দেশ প্রতিক্ষণ, নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৮১ ভাগেরও বেশি। এবং মূল সেতুর কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা বিষয়ক এক সভায় অংশ নিয়ে গতকাল শুক্রবার এসব কথা বলেন। সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় যুক্ত হন মন্ত্রী।

সেতুমন্ত্রী পদ্মা সেতু প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘এ মাইলফলক প্রল্পের সাথে সংযুক্ত থাকায় এক সময় আপনারা গর্ববোধ করবেন। সবাইকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানাই। প্রকল্পের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোন কাজ কেউ করবেন না। এটি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প।’

সবাইকে আশ্বস্ত করে ওবায়দুল কাদের বলেন- পদ্মাসেতু প্রকল্পে কোন আর্থিক সংকট নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে এ প্রকল্পে আর্থিক সংকট হবে না। বাজেটে পদ্মা সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রয়েছে।

তিনি বলেন, নানান চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ আজ এ পর্যায়ে এসেছে। সকল সমালোচনা পিছনে ফেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন। আজ এগিয়ে চলছে সেতুর কাজ। পদ্মায় ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ৩১টি ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। দৃশ্যমান হয়েছে ৪ হাজার ৬৫০ মিটার।

পৃথিবীর নদীগুলোর মধ্যে পদ্মা একটি ‘আনপ্রেডিক্টেবল রিভার’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন- এখানে সয়েল কন্ডিশনসহ অন্যান্য বিষয় সময় সময় পরিবর্তন হয়। অতি সম্প্রতি কিছু স্প্যান স্থাপনের পরিকল্পনাও তীব্র স্রোতের কারণে সম্ভব হয়নি।

সরকারের এই প্রভাবশালী মন্ত্রী বলেন- ‘করোনাকালে এক মুহূর্তের জন্যেও পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ থেমে থাকেনি, দেশের অন্যান্য উন্নয়ন গতিতে যখন ছন্দপতন তখনো সেতুর উপর বসেছে একের পর এক স্প্যান। করোনা মহামারীর শুরু থেকে প্রকল্পে কর্মরত দেশি-বিদেশি জনবল স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ এগিয়ে নেয়ার যে দক্ষতা দেখিয়েছেন এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।’

তিনি বলেন, সেতুতে একের পর এক স্প্যান বসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিবিড় ভাবে তদারক করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। ইতোমধ্যে মূল সেতুর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আরও ৬টি স্প্যান প্রস্তুত, পানি প্রবাহের গতি কমলে স্প্যানগুলো বসাতে পারব। ইতিমধ্যে ৪২টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। নদী শাসনের অগ্রগতি শতকরা প্রায় ৭৪ভাগ।

এর আগেই মাওয়া এবং জাজিরা প্রান্তের সংযোগ সড়ক এবং টোল প্লাজার কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮১ ভাগেরও বেশি। এখন সেতুর উপর যানবাহন চলাচলের ডেক ও স্লাব স্থাপনের কাজ চলছে।’