তৌফিক ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতনের পর কিছুটা হলেও হতাশা কাটছে বিনিয়োগকারীদের। তবে লেনদেনের পরিমান না বাড়ায় এখনো পুরোপুরি আতঙ্কে কাটছে না। তবে বিনিয়োগকারীরা একটি স্থিতিশীল বাজারের জোর দাবী জানিয়েছেন। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমলেও লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে।

এমন উত্থানে পতনের হারিয়ে যাওয়া দর কিছুটা ফিরে পেলেও এখনও বহু শেয়ারে বড় অংকের লোকসানে বিনিয়োগকারীরা। সোমবার লেনদেনের শুরুর দিন সূচক কমেছিল ৯০ দশমিক ৭৭ পয়ন্টে। মঙ্গলবারও সূচক কমেছে ৬৭ দশমিক ৫ পয়েন্ট। এটা শুধু চলতি সপ্তাহের হিসাবে। আগের সপ্তাহের শেষের তিন কার্যদিবস টানা সূচক ও লেনদেন কমেছে পুঁজিবাজারে।

বুধবার ডিএসইর সূচক বেড়েছে ৬৭ দশমিক ৯২ পয়েন্ট। আর লেনদেন হয়েছে ৫৩০ কোটি টাকা। টানা পতনের মুখে প্রশ্ন উঠে পুঁজিবাজারে মার্চেন্ট ব্যাংকসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগাকারীদের অবস্থান নিয়ে।

জানা গেছে, আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৭.৯২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৮৫.৬৪ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৩.৯৭ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ৩৮.৮৩ পয়েন্ট এবং সিডিএসইটি ১৯.৭৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১২২০.৬৯ পয়েন্টে, ২০৫৬.৩৭ পয়েন্টে এবং ১১৪৬ পয়েন্টে।

আজ ডিএসই ৫৩০ কোটি ৩৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে ৬১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৯১ কোটি ৮১ লাখ টাকার। ডিএসইতে আজ ৩৪৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৯০টির বা ৫৫.৩৯ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ৩৫টির বা ১০.২০ শতাংশের এবং ১১৮টির বা ৩৪.৪০ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২১১.১১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫৯৪.৬৯ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ২১৬টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১২টির দর বেড়েছে, কমেছে ৪৮টির আর ৫৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ২৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

উত্থানেও বড় লোকসান বহু শেয়ারে: ১৫ ফেব্রুয়ারি রবির শেয়ার প্রতি দর ছিল ৪৬ টাকা। পাঁচ কার্যদিবস টানা দর পতনে নেমেছে ৩৬ টাকা ৮০ পয়সায়। বুধবার সেই শেয়ারের দর বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা ২০ পয়সা। একদিন আগে যারা রবির শেয়ার কিনেছে তারা ৩৯ টাকা ৩০ পয়সায় শেয়ার পেয়েছে। ফলে পুঁজিবাজারের এমন উত্থানেও রবিতে শেয়ার প্রতি লোকসান এখন এক টাকা ১০ পয়সা।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বেট বাংলাদেশ-বিএটিবিসি শেয়ার প্রতি দর ছিল ১ হাজার ৬২৫ টাকা। বুধবার শেয়ার প্রতি দর কিছুটা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৫২২ টাকা। এক সপ্তাহের আগের তুলনায় এখনও এই শেয়ারে লোকসান ১০৩ টাকা। বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার দরও টানা পাঁচ কার্যদিবস ধরে কমেছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি শেয়ার প্রতি দর ছল ১৯৪ টাকা ৫০ পয়সা। বুধবার দর বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা ২০ পয়সা। মানে এখনও লোকসানে ১৪ টাকা ৩০ পয়সা।

১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্রমাগত কমছে লংকাবাংলা ফিন্যান্সের শেয়ার দর। সেদিন শেয়ার প্রতি দর ছিল ৩৯ টাকা ১০ পয়সা। বুধবার শেয়ার দর বেড়ে হয়েছে ৩৪ টাকা ৪০ পয়সা। ফলে সূচকের উত্থান হলেও বিনিয়োগকারীরা লোকসানে ৪ টাকা ৭০ পয়সা। স্কয়ার ফার্মার শেয়ার দরও ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কমছে। ২২৬ টাকা ৬০ পয়সা। বুধবার দর বেড়ে হয়েছে ২১৪ টাকা ১০ পয়সা। ফলে এমন উত্থানেও বিনিয়োগকারীদের শেয়ার প্রতি লোকসান ১২ টাকা ৫০ পয়সা।

মীর আকতার হোসেন লিমিটেডের শেয়ার দর ১৭ ফেব্রুয়ারি ৮৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে ক্রমাগতভাবে কমে হয় ৭৪ টাকা ৩০ পয়সা। বুধবার দর বেড়েছে হয়েছে ৭৮ টাকা। এ সময় পর্যন্ত যেসব বিনিয়োগকারী শেয়ার ধরে রেখেছেন তার শেয়ার প্রতি লোকসান এখনও ৯ টাকা ৮০ পয়সা।