দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড পাওয়ার আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) মানেনি বলে নিরীক্ষক অভিমত দিয়েছে। ফলে ২০১৯ সালের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ৭৯ কোটি টাকা বেশি দেখানো হয়েছে। তবে এতে কোম্পানির আয়ে কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না বলেও জানান নিরীক্ষক।
তথ্যমতে, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড ৩ পরিপালন করে ইউনাইটেড এনার্জি এবং ইউনাইটেড আশুগঞ্জ এনার্জির শেয়ার অধিগ্রহণের সময় ইউনাইটেড পাওয়ার। কিন্তু নিয়মানুযায়ী সমন্বিত হিসাব প্রস্তুত করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
ফলে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩০ জুনের হিসাবে নিট মুনাফা ৭৯ কোটি টাকা বেশি হয়েছে। আইএফআরএস-এর নোট ৪৯এ-তে বলা হয়েছে- কোনো কোম্পানি অধিগ্রহণ শুরুর দিন থেকে সঞ্চিতির হিসাব সমন্বয় করতে হবে। প্রয়োজনে অবচয় ও অন্যান্য আয়ের তথ্য দিতে হবে প্রাথমিক হিসাবে।
ইউনাইটেড পাওয়ারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, ইউনাইটেড পাওয়ার দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে কোম্পানিটির হিসাব সমন্বিত করেছে ইউনাইটেড পাওয়ার। আর এ কারণে কোম্পানির মুনাফার পরিমাণও বেড়েছে। আর এটা নিরীক্ষক মানতে নারাজ। তাই নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান তাদের অভিমত জানিয়েছেন।
তারা আরো বলেন, অধিগ্রহণের সিদ্ধান্তের দিন থেকে হিসাবটি সমন্বিত করা হয়েছে। এর ফলে মুনাফা বেড়েছে। এর সুফল পাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। তবে এজন্য কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
প্রসঙ্গত, গত বছর ইউনাইটেড পাওয়ার দুটি কোম্পানি অধিগ্রহণ করে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইউনাইটেড এনার্জির আওতায় ছিল ৯ ও ২৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। আর ইউনাইটেড আশুগঞ্জ এনার্জির আওতায় ১৯৫ মেগাওয়াটের একটি পাওয়ার প্লান্ট। দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র অধিগ্রহণের পর পরই ইউনাইটেডের আয়ে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা দেয়।
এ সম্পর্কে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা এবাদত হোসেন ভ‚ঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। এদিকে ২০১৯ সালের ৩০ জুন শেষে সমাপ্ত হিসাব বছরে ইউনাইটেড পাওয়ার শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ এবং ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে।
কোম্পানির সমাপ্ত হিসাব বছরে সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১৬ টাকা ৮ পয়সা এবং শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬২ টাকা ৮০ পয়সা। আগের বছর একই সময় এককভাবে ইপিএস ছিল ৯ টাকা ৫৯ পয়সা। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৮০০ কোটি এবং পরিশোধিত মূলধন ৪৭৯ কোটি টাকা। কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ৪৭ কোটি ৯০ লাখ ৮৭ হাজার একটি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ শেয়ার আছে।