দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: যতো বেশি মানুষ পুঁজিবাজারে সম্পৃক্ত হবে, শিল্পায়ন ততো ত্বরান্বিত হবে উল্লেখ করে বিনিয়োগকারীদের জেনে-বুঝে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে স্থানীয় সময় রোববার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে অনেকবার ধস নেমেছে। তারপর বাজার আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের সরকার পুঁজিবাজারের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। কাজেই পুঁজিবাজারে যারা সম্পৃক্ত রয়েছেন, তাদের অবশ্যই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করতে হবে। তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে কোন শেয়ারগুলো লাভজনক, আর কোনগুলো নয়। এসব বিবেচনা করেই তাদের শেয়ার কিনতে হবে।’

ব্যাংকে উচ্চ সুদের হারের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের অধিক সুদের কারণে অনেকের পক্ষে ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হয় না। ফলে তারা ঋণ খেলাপি হয়। অনেকে মনে করেন, ঋণ পরিশোধ করার প্রয়োজন নেই। অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে। কিন্তু তারা ঋণ পরিশোধ করছে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং যাতে ঋণ খেলাপি সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে সরকার বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ব্যাংকের সুদের হার এককের ঘরে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছি এবং রাষ্ট্রচালিত ব্যাংকগুলো এই নির্দেশ অনুসরণ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটি সমস্যা রয়েছে। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার সময় অনেক ব্যবসায়ী ঋণ খেলাপি হয়েছেন। কারণ তারা সেই সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন বা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা তাদের একটা সুযোগ দিয়েছিলাম যাতে তারা তাদের শিল্প কারখানা চালাতে পারেন এবং ব্যবসা বাণিজ্য বিঘ্নিত না হয়, যেখানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন।’

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আপনারা দেখেছেন গ্রামীণফোন কী করছে? তারা কর পরিশোধ করে না এবং যখন করের পরিমাণ বিপুল হয়ে দাঁড়ায়, তখন তারা বলে যে আসুন আলোচনা করি। আপনি একবার বা দুইবার তা করতে পারেন। কিন্তু বারবার তা করতে পারেন না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী চলমান ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।