দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে সংগ্রহীত অর্থের ১৫ শতাংশ শেয়ার প্রাইভেট প্লেসমেন্ট বা পছন্দের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ইস্যুর সুযোগ রেখে সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলসের খসড়া প্রকাশ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর মাধ্যমে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে ১০ টাকা দরে ও বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কাট-অব প্রাইসে ইস্যু করা যাবে। সোমবার শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত চেয়ে বিএসইসির ওয়েবসাইটে সংশোধিত পাবলিক ইস্যু রুলসের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) এ তথ্য জানা গেছে।

খসড়া অনুযায়ী, কোনো কোম্পানি আইপিওতে ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায়, তার ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ৭.৫০ কোটি টাকার শেয়ার প্রাইভেট প্লেসমেন্টে ইস্যু করা যাবে। যেসব শেয়ার ইস্যুয়ার তার পছন্দের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে ইস্যু করতে পারবে। কোম্পানির শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর আগে অন্যদের সঙ্গে বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে এই শেয়ার লক-ইন থাকবে। আইপিওতে আসা কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ধারণ করা শেয়ার এক বছর ও প্রাইভেট প্লেসমেন্টের শেয়ার দুই বছরের লক-ইন থাকবে বলে খসড়া পাবলিক ইস্যু রুলসে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া বোনাস শেয়ার ছাড়া অন্যভাবে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো কোম্পানিকে আইপিওতে আসার জন্য কমপক্ষে দুই বছর অপেক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। কোনো কোম্পানি আইপিও আবেদনের আগের দুই বছরে বোনাস শেয়ার ইস্যু ছাড়া অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে পারবে না বলে খসড়া আইনে রাখা হচ্ছে।

কোম্পানির মুনাফার স্বচ্ছতা আনার জন্য ভ্যাট চালান ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। সংশোধিত খসড়ায় আইপিও আবেদনে কোম্পানিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ভ্যাট চালান সংগ্রহ করে, তার সার্টিফায়েড কপি কমিশনে জমা দেওয়ার কথা খসড়া আইনে বলা হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যাংক স্টেটমেন্টও জমা দিতে হবে। কমিশন প্রয়োজনে ভ্যাট চালান ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট এনবিআর ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যাচাই করবে।

সংশোধিত খসড়ায় আইপিওর ৭০ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ প্রবাসি বাংলাদেশিদের জন্য।

এদিকে, আইপিও আবেদনকারী কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ভিত্তিতে শেয়ার ছাড়ার পদ্ধতি আরোপ করতে যাচ্ছে কমিশন। এজন্য বিদ্যমান পাবলিক ইস্যু রুলসের সংশোধনীর খসড়াতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সংশোধনীর খসড়ায় আইপিও পরবর্তী যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা পর্যন্ত উন্নীত হবে, সেসব কোম্পানির ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে।

এছাড়া আইপিও পরবর্তীতে যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা থেকে ১৫০ কোটি টাকা হবে, সেসব কোম্পানিকে পরিশোধিত মূলধনের অন্তত ২০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে। আর আইপিও পরবর্তীতে যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকার বেশি হবে, আইপিওতে সেসব কোম্পানিকে অন্তত ১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে।