গোলাম মাহমুদ, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ইবনে সিনার পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের সমাপ্ত বছরে ন্যায্য ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা লভ্যাংশ হিসেবে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নগদ তিন টাকা করে পাবেন।

ইবনে সিনার ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ব্যবসায় অর্জিত মুনাফার ২৮ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে লভ্যাংশ আকারে বিতরন করা হবে। বাকি ৭২ শতাংশ কোম্পানির রিজার্ভে স্থানান্তর করা হবে। তবে আগামি অর্থবছর থেকে ৭০ শতাংশের বেশি রিজার্ভে রাখার ক্ষেত্রে কোম্পানিটিকে অতিরিক্ত কর গুণতে হবে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের অনুমোদিত বাজেট অনুযায়ি, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি কোনো অর্থবছরে কর পরবর্তী নিট লাভের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ রিজার্ভে স্থানান্তর করতে পারবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি এরূপ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রতিবছর রিজার্ভে সরবরাহকৃত অংশের উপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে। যা আগামি অর্থবছর থেকে কার্যকর হবে।

ইবনে সিনার ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ১০.৭৬ টাকা হিসেবে মোট ৩৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে। এরমধ্য থেকে ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ আকারে শেয়ারপ্রতি ৩ টাকা হিসাবে শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে ৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বিতরন করা হবে। অর্থাৎ মুনাফার ২৮ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরন করা হবে।

এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ১৫.৯২ টাকা মুনাফার বিপরীতে ৪০ শতাংশ হারে ৪ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। যা ছিল ওই বছরের মুনাফার ২৫ শতাংশ। এদিকে কোম্পানিটির আগের বছরের তুলনায় মুনাফা ও লভ্যাংশে ধস নেমেছে। আগের বছরে শেয়ারপ্রতি ১৫.৯২ টাকা হিসাবে নিট মুনাফা হয়েছিল ৪৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নেমে এসেছে ৩৩ কোটি ৬২ লাখ টাকায়। এ হিসাবে নিট মুনাফা কমেছে ১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা বা ৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে আগের বছরে কোম্পানিটির পর্ষদ ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছিল। তবে এবার শুধুমাত্র ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ৩১ কোটি ২৪ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ইবনে সিনায় ৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকার রিজার্ভ রয়েছে।

এদিকে তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ইবনে সিনা চার বছরের মধ্যে এবার সব থেকে কম লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০১৮ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে ৩০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল। তার আগের বছর ২০১৭ সালে ২৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং ২০১৬ সালে সাড়ে ৩৭ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয় ওষুধ খাতের কোম্পানিটি।

৩১ কোটি ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৮টি। এর মধ্যে ৪৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্ত ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৩৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ১৯ দশমিক ৭১ শতাংশ শেয়ার।