indiaদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে রেখে এবং বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনী সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন কূটনীতিকরা। আজ যখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসেছে, তার আগেই আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সমঝোতার এই ফর্মুলা জানিয়ে দেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে সকল দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে তিনটি প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকরা।

দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য আজ থেকে শুরু হওয়া সংলাপের প্রেক্ষাপটে নিজেদের অবস্থান নিয়ে গত দুইদিনে আলোচনা করে। এই আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সংলাপের উদ্যোগ সরকার নিয়েছে তাকে স্বাগত জানানো হয়। একই সঙ্গে এই সংলাপের মাধ্যমে যেন একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হয় সেই আশাবাদও ব্যক্ত করা হয়।

বৈঠকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা যেন ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে একটা সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছতে পারেন, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়। সূত্রমতে, তিন দেশের কূটনীতিকরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা, যুক্তফ্রন্টের ৫ দফা এবং সরকারের অবস্থান বিশ্লেষণ করে একটি আপোষ ফর্মুলা উপস্থাপন করা হয়েছে। আজ দুপুরেই এই ফর্মুলার মূল বিষয়গুলো আওয়ামী লীগ এবং ঐক্যফ্রন্টকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনটি দেশের যৌথ সমঝোতা ফর্মুলায় যা বলা হয়েছে তা হলো:

১. যেহেতু সংসদের অধিবেশন আর বসছে না তাই বর্তমান সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।

২. বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সংসদের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলো থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী করা যেতে পারে।

৩. যেহেতু সংসদ এখন অকার্যকর। তাই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচন করা যেতে পারে।

৪. নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন হলে, সকল দল ঐক্য মতের ভিত্তিতে ক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৫. নির্বাচনকালীন সরকার কেবল রুটিন দায়িত্ব পালন করবে।

আজ দুপুরে ড. কামাল হোসেনকে তিন দেশের কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে এই বার্তা জানিয়ে দেওয়া হয়। একই বার্তা দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টাকে। উভয়কেই এর ভিত্তিতে সংলাপকে অর্থবহ করে তোলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে, উভয় দলই বলেছে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতেই তাঁরা একটি সমাধানে পৌছতে পারবেন।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ‘বিএনপি ২০১৪’র নির্বাচনের আগে সংলাপে অংশ নেয়নি, এবার নিয়েছে। সংলাপে এসেছে, নির্বাচনেও আসবে।’ তবে বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। আর বেগম খালেদা জিয়ার মু্ক্তির দাবি মেনে না নিলে বিএনপির নির্বাচনে যাবার প্রশ্নই ওঠে না।’