মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি ইসলামী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড প্রহসনের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করেছে। এমনটাই অভিযোগ ওঠে কোম্পানির বিরুদ্ধে। গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০.৩০ টায় সভাটি রাজধানীর ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) হওয়ার কথা থাকলেও তা পৌণে ১১টার দিকে শুরু হয়।

প্রথানুযায়ী এজিএম বা বার্ষিক সাধারণ সভা যে প্রক্রিয়ায় হবার কথা তার ধারে কাছেও নেই। কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: ইসমাইল নওয়াব বক্তব্য কিছুটা না বলে তার বক্তব্য কয়েক মিনিটের ব্যবধানে শেষ করেন।

এজিএমের এজেন্ডা থাকলেও ঘোষণার আগেই তা পাশ পাশ বলে ওঠে বিনিয়োগকারীদের একাংশ। ইসলামী ইন্সুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: ইসমাইল নওয়াব বক্তব্য শুরু করে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে শেষ করেন।

তিনি বলেন, শেয়ারহোল্ডারদের আস্থা ও ভালোবাসায় ইসলামী ইন্সুরেন্সের ব্যবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভালো ডিভিডেন্ট দিচ্ছেন ও সামনে আরো দেবেন। মঞ্চে উপস্থিত প্রখ্যাত আলেম ও অত্র কোম্পানির শরীয়াহ্ কাউন্সিল চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরীসহ অন্যান্য পরিচালক এবং মেহমানরা ১১টার আগেই অসহায়ের মতো মঞ্চ ত্যাগ করেন তিনি। ইসলামী ইন্স্যুরেন্স ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ অর্থবছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ৫ শতাংশ স্টকসহ মোট ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে।

এজিএম অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, এজেন্ডা ঘোষনার আগেই তা পাশ পাশ বলে ওঠে বিনিয়োগকারীরা। আর তখনই অনেক বিনিয়োগকারী উত্তেজিত হয়ে পরে। এ দৃশ্য দেখার পর অনেকেই কানাঘুষা করছে, কোম্পানি এটা কি করল। শেষ পর্যন্ত এজিএম পার্টি ভাড়া করল। এমন এজিএমের কি আদৌ কোন প্রয়োজন ছিল? এছাড়া অনেক বিনিয়োগকারীদের বলতে শোনা গেছে, পাশ না কইলে (বললে) টাকা পাবি না। খালি পাশ পাশ করবি।

বিনিয়োগকারী শিহাব বলেন, আমি এসেছিলাম এজিএম’টা ভালভাবে অনুষ্ঠিত হবে ভেবে। এসে দেখি কোম্পানি কতগুলো এজিএম পার্টি (দালাল) নিয়োগ করেছে এজিএম পাশ করার জন্য। আর অন্যান্য বিনিয়োগকারীরা যাতে বার্ষিক প্রতিবেদন না পায় তার জন্য প্রতিবেদন লুকিয়ে রাখে ওই দালালরা।

দেখা গেছে, কয়েকজন শেয়ারহোল্ডার জনপ্রতি ৩শ’ টাকা হারে পেলেও অন্যরা পাননি । এ বিষয়ে কোম্পানি সচিব মজিবুর রহমান কিছুই জানেন না বলে জানান।’ ‘মারহাবা, মারহাবা। মার তেল, মার। পঠিত, পঠিত। মশা মারছেন চেয়ারম্যান (মেয়র খোকন) । মিটিং মেয়রের সম্মানে শুরু করেই শেষ। তার জন্য সবই হতে পারে। আপনাকে (এ প্রতিবেদক) কিন্তু তার কাছে নিয়ে যাবো। গেলেই বুঝতে পারবেন। জানেন মেয়র সাহেব আমাদের প্রিয় নেতা । যিনি এ কোম্পানিকে এত বড় করেছেন। তার বিরুদ্ধে কিছু লিখবেন না।

তা’ হলে বুঝতে পারবেন তিনি কে? হানিফ ভাই (ঢাকার সাবেক সফল মেয়র ও মোহাম্মদ হানিফ আমাকে খুবই স্নেহ করতেন। আপনারা যে ভাষায় কথা বলছেন তিনি তেমনটা নন। আমি তো কিছুটা জানি মেয়র খোকন একজন মাটির মানুষ।’ মিটিং শুরু করেই শেষ কেন ? এ প্রশ্নের জবাবে ইসলামী ইন্সুরেন্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল মতিনের সোজা-সাপটা বলেন, আমার বলার কিছু থাকে না।’

‘এমডি সাহেব সঠিক বলেন নি। অবশ্যই মিটিং-এ সব বিষয়ে আলোচনা হবে। পরামর্শ আসবে। কোম্পানির উন্নয়নে সবাই মূল্যবান পরামর্শ দেবেন। এটাই কিন্তু বিধি। তিনি কোম্পানির বিধি লংঘন করেছেন। এতে কোন সন্দেহ নেই। এমন বক্তব্য বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীকারী ঐক্য পরিষদ সাধারণ সম্পাদক ও শেয়ারহোল্ডার কাজী আবদুর রাজ্জাকের।’ আক্ষেপ করে শিরিন আখতার নামে একজন শেয়ারহোল্ডারের বলেন, কোম্পানি চেয়ারম্যান মেয়র সাঈদ খোকন কোন মিটিং এ আসেন না । তার প্রশ্ন এটা কেমন কথা।’