দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেছেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে প্রথমত তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। আর এই তিনটি বিষয়কে যদি সঠিক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা স্থিতিশীল হবে। বিষয় তিনটি হলো: দক্ষ জনশক্তি, পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং পুঁজিবারকে একটি তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বাজার।

রও পড়ুন…

পুঁজিবাজারের টাকা নিয়ে পালানোর দিন শেষ: বিএসইসি চেয়ারম্যান

শনিবার পুঁজিবাজার সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিষ্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্টস ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা ও আগামী দিনের করনীয় শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

সূচনা বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিষ্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থি রয়েছেন বাংলাদেশ মার্চেন্টস ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াদ মতিন, ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশনের সভাপতি শরীফ আতাউর রহমান, এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এসোসিয়েশনের সভাপতি হাসান ইমাম।

ইউনুসুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য কয়েকটি বিষয়ের উপর আমি জোড় দেবো। তার ভিতরে তিনবার বলবো গভর্নেন্স, গভর্নেন্স এবং গভর্নেন্স শক্তিশালী করতে হবে। যারা বাজার নিয়ে অনিয়ম-কারসাজী করে তাদেরকে যদি বিচারের আওতায় আনা যায় তাহলে মানুষ বাজারের প্রতি আস্থা ফিরে পাবে। একই সাথে পুঁজিবাজারকে সাসটেইনেবল করার জন্য দক্ষ জনবল, পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বাজার গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির দিকে দিয়ে সব চেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। সারাদেশে পুঁজিবাজার সম্প্রসারণের জন্য তথ্য প্রযুক্তির কোনো বিকল্প নাই।

ইউনুসুর রহমান বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর আধিপত্য বেশি। আমাদের দেশে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ৭০ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী মাত্র ৩০ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী যদি বাজারে সক্রিয় না হয়, তাহলে বাজার সাসটেইন করা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। আমরা যদি চিন্তা করে দেখি, দেশের অর্থনীতি বা জিডিপি যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, পুঁজিবাজার সে হারে বাড়ছে না।

পুঁজিবাজারে জিডিপি মাত্র ১২ শতাংশ অবদান রেখেছে। যদিও নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর সেটি বেড়ে ১৪ শতাংশ হয়েছে। এক সময় এটির অবস্থান ছিলো ৩৪ শতাংশ। পুঁজিবাজারকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আরো বেশি কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে ভাবার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, মাইক্রো রেগুলেটরি অথরিটি এবং ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির মধ্যে মাইক্রো ক্রেডিটে ২২ থেকে ২৫ শতাংশ ঋণ নেয়ার পরও এখনে কোনো ঋণ খেলাপী নেই। কিন্তু ব্যাংক থেকে মাত্র ৯ শতাংশ ঋণ হওয়ার পরও অনেক বেশি খেলাপী হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হলো সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। পুঁজিবাজারকে যদি আর একটু ভাইব্রেন্ট করতে হয় তাহলে ব্যাংক নির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজার থেকে শিল্প উদ্যোক্তাদের টাকা নিতে হবে।