দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইনটেক লিমিটেডের আর্থিক হিসাবে মুনাফা বাড়িয়ে দেখানোর জন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ইনটেক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সিইও) মির্জা আমিনুল ইসলাম বেগ এর কাছে কমিশনের পাঠানো এক চিঠিতে এই অনিয়মের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

জানা গেছে, ইনটেক লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবে ডেফার্ড টেক্স ইনকাম হিসেবে ৩০ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬৪ টাকা দেখিয়েছে। কিন্তু হিসাব মান অনুযায়ি এর বিস্তারিত আর্থিক হিসাবে তুলে ধরা হয়নি।

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ফিশারিজ ইউনিট ও সফটওয়্যার ইউনিট এর সব আয়কে করমুক্ত সুবিধার অন্তর্ভূক্ত বলে আর্থিক হিসাবে উল্লেখ করেছে। এ হিসেবে আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-১২.৭ অনুযায়ি, ওই করমুক্ত আয়ের সংশ্লিষ্ট সম্পদের ক্ষেত্রে কোন ডেফার্ড টেক্স দেখানোর সুযোগ নেই।

তবে ইনটেক কর্তৃপক্ষ ফিশারিজ ইউনিট ও সফটওয়্যার সম্পদের উপর ভিত্তি করে আর্থিক হিসাবে ডেফার্ড টেক্স ইনকাম হিসেবে ৩০ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬৪ টাকা দেখিয়েছে। যা প্রকৃতপক্ষে কোম্পানির নিট মুনাফায় প্রভাব ফেলেছে। এর মাধ্যমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হিসেবে প্রায় ০.১১ টাকা বেশি দেখানো হয়েছে। এর মাধ্যমে আর্থিক হিসাবে অনিয়ম হয়েছে। যা শেয়ারহোল্ডারসহ আর্থিক হিসাব বিবরণী সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারদেরকে ভুলভাবে প্রভাবিত করেছে।

এ বিষয়ে ইনটেক কর্তৃপক্ষ কমিশনে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি এবং কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা এই অভিযোগ থেকে নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণ ব্যর্থ হয়েছেন বলেও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের অনিয়মের কারনে কোম্পানির সাধারন বিনিয়োগকারীসহ স্টেকহোল্ডাররা প্রকৃত আর্থিক অবস্থার তথ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

ইনটেক লিমিটেড একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি ও পরিচালকেরা তার প্রতিনিধিত্বকারী। যারা সিকিউরিটিজ আইন ও বিধিবিধান পরিপালনে ব্যর্থতার জন্য দায়ী। যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাদের ব্যর্থতার কারনে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে। যা শেয়ারবাজারের উন্নয়নের পরিপন্থী বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ইনটেক লিমিটেডের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬৯.৮৬ শতাংশ।