দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ডিএসইতে সপ্তাহজুড়ে দাপুটে অবস্থানে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। সপ্তাহের ব্যবধানে মিউচুয়াল ফান্ডেই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। যদিও এর পেছনে দৃশ্যমান কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কেউ। পূর্বের সপ্তাহের চেয়ে গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে এ খাতে। একক খাত হিসেবেও ডিএসইর মোট লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে। অন্যান্য খাতের অবদান থাকলেও আশেপাশে থাকতে পারেনি কেউ। একচেটিয়া দাপুটে অবস্থানে থেকে লেনদেন শেষ করেছে মিউচুয়াল ফান্ড।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেন বিশ্লেষণে পাওয়া গেছে এমন তথ্য। যদিও পূর্বের সপ্তাহের চেয়ে গত সপ্তাহে এ খাত থেকে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা ঋণাত্মক ছিল। পূর্বের সপ্তাহে যতটুকু মুনাফা দেখতে পেয়েছিলেন, গত সপ্তাহ শেষে তার চেয়ে বেশি লোকসান দেখেছেন। মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর মধ্যে মাত্র দুটির শেয়ারদর সর্বোচ্চ বৃদ্ধির তালিকায় ছিল। অপরদিকে দর হারানোর শীর্ষ ১০টির আটটিই ছিল মিউচুয়াল ফান্ডের। বিশ্লেষকরা বলছেন, খাতভিত্তিক শেয়ারদর বৃদ্ধির প্রবণতায় এবার বাড়ছে মিউচুয়াল ফান্ড।

কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর বৃদ্ধির আশায় ক্রয়-বিক্রয় উভয় প্রবণতাই দেখা গেছে। ক্রয়ের চেয়ে বিক্রয় চাপ বেশি ছিল। এতে দর পড়ে যায় অনেকগুলোর। আবার কয়েকটির দর বৃদ্ধিতে কিছুটা সমন্বয় হয়। পুরো সপ্তাহজুড়েই খাতটি অস্থিতিশীলতার মধ্যে দিয়ে পার করে।

জানা গেছে, ১৯ নভেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে ডিএসইতে মাত্র চারটি খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা দেখতে পান। পাট, ব্যাংক, ভ্রমণ ও পেপার খাত ছাড়া অবশিষ্ট সব খাতই ছিল নেতিবাচক ধারায়। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, অধিকাংশ খাতের শেয়ারদর পতন হওয়ায় সার্বিক লেনদেন কমেছে ডিএসইর। পূর্বের সপ্তাহের চেয়ে গত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ। এর প্রভাবে পতন হয়েছে ডিএসইর প্রধান ও ব্ল–-চিপস সূচক। শুধু শরিয়াহ্ সূচকে দেখা গেছে ইতিবাচক ধারায়।

জানা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৬৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বৃদ্ধি পায় ৯৯টির, কমে ১৯৯টির, অপরিবর্তিত ছিল ৬৩টির ও লেনদেনে অংশ নেয়নি তিনটি।

খাতভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে বস্ত্র, জীবন বিমা, ট্যানারি, জ্বালানি, খাদ্য, প্রকৌশল, মিউচুয়াল ফান্ডে লোকসান দেখা গেছে। অপরদিকে মোট লেনদেনে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ অবদান রাখে মিউচুয়াল ফান্ড। এরপরই সাধারণ বিমা ও ওষুধ খাত ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ, ব্যাংক ৯ শতাংশ, প্রকৌশল সাত দশমিক আট শতাংশ ও জ্বালানি খাত চার দশমিক আট শতাংশ অবদান রাখে।

একক কোম্পানি হিসেবে গত সপ্তাহে ডিএসইতে সর্বোচ্চ শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় বাংলাদেশ ল্যাম্পসের। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ৩৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এছাড়া দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে স্থান পায় আরামিট, যার শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ১৮ শতাংশ। এছাড়া বঙ্গজ লিমিটেড ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ, এপেক্স ফুডস ১৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ, এসিআই ফরমুলেশনস ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ফার্মা এইডস আট দশমিক ৯৫ শতাংশ, স্যালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি আট দশমিক ৫৯ শতাংশ, এডিএন টেলিকম সাত দশমিক ৮৩ শতাংশ ও সাফকো স্পিনিং মিলস সাত দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ারদর বৃদ্ধি পায়।

অপরদিকে দর হারানোর শীর্ষ তালিকায় ছিল সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড ০১, এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড, এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, এশিয়ান টাইগার সন্ধ্যানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ্ ফান্ড, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এসএস স্টিল, ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফিন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ড, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ও হামিদ ফেব্রিকস।