তৌফিক ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: মহামারী করোনায় ওষুধ কোম্পানিগুলোর রমরমা ব্যবসা হলেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস উল্টোপথে। এ কোম্পানিটি মুনাফা তো করতে পারেইনি, বরং লোকসানের পাহাড় গড়েছে। তবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মনে করছে আগামী বছর তারা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। তবে কত বছর নাগাদ আগামী বছর শেষ হবে এ প্রশ্ন এখন বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে।

এছাড়া সেন্ট্রাল ফার্মা লিমিটেড বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারনা করে পুঁজিবাজার শত কোটি টাকা লুটপাট করছে। বিনিয়োগকারীরা নি:স্ব হলে কোম্পানির পরিচালকরা আরাম আয়েশ জীবনপান করছেন। বিনিয়োগকারীদের টাকায় সেন্ট্রাল ফার্মার ব্যবসা করলেও নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা কওে বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারনা করছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালের ২০১৯-২০ আর্থিক বছর শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ২৪ পয়সা। সেই হিসাবে বছর শেষে কোম্পানিটির মোট লোকসান দাঁড়িয়েছে ১১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটি ২০১৯-২০ অর্থবছরেই সবচেয়ে বেশি লোকসান করেছে। এজন্য কোম্পানি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পাশাপাশি করোনাভাইরাসকে দায়ী করছে। তবে কর্তৃপক্ষের কথার সাথে বাস্তবে মিলছে অন্য তথ্য। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কারসাজি করে বড় ধরনের লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছেন।

সুত্র মতে, ভালো ব্যবসা দেখিয়ে পুঁজিবাজার থেকে উচ্চ দরে শেয়ার ইস্যু করে সেন্ট্রাল ফার্মা। কোম্পানিটি ইস্যুর জন্য অতিরঞ্জিত মুনাফা দেখিয়েছে, অন্যথায় এখন শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে প্রতারনার জন্য ব্যবসায় ধস দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যে কারনে বিভিন্ন কোম্পানির ন্যায় সেন্ট্রাল ফার্মার আর্থিক হিসাব পূণ:নিরীক্ষার দাবি তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) সেন্ট্রাল ফার্মার ডিভিডেন্ড প্রতারণার কথা উল্লেখ করে তাদের আর্থিক প্রতিবেদন তদন্তের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি এ.কে.এম মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী সেন্ট্রাল ফার্মাও ডিভিডেন্ড প্রতারনাও মালিকপক্ষের ওষুধ ব্যবসার চেয়ে শেয়ার ব্যবসায় কারসাজিতে ব্যস্ত থাকেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানিটির অসত্য আর্থিক প্রতিবেদন, দুর্বল করপোরেট গভর্ন্যান্স, লভ্যাংশ প্রদান না করা, রিজার্ভে টাকা রেখে লুটপাট করা, দুর্বল আইপিও অনুমোদন। এ কোম্পানির ডিভিডেন্ড প্রতারণার কারণে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল হচ্ছে। রিজার্ভ থাকা সত্ত্বেও কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিচ্ছে না।

এ বিষয় পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহম্মেদ বলেন, সেন্ট্রাল ফার্মা ডিভিডেন্ডের নামে বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারনা করছে। কারসাজি করে বড় লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের নি:স্ব করছে। ফলে এসব কোম্পানিগুলোকে অনুমোদন দেওয়ার আগে তার আর্থিক অবস্থা ভালো করে যাচাই করা দরকার। তা না হলে একসময় এসব কোম্পানি থেকে ঠকেন বিনিয়োগকারীরা। তিনি আরো বলেন, এ কোম্পানির পরিচালকরা স্বচ্ছ নয়। পরিচালকদের অনৈতিক কার্যকলাপের চিত্র ফুটে উঠছে। যার কারনে নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা ও নানা অনিয়মের অভিযোগ।

এছাড়া সেন্ট্রাল ফার্মা কর্তৃপক্ষ পুঁজিবাজার থেকে কি ভাবে লুটপাট করতে হয় তা ভাল করে জানে। এছাড়া বছরব্যাপি মালিকানা পরিবর্তনের গুজব ছড়িয়ে শেয়ারবাজার থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আর এ গুজবের পিছনে সেন্ট্রাল ফার্মার কর্তৃপক্ষ জড়িত। বিশেষ করে কোম্পানির সচিবের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগ।

তেমনি পুৃঁজিবাজার থেকে টাকা হাতানোর জন্য কিভাবে প্রতারণা করতে হয়, তা দেখিয়ে দিয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃপক্ষ। এ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মজুদ পণ্য ও গ্রাহকের কাছে পাওনা টাকার পরিমাণ বেশির মাধ্যমে অতিরঞ্জিত ব্যবসা দেখায়। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে সমন্বয়ের জন্য তৈরী করেছে আরেক নাটক।

এবছর মজুদ পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে এবং দেনাদারের কাছ থেকে টাকা পাওয়া যাবে না বলে হিসাব থেকে বাদ (রিটেন অফ) দিয়েছে। এর মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বড় লোকসান দেখিয়েছে। এই কোম্পানিটিরই পর্ষদের পরিবর্তনের নামে নাটক সাজিয়ে শেয়ার দর আকাশুচুম্বি করা হয়েছিল। যা ঘোষণা দিয়েও পরবর্তীতে পরিবর্তন করা হয়নি। যাতে শেয়ার দরে ধস নামে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

এদিকে অন্যান্য বছর মুনাফায় থাকলেও কোম্পানিটির বিরুদ্ধে নানা সময়ে জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালেও প্রভিশন, ব্যাংকঋণের তথ্য উপস্থাপন এবং কর ও দায় সমন্বয় না করে মুনাফা-সম্পদ বাড়িয়ে দেখায় কোম্পানিটি। ২০১৮ সালের জুনে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসকে নিরীক্ষা করে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ‘জোহা জামান কবির রশিদ অ্যান্ড কোং’।

নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে স্বল্পমেয়াদি ঋণের সুদ, মন্দ ঋণ ও দায়ের বিপরীতে প্রভিশন না রাখাসহ পাঁচ বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। নিরীক্ষকের মতে, সেন্ট্রাল ফার্মা স্বল্পমেয়াদি ঋণের সুদ ও সংশয়যুক্ত অনাদায়ী পাওনার বিপরীতে কোনো প্রভিশন রাখেনি। ওই দুই খাতে প্রভিশন না রাখায় কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফার অঙ্ক বাড়ে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ব্যবসা করা ইউরোপীয় ও মার্কিন কোম্পানি গ্যাটকো ও বাংলা ক্যাটের হাত ধরে আশির দশকে সেন্ট্রাল ফার্মার যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে অন্য ব্যবসায় যুক্ত হয়ে ১৯৯৩ সালে স্থানীয় মেট্রো গ্রুপের কাছে কোম্পানিটির মালিকানা হস্তান্তর করে গ্যাটকো। এরপর পুরোনো যন্ত্রপাতির সঙ্গে নতুন যন্ত্রপাতি বসিয়ে ১৯৯৪ সালে মেট্রো গ্রুপের অধীনে নতুন করে উৎপাদনে আসে কোম্পানিটি। তবে কয়েক বছর পরই মনসুর আহমেদের কাছে সম্পূর্ণ মালিকানা হস্তান্তর করে দেয় মেট্রো গ্রুপ। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আলিফ গ্রুপের কাছে সেন্ট্রাল ফার্মার মালিকানা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ, যদিও পরে তা কার্যকর হয়নি।

সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালের কোম্পানি সচিব মো. তাজুল ইসলাম দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, করোনার কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই সময়ে শ্রমিক আসেনি। সেটাও ক্ষতির একটি কারণ। তাছাড়া করোনার কিছুদিন আগে আমাদের ফ্যাক্টরি বন্ধ ছিল, সেই প্রভাবও কিছুটা রয়েছে। এখন আমাদের কারখানা চালু রয়েছে। আশা করছি আগামীতে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।

তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মজুদ পণ্য ও গ্রাহকের কাছে পাওনা টাকা প্রতারনা প্রসঙ্গে কোম্পানি সচিব মো. তাজুল ইসলামের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে বলার সাথে সাথে কেটে দেন।  এদিকে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে বড় ধরনের লোকসানে থাকলেও এর আগের বছরগুলোয় মুনাফায় ছিল এই প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে এই প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ছিল পাঁচ কোটি ৭০ লাখ টাকা, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে যার পরিমাণ ছিল ছয় কোটি টাকা। আর ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে কোম্পানিটি মুনাফা ছিল ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

মুনাফায় থাকলেও ২০১৫ সালের পর আর লভ্যাংশ বাড়াতে পারেনি কোম্পানিটি। এসময় কোম্পানি ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়। এরপর ২০১৬ ও ২০১৭ সালে তারা ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ প্রদান করে। পরের বছর তা পাঁচ শতাংশ বোনাসে নেমে আসে। পরের বছর এক শতাংশ নগদ লভাংশে নেমে আসে। আর সর্বশেষ বছরে (২০১৯-২০) শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি।

এদিকে সেন্ট্রাল ফার্মা বড় ধরনের লোকসান করলেও ওষুধ খাতের অন্যান্য কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্কয়ার ফার্মার আগের অর্থবছরের ১৪ টাকা ৯৮ পয়সার ইপিএস ২০১৯-২০ অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা ৮২ পয়সা। এছাড়া বেক্সিমকো ফার্মার সাত টাকা ৪৮ পয়সা ইপিএস বেড়ে আট টাকা ৬৭ পয়সা, একমি ল্যাবরেটরিজের ছয় টাকা ৮১ পয়সার ইপিএস বেড়ে ছয় টাকা ৮৫ পয়সা, রেনাটার ৪২ টাকা ৩৯ পয়সার ইপিএস বেড়ে ৪৫ টাকা ২৯ পয়সা, বিকন ফার্মার ৫১ পয়সার ইপিএস বেড়ে এক টাকা ৬৫ পয়সা ও ইন্দোবাংলা ফার্মার এক টাকা ৩৯ পয়সার ইপিএস বেড়ে এক টাকা ৪০ পয়সা হয়েছে।

সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের আর্থিক হিসাব নীরিক্ষায় নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৮ কোটি ২২ লাখ টাকার মজুদ পণ্য হিসাব থেকে বাদ (রিটেন অফ) দিয়েছে। ওই পরিমাণ মজুদ পণ্য ধ্বংস করেছে বলে জানিয়েছে। যা আর্থিক হিসাবে বিক্রিত পণ্যের ব্যয় (কস্ট অফ গুডস সোল্ড) হিসাবে দেখিয়েছে। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোন প্রমাণাদি দেখাতে পারেনি। এছাড়া ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও এর পূর্বে জানানো হয়নি। এ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মজুদ পণ্য ধ্বংস করা নিয়ে সঠিক প্রমাণাদি বা যুক্তিসঙ্গত কোন কিছু সরবরাহ করেনি।

এমনকি বিদ্যমান বা ধ্বংস করা মজুদ পণ্যের সঠিক মূল্যও কোম্পানি দ্ধারা জাস্টিফাইড করা হয়নি। এর আগের অর্থবছরের নীরিক্ষায় কোম্পানিটির ক্রয়, উৎপাদন সক্ষমতা, বিক্রিত পণ্যের ব্যয় ও বিক্রির তুলনায় মজুদ পণ্যের পরিমাণ বেশি দেখানো হয়েছিল বলে নিরীক্ষক জানিয়েছে। ওই অর্থবছরে পণ্যের পরিমাণ, মান ও মূল্যের বিষয়ে কোন টেকনিক্যাল স্ট্যাটাস দেয়নি কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। যেখানে অধিকাংশ মজুদ পণ্যের অস্তিত্ব ও বিক্রয় মূল্য সন্দেহজনক ছিল। এছাড়া ওইসময় মজুদ পণ্যের হিসাব সঠিকভাবে করা হয়নি এবং যৌক্তিক কোন প্রমাণাদি তারা দেয়নি।

২০১৯-২০ অর্থবছরে সেন্ট্রাল ফার্মা কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওনা ৫৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা হিসাব থেকে বাদ দিয়েছে। তবে সাপোর্টিং কোন প্রমাণাদি দিতে পারেনি বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের দাবি, ওইসব পাওনা টাকা দীর্ঘদিনের, দোকানদার ও মেডিক্যাল অফিসারদের পাওয়া যাচ্ছে না এবং মেয়াদাত্তীর্ণ পণ্য ফেরতের কারনে এমনটি করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত হিসাব বা সাপোর্টিং কোন কিছু সরবরাহ করা হয়নি।

বিগত অর্থবছরের (২০১৮-১৯) নিরীক্ষায় পর্যবেক্ষনের কথা উল্লেখ করে নিরীক্ষক জানিয়েছে, প্রতিবছর দেনাদার বেড়েছে। তবে কোন কোন বিক্রিয় কেন্দ্র বা পার্টির কারনে দেনাদার বেড়েছে, তার কোন রিপোর্ট ও নিশ্চয়তার সনদ দেয়নি। তারা দেনাদারের বিস্তারিত এবং টাকা আদায়ের কোন নীতির তথ্য দেয়নি। যাতে ওই অর্থবছরেই দেনাদারের কাছ থেকে টাকা আদায় নিয়ে সন্দেহ ছিল। কিন্তু তারা কোন প্রভিশনিং গঠন করেনি।

নিরীক্ষক জানিয়েছে, শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড থেকে ৩২ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে বলে আর্থিক হিসাবের নোট ২১-এ উল্লেখ করা হলেও সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃপক্ষ তার কোন প্রমাণাদি দেখাতে পারেনি। এছাড়া ১৪ কোটি ১ লাখ টাকার নিট বিক্রয়, ৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার কাচাঁমাল ক্রয় এবং ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা প্যাকিং ম্যাটেরিয়াল ক্রয়ের প্রমাণাদি দেখাতে পারেনি।

সেন্ট্রাল ফার্মার জনতার ব্যাংকের ঢাকা লোকাল অফিসে ৩টি হিসাব রয়েছে। যেগুলো ট্যাক্স অথোরিটি লেনদেন অযোগ্য (ফ্রিজ) করে রেখেছে। তাদের দাবিকৃত ৯ কোটি ৩১ লাখ টাকার ট্যাক্সের জন্য ২০১৫ সালে এমনটি করে রেখেছে। তবে এখনো এ বিষয়টির কোন সমাধান বা উন্নতি হয়নি। যাতে কোম্পানি নগদে লেনদেন করছে।

ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট নিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ অবস্থার কোন তথ্য নিরীক্ষককে সরবরাহ করেনি। তবে ট্যাক্স অথোরিটি ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ২০১৮ সালে এক চিঠির মাধ্যমে ৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার রাজস্ব দাবি করেছে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষও ওই ২ অর্থবছরের জন্য ২০১৯ সালে রিটার্নস দাখিল করেছে। তবে এখনো ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট শেষ হয়নি। যাতে অগ্রিম ট্যাক্স ২৮ কোটি ২ লাখ টাকা ও দায় ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা সমন্বয়হীন রয়েছে। ফলে সম্পদ ও দায় বেশি দেখানো হচ্ছে।

এরমধ্যে অগ্রিম ৯১ লাখ টাকা ট্যাক্স প্রদানের প্রমাণাদি সরবরাহ করেনি। কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরে লোকসান হয়েছে। কিন্তু টার্নওভার ট্যাক্সের জন্য কোন সঞ্চিতি গঠন করেনি। ওই অর্থবছরে ১৪ কোটি ১ লাখ টাকা টার্নওভারের উপরে ৮ লাখ টাকা ট্যাক্স প্রভিশনিং করা উচিত। যাতে করে চলতি দায় কম দেখানো হয়েছে।