দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি টিকা কিনতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটকে অগ্রিম ৬০০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। সিরামের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর খবর মঙ্গলবার বিকেলে দেশ প্রতিক্ষণকে নিশ্চিত করেছেন বেক্সিমকো ফার্মার চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা। তিনি বলেন, ‘টাকা সোমবার দেয়ার কথা থাকলেও আমরা দিতে পারিনি। আজ বিকেলে সিরামের অ্যাকাউন্টে এ টাকা জমা দেয়া হয়েছে।’

অক্সফোর্ডের টিকা ভারতীয় উপমহাদেশে উৎপাদন করবে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। তাদের কাছ থেকে আপাতত তিন কোটি টিকা আনবে বাংলাদেশ। এ জন্য ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় গত ৫ নভেম্বর, ১৩ ডিসেম্বর হয় চুক্তি। চুক্তির পক্ষ তিনটি- বাংলাদেশ সরকার, সিরাম ও বেক্সিমকো।

টিকার জন্য অগ্রিম টাকা পাঠাতে সোমবারই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল বেক্সিমকো। কিন্তু সিরামের সিইও আদর পুনাওয়ালের এক সাক্ষাৎকারে সবকিছু থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়। পুনাওয়ালে জানান, দেশের বাইরে টিকা রপ্তানিতে তাদেরকে নিষেধ করেছে ভারত সরকার।

তার এই মন্তব্য বজ্রাঘাতের মতো আসে; তোলপাড় শুরু হয় ঢাকায়। কারণ, বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানা ছিল না সিরামের সঙ্গে চুক্তি করা বাংলাদেশ সরকার ও বেক্সিমকো ফার্মার। বাংলাদেশ সরকার যোগাযোগ শুরু করে ভারতের সঙ্গে। ঢাকায় ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলে সোমবার দুপুরেই স্বাস্থ্যসচিব জানান, টিকা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। চুক্তি অনুযায়ীই টিকা পাবে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যোগাযোগ করে ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে। বিকেলে সংবাদিকদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, ভারত সরকার তাদেরকে জানিয়েছে সিরাম প্রধানের বক্তব্য অপরিপক্ব। যথাসময়ে টিকা পাবে ঢাকা।

টিকা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার যখন অনিশ্চয়তার ঘোরপাকে, তখন সুর পাল্টায় সিরামও। প্রতিষ্ঠানটি থেকে বলা হয়, টিকা রপ্তানি নিয়ে প্রকাশিত নিষেধাজ্ঞার খবর পুরোপুরি সঠিক নয়। তাদের ওপর টিকা রপ্তানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদনও দিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

ফলে এই টিকা দেশে ব্যবহারের কোনো বাধা নেই। এখন কেবল পাওয়ার অপেক্ষা। চুক্তি অনুযায়ী, অনুমোদন দেয়ার এক মাসের মধ্যে টিকা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।