দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো: ছায়েদুর রহমান বলেছেন, আইপিও শেয়ার লেনদেনের শুরুতেই যখন শেয়ার দর ৩০ টাকা বা ৪০ টাকা হয়, তখন আইপিও শিকারীরা বিক্রি করে টাকাটা নিয়ে চলে যাচ্ছে। তারা মূলত ক্রিমটা নিয়ে ভেগে পড়ছে।

সোমবার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ভবনে ইস্যু ম্যানেজারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ‘রোল অব ইস্যু ম্যানেজারস আইপিও অ্যাপ্লিকেশন’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। আর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

ছায়েদুর রহমান বলেন, ২০০৫ বা ২০০৬ সাল পর্যন্ত কোনো আইপিওর ১০০ টাকার শেয়ার ২০০ টাকা হয় নাই। দুই-একটা হয়ে থাকলে হতে পারে। একটা আমার মনে আছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ৫০ টাকা প্রিমিয়ামে আসছিল, সেজন্য ওইটার দর ২০০ টাকা হয়েছিল।

কিন্তু আজকে আপনি আলু, পটল যাই নিয়ে আসুন না কেন, সেটার দাম চার থেকে পাঁচ গুন হয়ে যাচ্ছে। যখন চার থেকে পাঁচ গুন হচ্ছে, সেই টাকাটা কিন্তু আইপিও শিকারীদের মাধ্যমে মার্কেটের বাইরে চলে যাচ্ছে। আজকে কোনো কোম্পানি লিস্টিং হওয়ার পরে যদি ১০ টাকার শেয়ার ১২ টাকায় ট্রেড হতো, এক বছর পরে ডিভিডেন্ড ডিক্লারেশন হলে সেটা বাড়ত। তাহলে ডিভিডেন্ডের জন্য বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ধরে রাখতো।

শেয়ার দর কেনো ১২ টাকায় বা ১৫ টাকায় না হয়ে সেটা ২৩ টাকায় বা ৪০ টাকায় হচ্ছে। কমিশনের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আগের কমিশন ৫০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার দিয়ে গেল। কিন্তু সেটাও দেখা গেল কাজ করছে না। সকাল বেলা পৌনে ১০টার সময় ৫০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমায় অফার দিয়ে রাখে।

এর আগে আইপিও রুলের যখন পরিবর্তন হয়েছে, সেখানেও প্রথম দিনেই ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বেশি করার প্রস্তাব দিয়েছি উল্লেখ করে বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, আজকে যদি রবির প্রথম দিন সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার শেয়ার এভেইলেবল থাকতো, তাহলে কি ৭০ টাকায় শেয়ার নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতো কেউ। কেউ দেখতো না। তাহলে যে বিনিয়োকারী ৭০ টাকায় কিনে আজকে ৪০ টাকায় বা ৪৫ টাকায় আসার পরে কান্নাকাটি করছে।

তাকে কে ৭০ টাকায় কিনতে পরামর্শ দিয়েছে। আজকে এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারী আছে, যারা বলছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সেল করে দিচ্ছে। আচ্ছা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সেল করবে না তো কি করবে, তারা কি আপনাদের দায়িত্ব নিয়েছে যে স্মল বিনিয়োগকারীদের প্রফিট করিয়ে দিবে। এই যে অন্ধের হাতি দেয়ার মতো একেক পাশ থেকে একেক সমালোচনা করি, এই সমালোচনা থেকে আমাদের বের হতে হবে।

বিএসইসির প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ছায়েদুর রহমান বলেন, প্রথম দিনে কিভাবে শেয়ারের সাপ্লাই দিবে, যেহেতু আমাদের এখানে আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। স্পন্সর বা ডিরেক্টরদের ৩০ শতাংশ শেয়ার হোল্ড করতে হবে। এই ৩০ শতাংশ শেয়ার বাদে বাকি ৭০ শতাংশ ফ্রি করে দেন। প্রথম দিন থেকে আমরা কিভাবে এই সাপ্লাইকে বাড়াতে পারি এবং যদি নিচ থেকে প্রাইস ক্রিয়েট হয় তাহলে কাউকে নিয়ে কোনো সমালোচনা হবে না।