রুহুল আমীন,ঢাকা: হাfifa_balon_dor_2013_picতে নিয়েই চুমো আকবেন স্বপ্নের শিরোপায়। তবে ত্রয়ীদের কে সেই সৌভাগ্যবান? লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো নাকি ফ্রাংক রিবেরি হচ্ছেন লাকি থারটিন। সুইজারল্যান্ডের জুরিখে সোমবারই আনুষ্টানিক ঘোষণা হবে তার।

গত বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফিফা ব্যালন ডি’অর ২০১২-এর বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর থেকেই শুরু হয় ২০১৩ সালের বিজয়ী নিয়ে নতুন ভাবনা। শুরু থেকেই শেষ কিংবা বছরের মাঝামাঝি সময়ে। পুরো বছর জুড়েই ফিফা ব্যালন ডি’র নিয়ে ছিল সরগরম।

কেউ বলছেন লিওনেল মেসির নাম, কারো ভোট ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বক্সে। কেউ কেউ আবার সবার উপরে রেখেছেন ফ্রাংক রিবেরিকে। স্প্যানিশ দুই ক্লাবের দুই জায়ান্ট বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লিওনেল মেসি;

আর তাদেরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ছাপিয়ে নাকি প্রথমবারের মতো মঞ্চে উঠবেন বায়ার্ন মিউনিখের ফ্রাংক রিবেরি! বছর জুড়েই ফুটবল প্রেমীদের মনে দুলতে থাকা সব প্রশ্নেরই সমাধান ঘটবে সোমবার।

একজন রুপকথার নায়ক লিওনেল মেসি। ২০০৯ সালে শুরু। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আর জাভি ইনিয়েস্তাকে টপকিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বসেরা ফুটবলারের খেতাব জিতেন তিনি। এরপর শুধু নিজেকেই ছাড়িয়ে যাওয়ার ইতিহাস। একের পর এক বিষ্ময়কর কীর্তি গড়ে ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কারটাকে যেন নিজেরই বানিয়ে ফেলেন বার্সেলোনার এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার।

গত বছর তো ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকেই। একমাত্র ফুটবলার হিসেবে টানা চারবার ফিফা ব্যালন ডি’অর জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েন তিনি। তারপরও থেমে নেই মেসির তেলেসমাতি। ২০১৩ সালেও খেলেছেন দুর্দান্ত। গত বছর সব ধরণের প্রতিযোগীতামূলক ৪৬ ম্যাচ খেলে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছেন ৪৫বার।

বার্সেলোনাকে উপহার দিয়েছেন স্প্যানিশ লা লীগার শিরোপা। সেইসঙ্গে আর্জেন্টিনাকে দিয়েছেন ২০১৪ বিশ্বকাপের টিকিট্। কিন্তু বছরের শেষ প্রান্তে এসেই বাধ সাধে চোট। যে কারণে দুই মাস ছিটকে পড়েন মাঠ থেকে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে মোটেও ভুল করেননি তাদেরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি রিয়াল মাদ্রিদের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেন সিআর সেভেন। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার জিতেন রোনাল্ডো। এরপরই ছায়া হয়ে যান মেসির উজ্জ্বল আলোয়। ২০০৯, ১১, ১২ তিনবারই সেরা তিনের তালিকায় থেকে দ্বিতীয় হন তিনি। এবার যেন সেই শিরোপা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়েই খেলতে শুরু করেন বিশ্বফুটবলের সেরা এই স্ট্রাইকার।

২০১৩ সালে ৬০ ম্যাচ খেলে ৬৯ গোল করেন তিনি। রিয়ালের হয়ে ৫১ ম্যাচেই ৫৯ গোল করেন তিনি। আর বাকী ৯ ম্যাচে ১০ গোল পর্তুগালের জার্সিতে। তার অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সের সৌজন্যেই ব্রাজিল বিশ্বকাপের টিকিট পায় পর্তুগাল। তাই বলা হচ্ছে ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। যে কারণে ফিফা ব্যালন ডি’অরের সেরা দাবিদার এই পর্তুগীজ সুপারস্টার।

লিওনেল মেসি আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর চেয়েও কম যাননি বায়ার্ন মিউনিখের ফরাসি তারকা ফ্রাংক রিবেরি। ক্যারিয়ারের গোধুলিবেলায় তাকেই যেন ইতিহাস টানছে নতুন এক ইতিহাসের সাক্ষী বানাতে। ২০১৩ সালে পাঁচটি শিরোপা জিতেছে বায়ার্ন মিউনিখ।

চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, বুন্দেসলীগা, জার্মান কাপ, ইউরোপিয়ান সুপার কাপ এবং সবেশেষে গত ডিসেম্বরে আরাধ্য ক্লাব বিশ্বকাপের ট্রফিটাও নিজেদের শোকেসে তুলে জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন। সবগুলো টুর্নামেন্টেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ফ্রাংক রিবেরি। আর এজন্যই ক্লাব ইতিহাসের প্রথম কোন খেলোয়াড় হিসেবে ফিফা ব্যালন ডি’অরের জেতার হাতছানি ফ্রাংক রিবেরির সামনে।

লিওনেল মেসি আবার নাকী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পুণরুদ্ধার। এই হিসেবকেও পেছনে ফেলে দিতে পারে ফ্রাংক রিবেরির সাফল্যের পরিসংখ্যান। তবে কে হচ্ছেন লাকী থারটিন? কে পড়বেন সেরার মুকুট? ফুটবলপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন শুধুই সেটা দেখার।