আবু সাঈদ চৌধুরৗ, দেশ প্রতিক্ষণ, জবি:  প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী অধিবাসীরা সাকরাইন উৎসবের পালন করে থাকেন। তাই ইংরেজি মাসের ১৪ জানুয়ারি চলে এর উৎসবমূখর আয়োজন। তবে শাঁখারিবাজারের আদি হিন্দু পরিবারগুলি ১৫ জানুয়ারিকে পহেলা মাঘ মেনে এদিনও উৎসব পালন করে। আয়োজন করা হয় পুরান ঢাকার নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবারের। দিনের শুরু থেকেই পুরান ঢাকার বাড়িতে বাড়িতে চলে পিঠা বানানোর ধুম।

পুরান ঢাকার শাঁখারি বাজার, রায়সাহেব বাজার, বংশাল, সূত্রাপুর, বাংলাবাজার, সদরঘাট এলাকার প্রতিটি বাড়ির ছাদ থেকে উড়ানো হয় রঙ-বেরঙের ঘুড়ি। ঘুড়িরা আকাশকে করে বর্ণিল আর ফানুসগুলো যত দূরে উড়ে যায়, তত যেন হয়ে যায় ঝিকিমিকি তারা! একসময় ঘুড়ি উড়ানো এই উৎসবের মূল আয়োজন হলেও এখন যোগ হয়েছে আতশবাজি, ডিজে পার্টিসহ চলে আরো নানান অনুষঙ্গ।

উৎসবকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকেই নানান আকারের অসংখ্য ঘুড়ি আর ফানুসের সঙ্গে আরও বিভিন্ন আয়োজন নিয়ে হাজির হয় এখানকার বাসিন্দারা। পুরাণ ঢাকার আকাশ ঘুড়িতে ঢেকে যায়। সন্ধ্যায় মুখে কেরোসিন নিয়ে আগুনে ফু দিয়ে আকাশে অগ্নিকুণ্ড তৈরি, ফানুস উড়ানো অথবা আতশবাজিতে মুখরিত হয় আকাশ। এবারের সাকরাইনের সপ্তাহ খানিক আগে থেকে ছিল প্রস্তুতি। সকাল থেকেই অনেক পর্যটক ভিড় জমায় এখানে। নতুন ঢাকাসহ নানান এলাকা থেকে মানুষ আসে পুরাণ ঢাকায়। এ উৎসবে অংশ নেন সব ধর্ম, পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ।

এবারের সাকরাইন উৎসবটি সোমবারে পুরো কর্মদিবস হওয়া সত্বেও উৎসবপ্রিয় মানুষের মনে এতটুকু বাধ সাধতে পারেনি ক্লান্তি। উৎসবের আমেজ ছিল সারা পাড়ায়। তবে সবটাই দালানের ছাদে। সাউন্ড বক্সের কল্যাণে দূরন্ত মিউজিক, রকমারি আলোকসজ্জায় ঝলমল করছে চারপাশ। রাত যত বাড়ে, তত যেন বাড়ে রঙ। শীত বুড়িকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রাণের উৎসব সাকরাইন প্রাণ সঞ্চার করে মানুষের মাঝে।