দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তিনি চিকিৎসক। তাদের মধ্যে আছেন শহীদসন্তান ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা, অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ও সংগঠনের আরেক নেতা অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।বুধবার (১৭ জুন) সংগঠনটির পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদের তিন নেতা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানানো হয়।

নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, নির্মূল কমিটির চিকিৎসা সহায়ক কমিটির সভাপতি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল হাসপাতাল ও কলেজের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, চিকিৎসা সহায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক,

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ডা. আলিম চৌধুরীর কন্যা, নির্মূল কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের সূচনাকাল থেকে তাদের সকল ছুটি বাতিল করে করোনাক্রান্ত ও অন্যান্য রোগীদের বিরামহীন চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গিয়ে নিজেরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

ডা. উত্তম বড়ুয়া বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং ডা. স্বপ্নীল ও ডা. শম্পা নিজেদের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ডা. উত্তম ও ডা. স্বপ্নীলের নেতৃত্বে ২০১৮ সালে গঠিত নির্মূল কমিটির চিকিৎসা সহায়ক কমিটি করোনা সংক্রমণের সূচনা থেকে বিশিষ্ট চিকিৎসকদের নামে ইশতেহার ও ফেস্টুন প্রকাশের পাশাপাশি সারাদেশে সংগঠনের বাছাই করা ১০৮ জন চিকিৎসকের একটি বিশেষ প্যানেল ঘোষণা করেছে যারা দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় করোনাক্রান্ত ও অন্যান্য রোগীদের টেলিফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। হাসপাতালে রোগীদের দেখার পাশাপাশি তারা টেলিভিশনের বিভিন্ন আলোচনায় নিয়মিত অংশগ্রহণ এবং গণমাধ্যমে লেখার মাধ্যমে করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসচেতনতা সৃষ্টির কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন।

ডা. উত্তম বড়ুয়ার সংক্রমণের ১২ দিন অতিবাহিত হয়েছে। তিনি ও তার আক্রান্ত স্ত্রী হাসপাতালে থাকলেও গত ১৪ জুন সংক্রমণের দিন থেকে ডা. স্বপ্নীল ও ডা. শম্পা বাড়িতে কোয়ারেনটাইনে রয়েছেন। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, আমরা বিশ্বাস করি করোনার বিরুদ্ধে তাদের মতো প্রথম সারির লড়াকু যোদ্ধারা দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে পূর্ণোদ্যমে অংশগ্রহণ করবেন।

যে সব চিকিৎসক নিজেদের এবং পরিবারের সদস্যদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই মহামারীর সময় চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছেন তারা আর্তমানবতার সেবায় সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তারা গোটা জাতিকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন। আমরা তাদের অভিনন্দন জানাই। তাদের পরিবার ও সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা আমাদের সকল আক্রান্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্যান্যদের দ্রুত আরোগ্যের জন্য দেশবাসীর দোয়া ও প্রার্থনা কামনা করছি।