স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা:ডি-ডব্লিউ বহুল বিতর্কিত দশম জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ আজ রোববার। বিরোধী জোটের নির্বাচন বর্জনে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়া এই সংসদের বৈধতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। নবম সংসদ বহাল থাকতেই দশম সংসদের মন্ত্রিসভার শপথ নিয়েও দেশজুড়ে চলছে নানা বিতর্ক। সেই বিতর্কের কাটাঘায়ে নুনের ছিটা দিলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ভবিষ্যদ্বাণী।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের গণমাধ্যমগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সরকার শুরুতেই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়তে পারে। মার্কিন সিনেটের প্রস্তাবে সরাসরি দৃশ্যমান সংলাপের কথা বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, আগামী বাজেটের আগেই সরকারকে বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের সঙ্গে একটি সমঝোতায় আসতে হবে।

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর এবং সিনেটের ফরেন রিলেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট মেনেনডজ। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলছে এবং তা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে আরো দুর্বল করে দেবে।

অন্যদিকে ব্রিটেনের একটি প্রভাবশালী পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ আংশিক ব্রিটিশ অর্থনৈতিক সহায়তা হারাতে পারে। জাতীয় সংসদের কার্যকারিতা এবং স্বচ্ছতার উন্নয়নে ব্রিটেন দু’টি প্রকল্পে বছরে ৫ কোটি পাউন্ডের বেশি অর্থ সহায়তা দেয়। এবার এই সহায়তা কমানো হবে। আর অন্যান্য ক্ষেত্রেও আর্থিক সহায়তা কমানো হবে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনকে যুক্তরাজ্য ভালভাবে নেয়নি। অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, মার্কিন সিনেট কমিটির প্রস্তাব পাস এবং চিঠি পাঠানো গুরুত্ব বহন করে। তারা বাংলাদেশের নির্বাচনকে গ্রহণ করেনি। তাই তারা আরেকটি নির্বাচন চায়, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। নতুন সরকার সংলাপের মাধ্যমে সেটা কত দ্রুত করতে পারে তা তারা দেখবেন। তিনি মনে করেন, আগামী বাজেটের আগেই তা না হলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সরকারের ওপর।

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাবে বলে মনে হয় না। আর তা হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নও জিএসপি সুবিধা বাতিল করতে পারে।

ড. ইমতিয়াজ বলেন, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাজেটের আগেই তাদের প্রতিক্রিয়া দেখাবে যা নতুন সরকারকে বিরাট চাপে ফেলবে।