দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী রবিবার থেকে সীমিতসংখ্যক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল শুরু হচ্ছে। এক্ষেত্রে আগের ভাড়াতেই যাত্রী পরিবহন করা হবে। আগামী ১০ দিন পর্যবেক্ষণের পর ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাস্থ্য ও নৌবিধি পালন করে ৩১ মে থেকে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে পূর্বের রেটেই ভাড়া আদায় হবে। আগামী ১০ দিন পরিবহন ব‍্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ভাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান বলেন- ‘সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া ১৪টি নির্দেশনা মেনে রোববার থেকে লঞ্চ চলাচল করবে। আমরা সদরঘাটসহ নদীবন্দরগুলোতে যাত্রীদের জীবাণুমুক্ত করে লঞ্চে ওঠাব, এই দায়িত্ব নেবে বিআইডব্লিউটিএ। এজন্য আমরা জীবণুমুক্ত করার টানেল বসিয়েছি, আরও বসানো হবে। তাপমাত্রা মাপারও ব্যবস্থা থাকবে।’

আরও পড়ুন…….

করোনা ভাইরাসের ‘হটস্পট’ ঢাকা নগরী, ১৫ হাজার ৫৫৩ জন শনাক্ত 

করোনা টেস্টে বাড়তি টাকা নিচ্ছে স্কয়ার ও মর্ডান হাসপাতাল 

ছয় ইস্যুতে ভারতের প্রতি চড়াও চীন 

তিনি বলেন- ‘আর লঞ্চ মালিকরা লঞ্চ জীবাণুমুক্ত করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীদের পরিবহন করবেন। লঞ্চ মালিকরা লঞ্চের মধ্যে মার্কিং করে দিতে পারেন, তবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যাবে। যাত্রীরা যাতে মাস্ক পরে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।’

মালিকরা ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুলছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা (মালিকরা) বলছেন, যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে অনেক কম যাত্রী পরিবহন করতে হবে এবং অনেক দিন ধরে লঞ্চ বন্ধ রয়েছে, সেজন্য তারা ভাড়া বাড়ানোর কথা বলেছেন।’ ‘আমরা এজন্য একটি কারিগরি কমিটি করে দেওয়ার কথা বলেছি। বিআইডব্লিউটিএ’র কোনো কর্মকর্তা কমিটির প্রধান হবেন। সেখানে লঞ্চ মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা সদস্য হিসেবে থাকবেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে কারিগরি কমিটি আগামী ১০/১২ দিন দেখে আবার আলোচনায় বসে আমরা ঠিক করব ভাড়া বাড়ানো প্রয়োজন কিনা।’

আরও পড়ুন…….

বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান বলেন- ‘দুই মাস লঞ্চ চলেনি, শ্রমিকদের বেতন দিতে হয়েছে, এজন্য তারা প্রণোদনা চাচ্ছিলেন। সেই বিষয়ে আমরা বলেছি, তাদের দাবি আমরা সরকারের কাছে উপস্থাপন করব। আশা করি সেটা বিবেচনা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের দাবি ছিল তারা যাতে সুরক্ষা সামগ্রী পায়। তারা যাতে আবার সংক্রমিত না হয়। শ্রমিকদের সুরক্ষা সামগ্রী মালিকরা দেবেন, তারপরও আমরা বলেছি মালিকরা যদি কোনো কারণে না দিতে পারে আমরা বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা আমাদের তহবিল থেকে তাদের সহায়তা করব।’

আরও বলা হয়, দেশের সব নদীবন্দরে যাত্রীদের জন্য জীবাণুমুক্ত হওয়ার টানেল স্থাপন ও যাত্রী পরিবহনের আগে থার্মোমিটারের মাধ‍্যমে তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া যাত্রীদের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারেরও ব্যবস্থা থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এর আগে বিকালে মতিঝিলে অবস্থিত বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ে লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে সংস্থাটির চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, আজকের আলোচনার বিষয় ছিল, কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করে যাত্রী পরিবহন করা যায়। বৈঠকে তাদের (মালিকদের) একটা আবেদন ছিল, ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।

যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে যাত্রীর পরিমাণ কমে যাবে। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। টেকনিক্যাল বিষয় রয়েছে, জনসাধারণের ওপর কোনো চাপ আসে কি না, সেই বিষয়টিও দেখতে হবে। এজন্যই আমরা আরেকটু দেখে শুনে বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে বসবো। তবে আজ ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।