এরশাদমান্না আতোয়ার,ঢাকা: প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার শরীক দলগুলো ছাড়াই ইতিমধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করেছ ক্ষমতাসীন আ’লীগ। আ’লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবারের সাংবাদিক সম্মেলনে দেশবাসীকে সংগ্রামী অভিন্দন জানিয়েছেন এবং যতটুকু ভোট পড়েছে তাতেই সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।

তাই বিরোধী দলগুলো ছাড়া দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদের কে বিরোধী দলীয় নেতা হচ্ছেন এমন প্রশ্ন এখন সবার ভীতরে ঘুরপাক খাচ্ছে।

এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করেছে আ’লীগ। তাদের পরেই দ্বিতীয় স্থানে আছে জাতীয় পার্টি।

এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন ২০ জন, প্রতিদ্বন্দিতা করে জিতেছেন ১৩ জন। নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী মোট ৩৩টি আসনে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। কিন্তু এখানেই সবাইকে গোলক ধাঁধাঁর মাঝে রেখেছেন জাপা’র দায়িত্বশীল নেতারা।

এদিকে জাপা থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্বন্ধে কোন প্রতিক্রিয়া সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। তারা বিরোধী দলে যাবে না সরকারি দলে থাকবে এ নিয়ে দোটানায় পড়েছে দলটি। দলটির নির্বাচন বর্জনকারীদের মধ্যে নয় বরং নির্বাচিতদের মধ্যে শুরু হয়েছে এ বিতর্ক। সরকারের অংশ হিসেবেই থাকতে চায় দলটি থেকে নির্বাচিতদের একটি পক্ষ। অন্য অংশ বিরোধী দলে থাকার পক্ষে।

নির্বাচিতদের একটি পক্ষ চায় সরকারের অংশ হিসাবে থাকতে কারণ, তারা মন্ত্রীত্ব পাবে বলে। এ অংশে রয়েছেন মহাসচিব ও নির্বাচনকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রতিমন্ত্রী সালমা ইসলাম ও মুজিবল হক চুন্নুসহ আরো কিছু নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

এ অংশটি নির্বাচনকালীন সরকারের পাওয়া মন্ত্রীত্ব ছাড়তে রাজি নয়। তাই সরকারের অংশ হয়েই থাকতে চায় তারা। এতে তাদের অনুসারী আরো কিছু সংসদ সদস্য মন্ত্রীত্ব পাবেন বলেও আশাবাদী তারা।

এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘আমরা সরকারে আছি, সরকারেই থাকবো। তাছাড়া মন্ত্রীসভা থেকেও আমরা কেউ পদত্যাগ করিনি।’

অন্যদিকে নির্বাচিতদের আরেকটি অংশ চাচ্ছে বিরোধী দলে যেতে। এদের মধ্যে রয়েছে প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবু হোসেন বাবলাসহ বেশ কিছু সংসদ সদস্য। এছাড়া রওশন এরশাদ নিজেও চাচ্ছেন বিরোধী দলীয় নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে।

এ বিষয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘যেহেতু আওয়ামী লীগের পরেই এখন আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, তাই নিয়মানুযায়ী আমরাই বিরোধী দল।’

এদিকে, বিরোধী দলীয় নেতা কে হবেন? দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নাকি রওশন এরশাদ এ নিয়েও দলের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। এরশাদ কতদিন আটক থাকবেন। আর তাকে আটক অবস্থায় রেখে রওশনই বা কীভাবে বিরোধী দলীয় নেতা হবেন এ নিয়েও প্রশ্ন তুলছে অনেকে। এরশাদও এখন বিজয়ী সংসদ সদস্য। উল্লেখ্য, রওশন এরশাদ বিরোধী দলীয় নেতা হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন।