দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের মেয়াদ ১৩ মে শেষ হচ্ছে।২০১০ সালের মহাধসের পর তদন্ত কমিটির সুপারিশে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি পুনর্গঠন করে সরকার। এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির নামও পাল্টে যায়। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) থেকে সংস্থাটির নাম বদলে হয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

নাম বদলের আগে থেকেই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যানের অধ্যাপক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। তার সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কমিশনের দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী।

পুনর্গঠিত বিএসইসিতে এই দু’জনের সঙ্গে দায়িত্ব পান মো আরিফ খান। একের পর এক দুর্বল কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দিয়ে পুনর্গঠিত বিএসইসি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লে এক পর্যায়ে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিএসইসির কমিশনারের পদ ছেড়ে দেন আরিফ খান। তবে কিছুদিনের মধ্যে তিনি আইডিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে যোগ দেন।

দুর্বল কোম্পানির আইপিও অনুমোদন, প্লেসমেন্ট অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণে বিএসইসির সমালোচনা হলেও পদ আকড়ে ধরে রাখেন চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন ও কমিশনার হেলাল উদ্দিন নিজামী। এমনকি বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে দফায় দফায় তাদের পদত্যাগ বা অপসারণ দাবি করা হলেও আইন লঙ্ঘন করে এ দু’জনের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

তবে নতুন মেয়াদেও বিতর্ক তাদের পিছু ছাড়েনি। আগের মতোই দুর্বল কোম্পানি অনুমোদন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তাদের সঙ্গে নিয়োগ পাওয়া এক কমিশনারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে অনৈতিক সুবিধা নেয়ারও অভিযোগ আছে।

এতিকে এ অবস্থায় দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে স্পর্শকাতর এ সংস্থাটির পরবর্তী চেয়ারম্যান কে হচ্ছেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিনিয়োগকারীদের মাঝে চলছে নানা গুঞ্জন। এক্ষেত্রে ইতিমধ্যে ৪টি নাম বেশি আলোচনায় এসেছে। এর মধ্যে দুটো নাম জোরালো ভাবে শোনা যাচ্ছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে অবসরে যাওয়া সচিব মনোয়ার আহমেদ, বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামীর, বিএসইসির সাবেক কমিশনার ও বর্তমানে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ খান এবং সোনালী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক একেএম কামরুল ইসলাম। তাদের দু’জনই পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে দু’জনের বায়োডাটা নেয়া হয়েছে। তবে এর সঙ্গে আরও দু-একটি নাম রয়েছে আলোচনায়।

এ বিষয় জানতে চাইলে এটিএম কামরুল ইসলাম বলেন, সবার সঙ্গে আমার নামটিও আলোচনায় আসছে। এর বেশি আমি কিছু জানি না। তবে এ ব্যাপারে আরিফ খানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এবি ব্যাংকের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন আরিফ খান। এরপর ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বেক্সিমকো ফিশারিজ, জেনিথ ইনভেস্টমেন্ট এবং বিএসইসির কমিশনার হিসেবে কাজ করেন তিনি। এসএমই ফাউন্ডেশনের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব উল ইসলামের ভাই একেএম কামরুল ইসলাম। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।