দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহ করায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এসিআই কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। অন্যদিকে মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সুপারিশের আলোকে যাচাই-বাছাই করে এসিআই এর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিষয়টি নিয়ে কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, কৃষকের ধান কাটতে এসিআই কোম্পানির মাধ্যমে যে হারভেস্টর মেশিন দেওয়া হয়েছিল তা খুবই নিম্নমানের। যেগুলো নিয়ে কৃষকরা প্রায়শই অভিযোগ করেছেন। এনিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও কমিটিতে আলোচনা হয়। তাই এসিআই কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া করোনাকালীন সময়ে এসিআই যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করেছে সেটিও অত্যন্ত নিম্নমানের। এসব নিম্নমানের সামগ্রী নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে বলে মনে করে।

বৈঠকের পরে কমিটির সদস্য হোসনে আরা দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, “এসিআইয়ের হারভেস্টরের মান খুবই খারাপ। কমিটির বৈঠকে প্রায় সবাই এ নিয়ে কথা বলেছেন। ওদের নাট-বোল্ট পর্যন্ত নিম্নমানের। আমরা মন্ত্রণালয়কে ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি।”

সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাকালে নিম্নমানের জীবনরক্ষাকারী সামগ্রী এবং নিম্নমানের কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করায় এসিআই কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

দেশে উৎপাদনের বাইরেও প্রতি বৎসর প্রায় ৬/৭ লাখ টন পেঁয়াজের ঘাটতি থাকে, গত বছর পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারত বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। হঠাৎ করে তৈরি হওয়া এ ধরনের পেঁয়াজ সংকট কাটাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে পদক্ষেপ গ্রহণ ও ভারতের ওপর শতভাগ নির্ভরতা কমানোর জন্য মন্ত্রণালয়কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশে পেঁয়াজ ও পাটের বীজ রফতানির ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব হ্রাস করতে গবেষণা ও বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

এদিকে করোনাকালে অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকার পরও আলু ও পেঁয়াজের ঘাটতি থাকার কারণ উদঘাটনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। আগামী বোরো মৌসুমের সঠিক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ এবং আউশ মৌসুমের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণে উন্নত জাত কৃষকদের নিকট পৌঁছানো ও আবাদি এলাকা যথাসম্ভব বৃদ্ধিকরণে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রাং, মো. মোসলেম উদ্দিন, মো. মামুনুর রশীদ কিরন, আনোয়ারুল আবেদীন খান, উম্মে কুলসুম স্মৃতি এবং হোসনে আরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন দফতর সংস্থার প্রধানসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।