দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: চলতি বছরের শুরু থেকেই পুঁজিবাজারে চলছে দরপতন। প্রতি মাসেই পুঁজিবাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগক কমছে। গত আগস্ট মাসেও তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিদেশিদের শেয়ার ধারণ কমেছে। বাজার সংশ্নিষ্টরা মনে করছেন, দরপতনের কারণে বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির চাপ এর অন্যতম প্রধান কারণ। বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগের মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগও রয়েছে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ৪৯ কোম্পানি থেকে বিদেশিদের শেয়ার ধারণ কমেছে। বিপরীতে অন্তত ১৭ কোম্পানিতে শেয়ার বেড়েছে। তালিকাভুক্ত ৩১৮ কোম্পানির মধ্যে ৩১৫টির প্রকাশিত শেয়ার ধারণের হার পর্যালোচনায় এ চিত্র পাওয়া গেছে।

আলোচ্য মাসে বিদেশিদের শেয়ার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ব্র্যাক ব্যাংক ও জেমিনি সি ফুডসে। ব্র্যাক ব্যাংকে মোট শেয়ার বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া প্রাইম ব্যাংক, পাওয়ার গ্রিড, বেক্সিমকো লিমিটেড, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং, লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্ট, একমি ল্যাবরেটরিজে বিদেশিদের শেয়ার ধারণ কিছুটা বেড়েছে।

মোট শেয়ার বিবেচনায় চার কোম্পানিতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার কমেছে। এর মধ্যে শাশা ডেনিমে মোট শেয়ার কমেছে ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ শেয়ার। অন্য কোম্পানিগুলো হলো- মালেক স্পিনিং, অ্যাপেক্স স্পিনিং, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।
অবশ্য কাগজে-কলমে বিদেশিদের শেয়ার সর্বাধিক কমেছে জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসে।

নতুন ইস্যু করা শেয়ার নেওয়ার পর এ কোম্পানিটিতে জাপানি কোম্পানি নিপরো করপোরেশনের মালিকানা ৫০ শতাংশের বেশি। আগস্টে কোম্পানিটি পর্ষদে পরিচালক নিয়োগ করায় এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার এখন উদ্যোক্তা-পরিচালক অংশে দেখানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে কোম্পানিটি থেকে বিদেশিদের শেয়ার কেনাবেচা হয়নি।

বৃদ্ধির শীর্ষে : গত জুলাইয়ের শেষে ব্র্যাক ব্যাংকে বিদেশিদের শেয়ার ছিল মোটের ৪২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগস্টজুড়ে তা শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ বেড়ে মোটের ৪২ দশমিক ৯৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

এর পরের অবস্থানে ছিল জেমিনি সি ফুডস। এই কোম্পানিতে বিদেশিদের শেয়ার ছিল মোটের শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ, যা গত আগস্টে বেড়ে শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। জুলাই শেষে প্রাইম ব্যাংকের মোট শেয়ারের ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশের মালিকানায় ছিল বিদেশিরা, যা এক মাসের ব্যবধানে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

এ ছাড়া পাওয়ার গ্রিড ও বেক্সিমকো লিমিটেডে বিদেশিদের মালিকানার অংশ শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে যথাক্রমে শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশে এবং ৮ দশমিক ২৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, আগস্টে টাকার অঙ্কে সর্বাধিক বিনিয়োগ হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকে, যার পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এর পরের অবস্থানে ছিল প্রাইম ব্যাংক, যেখানে নিট বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় চার কোটি টাকার। পাওয়ার গ্রিডে নিট বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকার। প্রায় দুই কোটি টাকা করে নিট বিনিয়োগ হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড এবং ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনে। এক থেকে দেড় কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ও লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্টে।

কমায় শীর্ষে : গত জুলাইয়ের শেষেও শাশা ডেনিমে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত মালিকানায় অংশ ছিল মোটের ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে তা নেমে ১ দশমিক ১৩ শতাংশ হয়েছে। কমার দিক থেকে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল মালেক স্পিনিং। এ কোম্পানিতে জুলাইয়ের শেষে বিদেশি মালিকানা ছিল মোটের ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আগস্টের শেষে তা ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে নেমেছে। অ্যাপেক্স স্পিনিং থেকে বিদেশিরা শেয়ারের সিংহভাগ বিক্রি করেছেন। মোটের ১ দশমিক ৪০ শতাংশ, যা এক মাসের ব্যবধানে নেমেছে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশে। রূপালী লাইফে মোটের ৪ শতাংশ থেকে কমে ৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ হচ্ছে।