এম এ সাঈদ চৌধুরী, জবি, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনা মোকাবেলায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ‘করোনা মোকাবেলায় জবিয়ানদের পাশে জবিয়ানরা’ খোলা গ্রুপ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তোলা অর্থের তথ্য নিজেদের নামে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে সংগঠনটির বিরুদ্ধে।

গতকাল রোববার ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার একটি তথ্য ‘কোটা সংস্কার চাই ( বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ)’ এর ফেসবুক গ্রুপে প্রদান করে।

সে তথ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদ জবি শাখার পক্ষ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১৪ জন শিক্ষার্থীকে ৪ লাখ ২২ হাজার টাকা ও ৬৮ শিক্ষার্থীকে প্রদান করা হয়। এর ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ‘করোনা মোকাবেলায় জবিয়ানদের পাশে জবিয়ানরা’ এর উদ্যোক্তারা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে।

জানা যায়, দেশে করোনা সংকটের শুরুর দিক থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘করোনা মোকাবেলায় জবিয়ানদের পাশে জবিয়ানরা’ নামে একটি গ্রুপ খোলে। এ গ্রুপের উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ কর্মী, সাংবাদিক ও ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার আহ্বায়ক রায়সুল ইসলাম নয়ন ছিলেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে খোলা এগ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা আর্থিক সহযোগিতা করেন। কিন্তু গত রোববার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার এ তথ্য ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিভিন্ন গনমাধ্যমে তাদের সংগঠনের নিজের নামে চালিয়ে দেয়।

পরে এটি ভাইরাল হলে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ এর আহ্বায়ক হাসান আল মামুন ‘কোটা সংস্কার চাই ( বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ)’ এর ফেসবুক গ্রুপে তার আগের দেয়া তথ্যটি পরিবর্তন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, প্রেস ক্লাব, ছাত্র অধিকার পরিষদ জবি,শাখা ছাত্রলীগ, আমরা জকসু চাই ও বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে এ সহযোগিতার উদ্যোক্তা হিসাবে তথ্য প্রদান করে। হাসান আল মামুনের দেয়া তথ্যটি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি,শাখা ছাত্রলীগ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নজরে আসলে তারা এটির প্রতিবাদ জানায়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি এক প্রতিবাদ বার্তায় জানায় ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ- এ আহ্বায়ক হাসান আল মামুন করনা সংকটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (জবিসাস) বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এর সহযোগী উদ্যোক্তা হিসাবে যে তথ্যটি উল্লেখ করেছেন তা সম্পূর্ণ ভুল।

বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কোনও রাজনৈতিক সংগঠন বা ছাত্রসংগঠনের সহযোগী হিসাবে কাজ করেনি। এরকম মানবিক উদ্যোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জবিসাস) সদস্যরা তাদের পেশাগত ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ মাহাদী সেকেন্দার বলেন, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে সহায়তার কাজ করেছে। কোন সংগঠনের সহযোগী হিসাবে কাজ করেনি।

‘করোনা মোকাবেলায় জবিয়ানদের পাশে জবিয়ানরা’ খোলা গ্রুপের উদ্যোক্তা নাজমুল হাসান মুন্না বলেন আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরাই উদ্ধুদ্ধ হয়েই শিক্ষার্থীদের সহযোহিতায় এগিয়ে আসি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক ভাইয়েরা এখানে এগিয়ে আসে। এখানে কোন সংগঠনের ব্যানার ছিল না।

এ বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ক্যাম্পাসে ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদের ব্যানারে সহযোগিতা করা হয়েছে। আমরা এই ধারণায় তথ্যটি দেই। এখানে আমাদের যোগাযোগ ও তথ্য সঙ্কট ছিল। পরে আমরা সেটি সংশোধন করি। বিষয়টি নিয়ে আমরা দূঃখিত।