দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যাবসা ও মুনাফা দুটোই বেড়েছে। ব্যবসা ও মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়ার চলতি ২০২১ হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৩ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি ২০২১ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি মুনাফা করেছে ৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৪ পয়সা। প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ৮২.৬৮ শতাংশ। অন্যদিকে, এ সময়ে ব্যবসা বেড়েছে ১.৭১ শতাংশ।

অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে রবি আজিয়াটার প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৮০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় ছিল ১ হাজার ৯৪৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির সুদ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৯৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে এ খাতে ব্যয় ছিল ১২১ কোটি ২২ লাখ টাকা।

আর চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির কর বাবদ ব্যয় হয়েছে ১১২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে এ খাতে ব্যয় হয়েছিল ১২৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। প্রথম প্রান্তিকে কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৩৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪ পয়সা। চলতি বছরের ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৬৬ পয়সা।

প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফলের ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৩ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে রবি আজিয়াটা। বিনিয়োগকারী বাছাইয়ে রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে এ বছরের ২ মে। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ডের সুপারিশ করেনি রবি আজিয়াটা।

আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৩ পয়সা, এর আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৯০ পয়সা, এর আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১২ টাকা ৬৪ পয়সা। কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ভার্চুয়াল মাধ্যমে আগামী ১২ এপ্রিল বেলা ৩টায় এজিএম অনুষ্ঠিত হবে।

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের এনটিটি সার্ভিল্যান্স রেটিং “ডাবল এ”। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, আলোচ্য সময় পর্যন্ত ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানটির দায়সহ হালনাগাদ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিআরএবি)। দেশের পুঁজিবাজারে গত ২৪ ডিসেম্বর রবির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৪১তম কমিশন সভায় রবিকে ১০ টাকা ইস্যু মূল্যে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেয়া হয়। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করছে রবি। আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত তহবিল থেকে প্রতিষ্ঠানটি ৫১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও বাকি ৮ কোটি ২ লাখ টাকা আইপিওর ব্যয় নির্বাহ খাতে খরচ করবে। রবি আজিয়াটার অনুমোদিত মূলধন ৬ হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫ হাজার ২৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ২৩৬ কোটি ২ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৫। এর মধ্যে ৯০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। এছাড়া ২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে। সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে রবির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ১৫৩৬.৬৭, হালনাগাদ প্রান্তিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১৩৯.৭০।