scan0003দেশের যেকোনো বীমা কোম্পানির তুলনায় গ্রাহকের বীমা দাবী পরিশোধে রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অধিক আন্তরিক। তবে দাবী আদায়ে গ্রাহকদেরও নিয়মতান্ত্রিকভাবে আবেদন করতে হবে। যেখানে গ্রাহকদের অনেকেই নিয়ম না মেনে আবেদন করায় জটিলতা তৈরী হয়। এর বিপরীতে দাবী পরিশোধে কালক্ষেপন বা প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে গ্রাহকের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে দ্বিতীয় প্রজন্মের এ জীবন বীমা কোম্পানি। এমনটাই দাবী করেছেন কোম্পানি সচিবের দায়িত্বে নিয়োজিত মোঃ আমিরুল ইসলাম (মুকিত)। কোম্পানির কর্মপরিধি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে কোনো জীবন বীমা কোম্পানির তুলনায় রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স গ্রাহকদের বেশি বোনাস দিয়ে থাকে। যে কারণে কোম্পানিটি প্রথম থেকেই গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে’। আজ রোববার রাজধানীর কাকরাইলে নিজ কার্যালয়ে একান্ত সাক্ষাতকারে দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান’কে এসব কথা বলেন তিনি।

দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ: সরকারী-বেসরকারী মিলিয়ে দেশে ৩১টি জীবন বীমা কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা করছে। রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স আলাদাভাবে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে কি কি সুবিধা দিচ্ছে?

আমিরুল ইসলাম: পলিসি গ্রহিতাদের প্রতি রুপালী লাইফ বরাবরই অধিক আন্তরিক। অন্য সব কোম্পানিকে পাশ কাটিয়ে আমরা খুব দ্রুত পলিসি হোল্ডারদের সার্ভিস দিয়ে থাকি। যথাসময়ে মৃত্যু দাবী পূরণ, মেয়াদোত্তীর্ণ দাবী ও সার্ভাইভার বেনিফিটসহ সকল দাবী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হয়। বাংলাদেশের কোনো জীবন বীমা কোম্পানি আমাদের মতো এত দ্রুত সার্ভিস দিতে পারে না। এর প্রতিদান হিসেবে আমাদের গ্রাহকরাও কৃতজ্ঞতাসরূপ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন।

দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ: এখন পর্যন্ত কোম্পানির কতগুলো দাবী অপরিশোধিত রয়েছে?

আমিরুল ইসলাম: বর্তমানে আমাদের কোনো দাবী অপরিশোধিত অবস্থায় নেই। সব দাবীই পরিশোধ করা হয়েছে। ২০০০ সালে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ১২০ কোটি ৫৪ লাখ ৪ হাজার টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ দাবী পরিশোধ করেছে। তাই আমাদের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কোন অভিযোগ নেই।

দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ: কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে বীমা দাবী পরিশোধ করা নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ রয়েছে? পলিসিহোল্ডারদের এমন অভিযোগ কতটা যৌক্তিক?

আমিরুল ইসলাম: বীমা সাধারণত গণমানুষরা করে থাকে। তারা কাগজ-পত্র ঠিকভাবে বোঝেন না। একটি মৃত্যু দাবী পরিশোধ করতে হলে পুলিশি সার্টিফিকেট, ডেথ সার্ফিকেটসহ বিভিন্ন কাগজ পত্র লাগে। এগুলো ছাড়া কোন গ্রাহক মৃত্যু দাবী পাবে না। অনেকেই আছেন না বুঝে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে মৃত্যু দাবী আদায় করার চেষ্টা করেন। কোম্পানি কর্তৃপক্ষও এসব নিয়মের বাইরে গিয়ে দাবী পরিশোধ করতে পারেন না। তাই শুধু বীমা করলেই হবে না। বীমা পরিশোধের নিয়মকানুন গ্রাহকদের বুঝতে হবে নিজেদের স্বার্থেই। নিয়ম অনুযায়ী জীবন বীমা কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের দাবী পরিশোধ করে থাকে। তবে কোনো কোনো কোম্পানির একটু সময় বেশি লাগে আবার কারও কম সময়ও লাগে।

দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ: বীমা কোম্পানিগুলোর পরিচালনা ব্যয় নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পুরোনো। কোম্পানিগুলো সম্প্রতি ব্যয়ের অঙ্ক বাড়ানোর দাবী করেছেন। আইডিআরএ কি তাহলে ব্যয়ের অঙ্ক নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছিল?

আমিরুল ইসলাম: আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে জীবন যাত্রার ব্যয় অনেক বেড়েছে। গ্যাস বিল, পানি বিল, বেতন-ভাতাসহ সব কিছুর ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ১৯৫৮ সালের ব্যবস্থাপনা ব্যয় নীতিমালা কোনভাবেই বর্তমানে প্রযোজ্য নয়। কোম্পানিগুলোও তাই ব্যয়ের সীমার মধ্যে থাকতে পারছে না। তাই এই নীতিমাল সংশোধনের যে দাবী উঠেছে তা যৌক্তিক। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এ দাবীর সাথে একমত পোষণ করছি। রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স শুরু থেকেই আইডিআরএ’র বেঁধে দেয়া ব্যবস্থাপনা ব্যয় অনুসরণ করেছে। শুধু মাত্র ২ বছর অনুসরণ করতে পারেনি। আর কেন পারেনি সেটারও জবাব আমরা আইডিআরএ কে দিয়েছি। আইন সম্পর্কে বলব, যে সময় আইডিআরএ পরিচালনা ব্যয় নির্ধারন করেছিল, সে সময়ের হিসাবে আইডিআরএ’র সিদ্ধান্ত যুতসই ছিল। তবে সময়ের প্রয়োজনে এখানে এখন সংস্কার প্রয়োজন।

দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ: কমিশন বাণিজ্য নিয়ে এজেন্টদের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অভিযোগ রয়েছে। সেটা কি পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে?

আমিরুল ইসলাম: জেনারেল ইন্স্যুরেন্সগুলোতে কমিশন বাণিজ্য থাকতে পারে। তবে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে কমিশন বাণিজ্য নেই। আইডিআরএ কমিশন নিয়ে যে নীতিমাল তৈরি করেছে সেটা অনুসরণ করে থাকে জীবন বীমা কোম্পানিগুলো।

দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ: কোম্পানির গ্রাহক প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে কিছু বলুন।

আমিরুল ইসলাম: নিয়মমাফিক ও অতি দ্রুত দাবী পরিশোধ করায় প্রতিনিয়তই রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের ১৪ লাখ গ্রাহক রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির লাইফ ফান্ড রয়েছে ৪শ’ কোটি টাকা। দেশের প্রথম সারির জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রুপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের নাম রয়েছে। আমরা আশাবাদি আগামীতে গ্রাহক সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।