০)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২১ ওভারে ১২৪/৫ (চার্লস ০, সিমন্স ১৩, ওয়ালটন ১৭, পাওয়েল ১, ব্রাভো ৫৬*, দিওনারায়ণ ২৯, রামদিন ১*; ম্যাকক্লেনাগান ২/৭, মিলস ১/১১, রাইডার ১/১৩, নিশাম ১/২১)

ম্যাচ সেরা: কোরি অ্যান্ডারসন।