দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ৯ হাজার কোটি টাকার ওপরে। সেই সঙ্গে সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়ছে। কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৯ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা।

বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ৩৬টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে, দাম কমেছে ৩০৫টির। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার ফলে ডিএসইর সব সূচকের পতন হয়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১২৭ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৩০ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৬২ শতাংশ।

অপর দুটি সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ৫০ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১৩ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৭ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ২৫ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ১২ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩১৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৯১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৭২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১ হাজার ৯৫৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৬৮২ কোটি টাকা।গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এ ছাড়া মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ ছিল ‘বি’ গ্রুপের দখলে। মোট লেনদেনে ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর ‘এন’ গ্রুপের অবদান ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল টিউবসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৯৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

৩৪ কোটি ৯২ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওয়াটা কেমিক্যাল। লেনদেনে এরপর রয়েছে সামিট পাওয়ার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, মুন্নু জুট স্টাফলার্স, অ্যাটলাস বাংলাদেশ, বিকন ফার্মাসিউটিক্যাল, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন এবং স্টাইল ক্রাফট।