দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সরকার ঘোষিত সাত দিনের লকডাউন শুরু হচ্ছে সোমবার। এই আতঙ্কে রোববার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যেই সূচক ১২৫ পয়েন্ট পড়লেও বেলা ১ টা ৪৮ মিনিটের সময় ১৭৫ পয়েন্ট সূচক উধাও। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সরকারের এমন উদ্যোগে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কেরই আভাস দিলেন। সূচকের পাশাপাশি এদিন কমে গেছে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর।

দেখা গেছে, লেনদেন শুরুর ১৫ মিনিটে ডিএসইএক্স ১২৫ দশমিক ০৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫১৪৫ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২৮ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১১৭৪ দশমিক ০১ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস ৩০ সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ১৯২২ দশমিক ৬৫ পয়েন্টে। এ সময়ে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। আর মাত্র চারটি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে এ সময়ের মধ্যে। সরকারি ছুটির দ্বিতীয় দিন শনিবার সরকারের পক্ষ থেকে লকডাউন দেয়ার ঘোষণা আসে।

তারপরই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কোভিড-১৯ মহামারিকালসহ যেকোনো সময় ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু থাকলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে পুঁজিবাজারের সব লেনদেন চালু থাকবে৷ এ ব্যাপারে বিনিয়োগকারীদের কোনো রকম গুজবে কান না দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক খোলা থাকলে চলবে পুঁজিবাজারের লেনদেন।’ এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের সরাসরি ব্রোকারেজ হাউজে না গিয়ে ডিজিটাল প্লাটফর্মে- মোবাইল অ্যাপ বা মোবাইলে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের পরামর্শ দেন তিনি। রাজধানীতে রোববারও এক অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান লেনদেন বন্ধ হবে না বলে জানান। এমন বক্তব্যেও খুব বেশি প্রভাব পড়েনি পুঁজিবাজারে। আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা বাজার পর্যবেক্ষণসহ খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে না নতুন বিনিয়োগে।

পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী মোজাম্মেল হক বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সাতদিনের কথা বলা হলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউন বাড়ানো হতে পারে বলে আভাস দেয়া হয়েছে। ফলে এই লকডাউন কবে শেষ হবে তার স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার বর্তমানে যে অবস্থায় আছে তাতে আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার কোনো কারণ দেখছি না। বরং লকডাউন শেষ হওয়ার পর পুঁজিবাজার আবারও ঘুরে দাঁড়াবে সে প্রত্যাশা করা যায়।

প্রথমবার লকডাউন পরবর্তী লেনদেনে তাই হয়েছিল।’ লকডাউনে সরকারের পক্ষ থেকে শুধু জরুরি সেবা প্রদান করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকার কথা বলা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি শিল্প-কলকারখানা খোলা থাকবে। যাতে করে শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং বিভিন্ন শিফটিং এর মাধ্যমে তারা কলকারখানায় কাজ করতে পারেন।

সরকারের লকডাউন ঘোষণার পর শনিবার ডিএসই পরিচালনা পষর্দের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, রোববার থেকে ডিএসইর প্রি-ওপেনিং সেশন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ফলে এখন থেকে লেনদেন শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট আগে যেসব বিনিয়োগকারী ও ব্রোকারেজ হাউজগুলো শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের আদেশ দিয়ে থাকেন, সেটি এখন আর দেয়া যাবে না।