মো: তোফিক ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দীর্ঘদিন পর দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা স্বস্তি লক্ষ্য করা গেছে। গত সপ্তাহের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। এতে হারিয়ে যাওয়া ৪১ হাজার ৯৫৩ কোটি ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকার মূলধন ফিরে পেয়েছে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এই স্বস্তির ধারাবাহিকতা জরুরি। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই একটু একটু করে আশার আলো দেখাচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার।

রও পড়ুন…

পুঁজিবাজারে ‘জেড’গ্রুপের কোম্পানির মহাদাপট 

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহে অব্যাহত পতন থেকে বেরিয়ে আসার চিত্র দেখে অনেকের মধ্যে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। কোভিড-১৯ রোগের প্রকোপে ভুগতে থাকা শেয়ারবাজারে বেশ কিছুদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

বিনিয়োগকারীদের অনেকে বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্ব শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। তারই প্রভাব দেখা যাচ্ছে এখন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মো. রকিবুর রহমান মনে করেন, গ্রামীণফোনের মতো বড় প্রতিষ্ঠান এলে শেয়ারবাজার আবারও চাঙা হয়ে উঠবে। ‘এমন ইতিবাচক পরিস্থিতি বজায় থাকলে ধীরে ধীরে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। এখন বড় বড় ভালো কিছু প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে আসা প্রয়োজন।’

এ প্রসঙ্গে ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা আসলেই বাজার স্বাভাবিক হবে। বাজারে গত সপ্তাহে যে স্বস্তি ছিল, তার ধারবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে বিনিয়োগকারীরাও বাজারে ফিরতে শুরু করবেন।’

এদিকে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। আজ লেনদেনের শুরু থেকেই ক্রয় প্রেসারে টানা বাড়তে থাকে সূচক। রোববার লেনদেন শেষে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। এদিকে, আজ ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স চলতি বছরের মধ্যে সবোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। আর টাকার অংকেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। আজ দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৪৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

আজ দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১৫৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪৮৫৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১০৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক পয়েন্ট ৪৫ বেড়ে অবস্থান করছে ১৬৩৯ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৫৪টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩০১টির, কমেছে ৪২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩৫১ কোটি ৩৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা।

এর আগের কার্যদিবস দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৪৭০৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ০.১৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১০৮৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৫৯৪ পয়ন্টে। আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১২০ কোটি ৭৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৪৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

এদিকে দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএসইএক্স ২৮৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৯৬টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৫১টির, কমেছে ২৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা।