আব্দুল মাতলুব আহমাদ, নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান তিনি। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতির দায়িত্বে আছেন মাতলুব আহমাদ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত ‘কব কলেজ’ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করে তিনি ব্যবসায় নামেন। আজ দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপের কর্ণধার তিনি। দৈনিক একটি পত্রিকার সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মাতলুব আহমাদ দেশের সমসাময়িক অর্থনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন।
দেশ প্রতিক্ষণ: আপনার পারিবারিক পটভ‚মি সম্পর্কে জানতে চাই?

মাতলুব আহমাদ : আমার পিতা মরহুম আবু আহমাদ আব্দুল্লাহ পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। আমার মা মরহুম বেগম জাহানারা আব্দুল্লাহ পাবনার দুলাইয়ের সর্বশেষ জমিদার হোসেন জান চৌধুরীর কন্যা। গোটা উত্তরবঙ্গে প্রজাহিতৈষী ও জনকল্যাণকামী জমিদার হিসেবে হোসেন জান চৌধুরী জনপ্রিয় ছিলেন। পিতামহ খানবাহাদুর তাফাল আহমাদ ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলমান নির্বাহী প্রকৌশলী।

তার ছোটভাই একজন বিখ্যাত শিক্ষাবিদ, ব্রিটিশ সরকার তাকেও ‘খানবাহাদুর’ উপাধিতে ভ‚ষিত করে। খানবাহাদুর তাফাল আহমাদের নাতি প্রফেসর ড. ইকবাল আহমাদ ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তার জামাতা ডা. আহমাদ ছিলেন তৎকালীন ভারতের একজন প্রখ্যাত চিকিৎসাবিদ।

ব্রিটিশ শাসন থেক আজাদি লাভের পর তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন এবং ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সুপারিন্টেন্ডেন্ট নিযুক্ত হন। পুরানা পল্টন এলাকায় তিনি দুস্থ ও অসহায় চক্ষুরোগীদের জন্য একটি বিনামূল্যের ক্লিনিক পরিচালনা করতেন। বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ চক্ষুশিবির পরিচালনায় তিনি অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেন এবং ঢাকার ফার্মগেট ‘ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠায় তিনি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখেন।

দেশ প্রতিক্ষণ: আপনার জন্ম, শৈশব ও শিক্ষাজীবন সম্পর্কে কিছু বলুন?
মাতলুব আহমাদ : আমার জন্ম ১৯৫২ সালের ১৫ মার্চ ঢাকার ফকিরাপুলে। সমাদৃত ও আলোকিত পারিবারিক পরিবেশে শৈশব কাটে আমার। পিতার কর্মস্থলের কারেণ মদনমোহন বসাক লেন, আরমানিটোলা এবং মোহাম্মদপুর এলাকায় শিশুকাল কাটে। অত্যন্ত নিবিড় ও একনিষ্ঠ শিক্ষা পরিবেশের মধ্যে আমি বেড়ে উঠি।

১৯৬৯ সালে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘সেন্ট গ্রেগরীস হাইস্কুল’ থেকে সাফল্যের সঙ্গে এসএসসি পাস করার পর ১৯৭১ সালে ঐতিহ্যবাহী ‘নটর ডেম কলেজ’ থেক এইচএসসি পাস করে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ‘কব কলেজে’ ভর্তি হয়। সেখানে সরকার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন এবং অর্থনীতি শাস্ত্রে অধ্যয়ন করি ও ১৯৭৬ সালে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করি। লেখাপড়া শেষে ব্যবসায় নেমে পড়ি।

দেশ প্রতিক্ষণ: উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটল কীভাবে? মাতলুব আহমাদ : শিল্প উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে জীবন সূচনার বাসনা আমার শৈশবের একটি স্বপ্ন ছিল। উদ্যোক্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করতে গেলে যে ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং বিচক্ষণতার প্রয়োজন, এ সম্পর্ক অত্যন্ত সজাগ ছিলাম আমি। ১৯৮০-এর দশকের গোড়াতে ইংল্যান্ড ও জাপান থেকে যানবাহন আমদানির মাধ্যমে আমার বাণিজ্যিক উদ্যোগের সূচনা হয়। ১৯৮৩ সালে এ ব্যবসাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের জন্য প্রতিষ্ঠা করি ‘নিটল মটস (প্রাইভেট) লিমিটেড’। কয়েক বছরের মধ্যেই সীমিত উদ্যোগ বিশাল কর্মকাঠামোতে পরিণত হয় এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যানবাহন সংযোজন এবং উৎপাদনের মাধ্যমে আমার প্রতিষ্ঠান এই খাতে এক বিশেষ আঙ্গিকে আবিভর্‚ত হয়।

১৯৮৫ সালে আমার প্রতিষ্ঠান ভারতের নেতৃস্থানীয় অটোমোবাইল সংস্থা হিন্দুস্তান মোটরস লিমিটেডের ডিলারশিপ লাভে সমর্থ্য হয়। ১৯৮৭ সালে আমার প্রতিষ্ঠান জাপানের বিখ্যাত মোটরযান উৎপাদনকারী প্রতষ্ঠান মিৎসুবিসির ভারতীয় শাখার সঙ্গে ব্যসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করি। মিনিবাস বাজারজাতকরণে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ১৯৮৯ সালে আমার প্রতিষ্ঠান ভারতের শীর্ষস্থানীয় যানবাহন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং’য়ের বাংলাদেশের ডিস্টিবিউটরশিপ লাভ করে। এভাবে আমার ব্যবসায়িক পথচলু শুরু।

দেশ প্রতিক্ষণ: বর্তমানে সামগ্রিক অর্থনীতিকে কীভাবে দেখছেন?
মাতলুব আহমাদ : গত বছরের জাতীয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দেশের অর্থনীতি বেশ ভালো ছিল, কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কেমন যেন একটা মন্দাভাবের আত্মপ্রকাশ দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচনের আগ দিয়ে অর্থনীতিতে একটু ঢিমেতাল ভাব দেখা গেল এবং নির্বাচনের পর সে অবস্থা থেকে আর উন্নতি ঘটানো যায়নি। আমরা যদি রফতানির দিকে তাকায় তাহলে সেখানেও অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। আমদানিও কমে আসছে। প্রাইভেট খাতের গ্রোথও খুব একটা ভালো নয়।

আসলে অনেক কিছু মিলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকা, জাপানের মতো উন্নত দেশের অর্থনীতিও এখন সেভাবে উন্নতি করতে পারছে না। এ অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ একাই যে খুব ভালো করবে তেমনটি ভাবা ঠিক হবে না। ওইসব দেশের অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব আমাদের দেশেও কিছুটা লেগেছে। এখন আমাদের উচিত এই পরিস্থিতিকে আমরা কীভাবে মোকাবেলা করব এবং কীভাবে এখান থেকে বেরিয়ে আবার শক্ত স্থানে যাব সে বিষয়ে ভাবা এবং কাজ করা। আর এটিই হচ্ছে দেশে এখনকার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

দেশ প্রতিক্ষণ: এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কী করণীয় আছে?
মাতলুব আহমাদ : এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সবার আগে দেশের ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করতে হবে। অনেক উদ্যোক্তা ঋণখেলাপি হয়ে পড়ছেন তাদেরকে কীভাবে দেশের অর্থনীতিতে রাখা যায় সে বিষয়ে ভাবতে হবে। ফাইন্যান্সিয়াল দিকটাকে আগে মজবুত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, উৎপাদন ব্যয় কমাতে হবে। বন্দর থেকে দ্রæত পণ্য খালাস ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে এবং পণ্য পরিবহন ব্যয় কমাতে হবে।

এসব দিকে সরকারকে কাজ করতে হবে, যাতে কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস সত্যিকার অর্থে কমে আসে তার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে মার্কেট লসের কারণে ব্যবসায়ীদের ওপর আঘাত না আসে তা হলে সেটা কিছুটা হলেও মেকআপ হবে।
দেশ প্রতিক্ষণ: আপনি ব্যাংক খাতের কথা উল্লেখ করলেন। বিগত কয়েক বছর ধরেই ব্যাংকিং খাত সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক খাতের এই অস্থিরতার বিষয়ে আপনি কী বলবেন, এ অবস্থার জন্য আপনি কাকে দায়ী করবেন?

মাতলুব আহমাদ : বর্তমানে ব্যাংক খাতের যে লিকুইডিটি প্রবলেম তার জন্য অবশ্য এককভাবে কাউকে দায় দেওয়া ঠিক হবে না। ওভারঅল একটা মন্দার চিত্র বহুদিন থেকে চলে আসছে এ খাতে, যেমন খেলাপি ঋণ নিয়ে আমরা বহু বছর ধরে কথা বলছি, কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে ভালো কোনো অবস্থা আনা যায়নি। এই খেলাপি ঋণের বিরাট নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুরো ব্যাংকিং খাতের ওপর। দ্বিতীয়ত, ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে না দেওয়ার যে প্রবণতা রয়েছে সেটিও একটি বড় কারণ। এই অবস্থা সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলছে ভাবটা এমন যে ব্যাংক থেকে টাকা নেব, নিয়ে আর দেব না। ব্যাংক ও গ্রাহকের মধ্যে বিশ্বাসের জায়গাটা একেবারে তলানিতে চলে গেছে। এই বিশ্বাসের ঘাটতির কারণে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের টাকাও দিতে চাচ্ছে না। আবার উদ্যোক্তারাও বিনিয়োগে ভয় পাচ্ছেন, কারণ ব্যাংক ঋণ না দিলে এত টাকা কোথায় পাবে। ব্যাংকিং খাতের চলমান এই বিশ্বাসহীনতা

দ্রুত কাটাতে হবে। সরকারকে খুব সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামলাতে হবে, যাতে ব্যাংক খাতের আস্থাটা ফিরে আসে।
দেশ প্রতিক্ষণ: আপনি খেলাপি ঋণের বিষয়টি উল্লেখ করলেন। খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকও বিষয়টি দেশের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছে। খেলাপি ঋণ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো যাচ্ছে না কেন?

মাতলুব আহমাদ : সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আমাদের দেশে ‘ব্যাংক করাপসি ল’ নেই। তাছাড়া কোনো ব্যবসায়ী কোনো কারণে সঙ্কটে পড়ে ব্যবসা চালাতে না পারলে সে যে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলবে তার জন্য এক্সিট প্ল্যান নেই। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব ব্যাংককে মনিটরিং করবে এবং সঠিক পথে ধরে রাখবে তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যে শক্তি থাকা দরকার তা নেই। সরকারের যে ব্যাংকিং ডিভিশন বা সরকার নিজেই বাংলাদেশ ব্যাংকের যে পুরো স্বাধীনতা থাকা দরকার তা দেয়নি।

একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে তাহলে কীভাবে ঠিকমতো চলবে পুরো ব্যাংকিং খাত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে নিতে পারছে না। কোনো ব্যাংক বা কোনো ব্যক্তি খারাপ করলে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। যেখানে ঋণ দেওয়া সমীচীন নয়, সেখানে দিতে হচ্ছে। অর্থাৎ যেগুলো ব্যাংকের জন্য খারাপ সেগুলেই হচ্ছে এখন। সুতরাং এখন সময় এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার।

দেশ প্রতিক্ষণ: ব্যাংকিং খাতের মতোই আরেকটি বড় খাত পুঁজিবাজার। এই খাতটিও দীর্ঘদিন ধরে খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়ে গেছে। পুঁজিবাজারের এ অবস্থা নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?

মাতলুব আহমাদ : কোনো উন্নয়নশীল দেশের পুঁজিবাজার যদি স্বচ্ছ না হয় তাহলে সঠিকভাবে দেশের উন্নয়নও হয় না। এখানে দীর্ঘদিন দিন ধরেই অনেক কিছুই ঘটে আসছে, যা হওয়া ঠিক না। আসলে দেশের পুঁজিবাজারের এসব অনিয়ম দেখেও কেউ দেখছে না। একটা সময় ভারতে এ অবস্থা ছিল, কিন্তু এখন ভারত সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে। সেখানে এখন কেউ পুঁজিবাজারে কারসাজি করলে সোজা জেলে যেতে হবে। বাস্তবতা হলো, এসব তো আমাদের দেশে এখনও বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। পুঁজিবাজার এমন একটি জায়গা যেখানে সঠিকভাবে পদক্ষেপ নিতে না পারলে কোনোদিনই আস্থা ফেরানো যাবে না। ব্যাংকের চেয়েও পুঁজিবাজার আস্থার জায়গা, কিন্তু এখানে কোনো আস্থাই নেই। দেশের পুঁজিবাজার বারবার মুখ থুবড়ে পড়ে যাচ্ছে।

দেশ প্রতিক্ষণ: আপনি বললেন, পুঁজিবাজার বারবার মুখ থুবড়ে পড়ে যাচ্ছে; কিন্তু বাজারটি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না কেন?
মাতলুব আহমাদ : এর আগে বেশ কয়েকবার পুঁজিবাজারে ধস নেমেছে; কিন্তু কী কারণে ধস নামল, কারা এর সঙ্গে জড়িত তা এখনও জাতি জানতে পারল না। বহু লোক এই পুঁজিবাজার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারও এই বাজারকে চাঙ্গা করার জন্য অনেক ছাড় দিয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি; বরং ঘুরেফিরে পুঁজিবাজার সেই একই জায়গায় চলে যাচ্ছে। আসলে পুঁজিবাজারকে ভালো অবস্থায় নিতে হলে বিদেশি এক্সপার্ট এনে বাজারটিকে ঢেলে সাজাতে হবে।

দেশ প্রতিক্ষণ: এবার আপনার নিটল-নিলয় গ্রুপ সম্পর্কে জানতে চাই। আপনার ব্যবসায়িক গ্রুপের বর্তমান সার্বিক অবস্থা কেমন এবং আগামীতে নতুন কী ধরনের ব্যবসায় আপনাকে দেখা যাবে?

মাতলুব আহমাদ : আমাদের মূল ব্যবসা গাড়ির। বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মোটরসাইকেল ব্যবসা রয়েছে আমাদের। এর বাইরেও কিছু ব্যবসা আছে আমাদের। গাড়ির ব্যবসা চলছে, তবে একটু মন্দাভাব রয়েছে। অবশ্য আশা করছি আগামী বছর ভালো হবে। আরগ্রুপের কথা যদি বলি গ্রুপ ভালো চলছে, আমার দুই ছেলে নিটল-নিলয় ব্যবসায় নেমেছে, তারা হাল ধরেছে। আগামীতে আমরা বেশকিছু নতুন ব্যবসায় নামব। তার মধ্যে বিশেষত রয়েছে ইলেকট্রিক গাড়ি। এ রকম আমাদের নতুন নতুন কিছু প্রজেক্ট আসছে। নিটল-নিলয় গ্রুপে ১৭ হাজার লোক কাজ করছে। প্রতিবছর ম্যানপাওয়ার গ্রোথ ৫ শতাংশ। আমি আশা করি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও আমরা বিনিয়োগে যাব। সবশেষে আমি বলব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে ভিশন আমি তার সঙ্গে একমত। তার ভিশন বাস্তবায়নে আমরা কাজ করব।
দেশ প্রতিক্ষণ: নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?

মাতলুব আহমাদ : ব্যবসা বলেন আর চাকরি বলেন প্রতিক‚ল অবস্থা আসবেই। কিন্তু ভিত্তি যদি মজবুত থাকে, কথা-কাজে যদি স্বচ্ছতা থাকে, ভুল পথে যদি না যায় তাহলে ভেতরে অন্য রকম শক্তি কাজ করবে। যত বড়ই সঙ্কট আসুক না কেন সে শক্তি-সাহস জোগাবে। সুতরাং ট্রান্সপারেন্সি, অনেস্টি এবং রুলস মেনে চলা হচ্ছে সফলতার চাবিকাঠি। আমরা যখন নতুন উদ্যোক্তা ছিলাম, তখন আমাদের কাছে ইন্টারনেট ছিল না। ফলে কী পণ্য বাজারে আনছি, কী দামে আনছি সেগুলো সহজে অন্য কেউ জানতে পারত না। এজন্য সে সময় আমরা লাভ বেশি করতে পারতাম। কিন্তু এখন সময় বদলেছে, অবাধ ইন্টারনেট পৃথিবীটাকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। সুতরাং এখন যেকোনো সময় যেকোনো তথ্য জানা যাচ্ছে। তাই এখনকার উদ্যোক্তাদের মনে রাখতে হবে ব্যবসা করতে হলে বিচক্ষণ ও দক্ষ হতে হবে।