দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশে সুকুক বন্ডের সম্ভাবনা অনেক। সারা বিশ্বে এটি পুঁজি সংগ্রহের জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মুসলিমের বসবাস। এখানে অনেকেই শরিআহ ভিত্তিক লেনদেন করছে। তাই আমি আশা করি আরও অনেকে আছেন যারা সুকুক বন্ড ও অন্যান্য প্রোডাক্টে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত- উল- ইসলাম।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) আরব আমিরাতের দু্বাইয়ে ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজের আয়োজিত ৪ দিনব্যাপি রোড শো’র দ্বিতীয় দিন ‘সুকুক: দ্য নিউ ইনভেস্টমেন্ট অপরচ্যুনিটি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, সুকুক বন্ডে ফিক্সড সুদ নেই। এটি ট্রাস্টির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে মূলত বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। আর ওই প্রকল্পের মালিকানার অংশীদার হয় সুকুক বন্ডের বিনিয়োগকারীরা। যা অন্য বন্ডে সুযোগ নেই। এছাড়া সুকুক বন্ড ব্যর্থ হলে, ওই প্রকল্পের সম্পদ বিক্রি করে বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার সুযোগ থাকে।

তারা আরও জানান, বাংলাদেশের সুকুক বন্ড ইস্যুর অনেক সুযোগ রয়েছে। তবে এই বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে যেটা বড় প্রশ্ন হয়ে উঠতে পারে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার বিষয়টি। কারন তালিকাভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে একজন বিনিয়োগকারীর যখন খুশি, তখন বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার সুযোগ থাকে। তাই এই বন্ডের তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বলা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে সুকুক বন্ডের মতো পণ্যের অনেক চাহিদা রয়েছে। মুসলমানরা নির্দিষ্ট সুদের চেয়ে ইসলামিক প্রক্রিয়ায় আয় করতে চায়। যাতে করে বাংলাদেশে সুকুক বন্ড চালুর অনেক সুযোগ রয়েছে। এই বন্ড থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন ব্যবসাকে সহজ করে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। আমরা ভালো ব্যবসা করার জন্য সময়ক্ষেপন করতে চাই না। কারও সময় নষ্ট করা আমাদের লক্ষ্য না। আমরা দ্রুত ও সহজে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি ছাড়াই কাজ করে দিচ্ছি।

সুকুক বন্ডের বিষয়ে দেশের নীতিনির্ধারকরা ইতিবাচক জানিয়ে বিএসইসির এই চেয়ারম্যান বলেন, আমি দুবাই আসার আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃপক্ষ ও আর্থিক সচিবের সঙ্গে এ বিষয়ে সাক্ষাত করেছি। তারা সবাই সুকুক বন্ডের বিষয়ে ইতিবাচক। নীতিনির্ধারকরা যেহেতু ইতিবাচক, সেহেতু এই বন্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুবাইয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসুলেট মো. ইকবাল হুসাইন খান বলেন, বাংলাদেশে এখন বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে। সেখানে বিনিয়োগের দরকার। এই বিনিয়োগের চাহিদা সুকুক বন্ডের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। এসময় বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য দুবাইয়ের বিনিয়োগকারীদের প্রতি তিনি আহ্বান করেন। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য সঠিক সময়ে এবং সঠিক জায়গায় রোড শো করা হয়েছে বলে জানান এই কনসুলেট।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএসইসির কমিশনার কামালুজ্জামান, নির্বাহি পরিচালক মাহবুবুল আলম, বিএমবিএ সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, ইউসিবি ইনভেস্টমেন্টের সিইও তানজিম আলমগীর, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মাহতাবুর রহমান, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল ও ইউসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সিইও রাশেদুল হাসান।