দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেছেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না থাকলে বিনিয়োগকারীরা সুরক্ষিত থাকেন না। তাই বিএসইসি বাজারে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। আমাদের দেশের শেয়ারবাজার এখনো যে স্টেজে আছে তার ডেভলেপমেন্টের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে মাল্টি প্রোডাক্টের অভাব রয়েছে।

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিএসইসি ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সিডিবিএল চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। প্রথমতঃ স্থিতিশীলতার জন্য কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের Corporate Disclosure পর্যাপ্ত হতে হবে। এসব তথ্য হতে হবে নির্ভরযোগ্য। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে করপোরেট ডিসক্লোজার বিশ্লেষণ করার মত সক্ষমতা থাকতে হবে।  দ্বিতীয়তঃ বাজার স্থিতিশীলতার জন্য ইনসাইডার ট্রেডিং বন্ধে সব সময় কঠোর থাকতে হবে। বিএসইসি এ বিষয়ে কঠোর নজরদারি করছে। অন্যদিকে বাজারে কারসাজি সহজে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসইতে সর্বাধুনিক সার্ভিল্যান্স সিস্টেম বসানো হয়েছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান করপোরেট ডিসক্লোজার বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত জ্ঞান টাকার পুঁজির চেয়েও বড় পুঁজি। ইপিএস, এনএভি, পিই রেশিওসহ বিভিন্ন টার্মের অর্থ, আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ এসব ক্ষমতা থাকলে বিনিয়োগের ঝুঁকি কমে যায়। তাই বিনিয়োগ শিক্ষার প্রতি বিএসইসি অনেক গুরুত্ব দিয়ে আসছে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ইনডিভিজুয়ালি আমরা সারা পৃথিবী থেকে অনেক নজেল একুয়ার করতে পারবো।

কিন্তু একটা একাডেমি থাকার মানে হলো সবচেয়ে লেটেস্ট টেকনোলজি কি, নতুন প্রোডাক্ট কি আসছে, এখানে বিনিয়োগকারীদের জন্য কি আছে, নতুন ধরণের কারসাজি ডিফেকশন,আইডিয়েন্টিফিকেশন এবং তার বিরুদ্ধে যে অ্যাকশন নেয়া সেগুলো একাডেমির মাধ্যমে শেখা যায়। সারা পৃথিবীতে নতুন নতুন যে জ্ঞানের সৃষ্টি হয়, সেই জ্ঞানকে একসাথে করে একাডেমির মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে উপস্থাপন করা, নতুন স্কিল, ম্যানপাওয়ার মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা এবং নিজেরা গবেষণা করে এমন কিছু উদ্ভাবন করা যাতে করে মার্কেটের বিকাশ ত্বরান্বিত হয়। সেই উদ্দেশ্যেই একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে শেয়ারবাজারে যেসব প্রোবলেম আইডেন্টিফাই করেছে এবং সেই আইডেন্টিফাইড প্রোবলেমকে কিভাবে এড্রেস করেছে তার এক্সপ্রিয়েন্সের আলোকে নিজেদের শিক্ষিত করতে হবে। একইসাথে সকলে সম্মিলিতভাবে শেয়ারবাজাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হোসেন, ডিএসই ব্রোকারস’ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাকিল রিজভী, মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী, আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান ও রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. হাসান ইমাম।

এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী, অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা, খন্দকার কামালুজ্জামান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাসেম, ডিএসইর সিএফও আব্দুল মতিন পাটোয়ারীসহ বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিবৃন্দ।