দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ছাড় নিয়ে খেলাপি ঋণ কম দেখাতে পারলেও মূলধন ঘাটতি থেকে বেরোতে পারছে না কয়েকটি ব্যাংক। গত ডিসেম্বর শেষে ১০ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা। এ পরিমাণ অর্থ দিয়ে ৫৮টি নতুন ব্যাংকের মূলধন জোগান দেওয়া সম্ভব। ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৭টি সরকারি ও ৩টি বেসরকারি খাতের। লভ্যাংশ দেওয়ার বিষয়টি মূলধন সক্ষমতার সঙ্গে জুড়ে দেওয়ায় এসব ব্যাংক এবার লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যয় কমানোর পাশাপাশি মূলধন সাশ্রয়ী ও তারল্য বাড়াতে সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী মুনাফা যত বেশিই করুক ১৫ শতাংশরে বেশি নগদ লভ্যাংশ দিতে পারবে না দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা মানতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন পুঁজিবাজারে তালিভুক্ত অধিকাংশ ব্যাংক।

প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় না নেওয়া ব্যাংকের মূলধন ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১৫ শতাংশের বেশি হলে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদসহ ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে বলে সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে পুঁজিবাজারে ১২ ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো হলো- ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও পূবালী ব্যাংক।

অন্যদিকে সাড়ে ১৩ থেকে ১৫ শতাংশের নিচে মূলধন থাকা ব্যাংক সাড়ে ১২ শতাংশ নগদসহ ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। এ তালিকায় রয়েছে- ইউসিবিএল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংক, প্রিমিয়ার ও এসআইবিএল ব্যাংক। এছাড়াও মূলধন ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে সাড়ে ১৩ শতাংশের নিচে হলে ওই ব্যাংক সাড়ে ৭ শতাংশ নগদসহ ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে।

এ তালিকায় রয়েছে- মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংক। আর ১০ দশমিক ৭২৫ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ৮৭৫ শতাংশের নিচে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যয় কমানোর পাশাপাশি মূলধন সাশ্রয়ী ও তারল্য বাড়াতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো বলে ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকের পর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ও তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ইচ্ছামতো লভ্যাংশ দিতে পারবে না বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।