দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে শিক্ষা ভবনে গড়ে উঠা বিএনপি-জামায়াত সিন্ডিকেটের মুলহোতা ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনকে ওএসডি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (কলেজ-২) ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২২ আগস্ট থেকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হবেন। অন্যথায় একই দিন অপরাহ্নে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নূরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে শিক্ষা ভবনে কৌশলে জামায়াত-বিএনপি সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। আর ওই সিন্ডিকেটটি পরিচালনা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। তবে এতদিন সবার ধরাছোয়ার বাহিরে ছিলেন।

কিন্তু গত ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণে হলুন পাঞ্জাবি পড়েন তিনি। পরে ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এ সময় অনেকেই মন্তব্য করেন ‘শোক দিবস পালন না করে মাউশি’র ওই কর্মকর্তা বসন্ত উৎসব পালন করছেন।’

শুধু তাই নয়, গত ২১ আগস্ট শিক্ষা ভবন সংলগ্ন সিরডাপ মিলনায়তনে একটি গোল টেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় ১৫ আগস্টে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনাকে ‘নিছক দুর্ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে এমন বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ উঠার পর তাকে ওএসডি করা হয়। একই সঙ্গে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজও করা হয়েছে। এদিকে, আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর নূরুল ইসলাম নাহিদকে বাদ দিয়ে ড. দীপু মনিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, জাহাঙ্গীর হোসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।

শিক্ষা ভবনে আওয়ামী লীগ পন্থীদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে সু-কৌশলে তাদের নিষ্ক্রিয় করে রাখেন এই কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে বিভিন্ন সময় ওই সিন্ডিকেট সদস্যদের দিয়ে সরকার বিরোধী কাজ, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম করেন তিনি। তবে এসব কাজ সু-কৌশলে করার কারণে সিন্ডিকেটের সদস্যরা অতীতের মতো এখনো অধরা রয়েছেন। শিক্ষা ভবনের একাধিক সূত্র বিবার্তাকে এমনটা জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আমলে নিয়োগ প্রাপ্ত কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি আমরা দেখছি। আমাদের এখানে যদি ক্ষতিকর কেউ থাকে তা হলে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।