এরশাদআহসান আমীন, ফয়েজ মাহমুদ ঢাকা: দশম জাতীয় নির্বাচনের চার দিনের মাথায় শপথ গ্রহন করছেন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সকালে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ এ শপথ গ্রহনে অংশ নিচ্ছেন কি নিচ্ছেন না তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই ।

এছাড়া এ নতুন সরকারে মন্ত্রী থাকা না থাকা নিয়ে রওশন এরশাদের সঙ্গে মতের অমিল দেখা দিয়েছে জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী তিন প্রেসিডিয়াম সদস্যের। ফলে এখন জাপাতে ঘরের শত্রু বিভীষণ হওয়ায় দাঁড়িয়েছে। এরশাদ এখন কি করবেন তা নিয়ে চলছে দলের মধ্যে নানা আলোচনা।

অন্যদিকে জাপার তিন প্রভাবশালী সদন্য মন্ত্রীত্ব নিয়ে বেঁকে বসেছেন। এরা হলেন নির্বাচনকালীন সরকারের পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু ও সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ।

বুধবার বিকালে জাতীয় সংসদ ভবনের জাপার সংসদীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় নব নির্বাচিত এমপিদের বৈঠকে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বৈঠক সূত্র।

বিরোধী দলে গিয়ে হোক আর সরকারে থেকে হোক যেকোনো মূল্যে মন্ত্রীত্ব চায় জাপার এই তিন শীর্ষ নেতা। কিন্তু তাতে সায় ছিলো না রওশন এরশাদের। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন, বৃহস্পতিবার এরশাদ শপথ নেবেন।

কিন্তু জাপার একাধিক নেতা আজকের বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, এরশাদ বৃহস্পতিবার শপথ নিচ্ছেন না। তিনি এখনও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন।
জাপা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে এরশাদের ছোটভাই ও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদেরের উত্তরার বাসভবনে বৈঠক করেন এরশাদপন্থী নেতারা।

বৈঠকে তাড়াহুড়া না করে ধীরে ধীরে সারাদেশের জেলা ও উপজেলার নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলকে সংগঠিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের আজকের বাংলাদেশকে বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান তার বড় ভাই এইচ এম এরশাদকে চাপে রাখা হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে তাকে নানা ধরনের চাপ দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার (এরশাদের) বিরুদ্ধে চলমান পুরনো মামলার বিষয়ও উত্থাপন করা হচ্ছে। কখনো পারিবারিক অথবা কখনও অর্থনৈতিক চাপও দেওয়া হচ্ছে। আমার জানা মতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। আর সে কারণেই তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন না।

জাপার এনজিও বিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি শামীম আহমেদ রিজভী বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত, এরশাদ স্যার কালকে (বৃহস্পবিার) শপথ নিচ্ছেন না। যারা এ সব করছেন তারা কেউ জাপায় থাকতে পারবেন না। এরশাদ স্যার সবাইকে বহিষ্কার করবেন।’

বৈঠকে উপস্থিত জাপার এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘কয়েকদিন পরেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। এরশাদ সাহেব শপথ নেবেন না।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘এরশাদ সাহেব অবশ্যই বেঈমানদের বহিষ্কার করবেন। তা না হলে তো দল থাকবে না।’