ড.মোমেনস্টাফ করেসপন্ডেন্ট, সিলেট : জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের এ প্রতিনিধি বলেন, বিশ্বের কোনো দেশেই নির্বাচনের জন্য পর্যবেক্ষক পাঠায় না জাতিসংঘ ।

ইউরোপ-আমেরিকা এবং আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশেও নির্বাচনে পর্যবেক্ষক থাকে না।

পর্যবেক্ষক ডেকে আনা মানে অন্যদের মাতব্বরী করতে দেয়া। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের দিন ছুটিও ঘোষণা করা হয় না। নির্বাচনে জাতিসংঘ টেকনিক্যাল সাহায্য ছাড়া কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায় না।

শুক্রবার বেলা ১১টায় সিলেট সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি।

মোমেন বলেন, ‘নির্বাচনে কারচুপির দিন শেষ হয়ে গেছে। এখন নির্বাচনে কারচুপির খুব একটা সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষ যদি নির্বাচনকে গ্রহণ করে তা হলে জাতিসংঘ কিংবা বিশ্বের কোনো দেশেরই ভিন্নমতের কোনো গুরুত্ব নেই।’

জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর সাস্প্রতিক বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে ড. মোমেন বলেন, ‘গত ৩ মাসে বিশ্বের ১শটি জায়গা ভ্রমণ করেছেন তারানকো। এরই অংশ ছিল তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর।’

তিনি বলেন, ‘কোনো দেশের নির্বাচন বা অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই, যতক্ষণ না পর্যন্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলো এ ব্যাপারে কোনো ঐকমত্যে আসে। বাংলাদেশের ব্যাপারে সদস্য রাষ্ট্রগুলো এখন পর্যন্ত সে ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

ড. মোমেন বলেন, ‘জাতিসংঘ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের পক্ষে। যেহেতু কাদের ফাঁসির রায় কার্যকরের সময় দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সংলাপ চলছিল।

এজন্য বান কি মুন ফাঁসির রায় পিছিয়ে দিতে বলেছিলেন। কাদের মোল্লার ফাঁসির পর জাতিসংঘ মহাসচিব নিন্দা জানিয়েছেন বলে যে প্রচার চালানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। জাতিসংঘ মহাসচিব কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদ জানায়নি।’

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘসহ বিশ্বের কাছে একসময় বাংলাদেশের পরিচিতি ছিল তলাবিহীন ঝুঁড়ি হিসেবে, কিন্তু এখন রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।’

বিভিন্ন মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে মন্তব্য করে ড. মোমেন বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশ থেকে লোক নেবে না- এমন সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’

তিনি বলেন, ‘এই সংবাদ প্রকাশের কিছুদিন আগে আমরা সাড়ে ১২শ শান্তিরক্ষী পাঠিয়েছি। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীকে ফোন দিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আরো আড়াইশ লোক চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাতে রাজি হয়েছেন ‘

তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষা মিশনে লোক সরবরাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন। আমরা ৮ থেকে ১০ সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত ইকুইপম্যান্টসহ সৈন্য দিতে পারি, যা অন্য কোনো দেশ পারে না। তাই জাতিসংঘও বাংলাদেশ থেকে লোক নিতে বেশি আগ্রহী। বর্তমানে শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী রয়েছে। সুনামের সঙ্গে তারা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।’