নির্বাচন

আহসান আমীন, ঢাকা: আ’লীগের প্রহসনমুলক নির্বাচন নিয়ে অবশেষে ভোটারদের মাঝে উৎসাহ আনন্দের কমতি নেই। দেশের ১৪৭ আসনের নির্বাচনে ভোটারদের মাঝে ঈদের আনন্দ বিরাজ করছে। ভোটারদের উক্তি নির্বাচন আসছে, ভোট দিমু।

কে আসল বা আসল না তা আমাদের দেখার বিষয় নয়। পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন অয়। সুতারাং ভোট দেওয়া একটু বাড়তি আনন্দ বলে ভোটাররা মনে করেন।

এদিকে রাত পোহালেই ভোট। সময় যতই এগিয়ে আসছে ভোটারদের মধ্যে ততই আন্ন্দ বিরাজ করছে। ভোট দিতে গিয়ে নানা আতঙ্ক থাকলেও অবশেষে প্রশাসনের নিরাপত্তার আশায় সকাল থেকেই ভোট দিতে যাবেন ভোটারা।

তবে ভোট নিয়ে পারিবারিক ভাবে ভোটাররা নানা কথা বলেছেন। ভোট কেন্দ্রে যাবেন কি যাবেন না। তবে অধিকাংশ ভোটারের কথা, সকালের পরিবেশ দেখে ভোট কেন্দ্রে যাবেন।

তাতে মনে হচ্ছে ৬০% ভোট কাষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে ভিন্ন তথ্য, ভোটাররা এখন আতঙ্কে আছেন, ভোট দিতে গেলে জামায়াত শিবির হামলা করে কিনা তা নিয়ে আতঙ্কের শেষ নেই।

তবে সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করলে ভোট দিতে যাবেন বলে জানান মেহেন্দীগঞ্জের চরএককরিয়া ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসে নি। তবে তাতে আমাদের কি, মোরা ভোট দিমু এইডাই ভাল বুঝি।

করিম উদ্দিন নামে আরেক ভোটার বলেন, ভোট দিমু তাই ঢাহা থাকইয়া বাড়িতে আইছি। জানেন কত কষ্ট করে আসছি। একটু ভোট দেওয়ার জন্য।

বাবুগঞ্জের বাসিন্দা খবীর উদ্দিন বলেন, ভোট দিমু এইডাই বড় কথা। কাকে দিবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বাবারে জীবন বড় শেখের নৌকায় দিয়ে আসছি। এবারেও তাই চিন্তা করছি।

ঝিনাইদাহ শহরের বাসিন্দা মোস্তাফিজ রহমান আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, ভোট দিমু। তবে শহরে যে রাতেই গোলাগুলি শুরু হয়েছে। তাতে মনে ভয় শুরু হয়েছে। এ অবস্থা হলে ভোট দিতে যাব না।

সীতাকুন্ডের বাসিন্দা রহমান খান বলেন, ভোট দিতে যাব চিন্তা করছি। কিন্তু শুনছি নাকি ব্যালট পুড়ে ফেলছে। এ অবস্থায় মনে ভয় হচ্ছে। যামু কি যাব না তা এখনো জানি না।

কুমিল্লা ভোটার আরাফাত থান বলেন, হেতারা যা শুরু করছে তাতে ভোট দিতে যাওয়াই মুশকিল। বিএনপি নির্বাচনে না আসইয়া ভূল করছে। এহেন আমরা কারে ভোট দিব চিন্তার পড়ছি। তবে ভোট দিতে যাব। এইডাই যানি।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার কাগইল কৈঢোপ আবাসনের বুলু মিয়া (৬৫) বললেন, ইডে ক্যাংকা ভোট বারে? হামরাতো বাপের জন্মেও ইংকে ভোট দেকিনি। শুনেচ্চি, নিজেরা নিজেরা জয় লাব করিচে।

ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে একই এলাকার দিনমজুর হয়রত আলী বললেন, ভোট কেন্দ্রগুলোত আগুন লাগে দেওয়া হচ্চে। এর মদে কেংকা করে ভোট দিবের যামু?

অবশ্য ভিন্ন কথাও বলছেন কেউ কেউ। পূর্ব বগুড়ার কাহালু পাচপীর এলাকার কৃষক বাছেদ মিয়া বললেন, ভোট কেন্দ্রত তো পুলিশ র্যাব আছেই। সকালে সবকিছু ভালো থাকলে অবশ্যই ভোট দিবের যামু।

ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী এমএ সাঈদ বললেন, ভোট কেন্দ্রে যেতেই হবে। ভোটাধিকার প্রয়োগ করা দায়িত্ব। তাদের এলাকার বেশিরভাগ লোকজন ভোট কেন্দ্রে যাবেন।

যশোর-৪ আসনের ভোটার বাঘারপাড়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চন্দন দাস জানান, তাদের এলাকার আওয়ামী লীগের সব সমর্থকই ভোট দিতে যাবেন। তবে একেবারে রাজনীতির সাথে সম্পর্ক নেই এমন মানুষ সকালের পরিবেশ বুঝে ভোট কেন্দ্রে যাবেন।

কুষ্টিয়া সদর এলাকায় আকরাম হোসেন জানান, পাঁচ বছর পরপরে ভোট আসে। তাই ভোট তিনি দিতে ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন।

একই উপজেলার কেশরহাট পৌর এলাকার সোলাইমান জানান, মানুষ ভোট কেন্দ্রে যেতো। তবে সারা দেশে যেভাবে ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয়া হচ্ছে তাতে মনে হয় অনেক মানুষ ভোট দিতে যেতে ভয় পাবে। তবে যতোই ভয় থাকুক না কেনো রোববার সকালে তিনি ভোট দিতে যাবেন।

এদিকে সরকারের পক্ষ খেকে প্রত্যেকের মুঠোফোনে এসএমএস দিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে আহবান জানিয়েছেন। পাশাপাশি ভোট বিক্রি তো বিবেক বিক্রি , ভোট বিক্রিনা করতে আহবান জানিয়েছেন।