দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: নির্বাচনী প্রচারণার সময় তার আবেগঘন বক্তব্যে আকৃষ্ট হয়েছিলেন আইনজীবীরা। তিনি বলেছিলেন, এবার যদি হেরে যাই তাহলে আমার হ্যাট্রিক হবে। তাই আইনজীবীদের কাছে আমি শেষবারের মতো ভোট চাই। আইনজীবীরা নেতা চিনতে ভুল করেননি। গত ১২ মার্চের নির্বাচনে আব্দুল মতিন খসরু বিপুল ভোটে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি নির্বাচিত হন। গত ১৪ মার্চ আইনজীবীদের অধিকার প্রশ্নে জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখেন। এরপর থেকেই তার শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। ১৬ মার্চ করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে হাসপাতালে ভর্তি হন।

হাসপাতালে থাকা অবস্থায় গত ১২ এপ্রিল মতিন খসরুর নেতৃত্বাধীন নতুন কমিটি দায়িত্ব বুঝে নেয়। ওই দিনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষে আব্দুল মতিন খসরুর নাম ফলক টাঙানো হয়। সেই কক্ষে তিনি বসতে পেরেছিলেন। কিন্তু তার বসা হলো না কক্ষে থাকা সভাপতির চেয়ারে।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকারী ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, গত ১২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। নতুন কমিটির সভাপতি সেদিন উপস্থিত ছিলেন না। তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব গ্রহণের আগেই মারা গেলেন। এটা আইনজীবীদের জন্য খুবই কষ্টের।

বুধবার বিকেল চারটা ৪৫ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু মারা যান (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম ও কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু গত ১৫ মার্চ সংসদ সচিবালয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ১৬ মার্চ সকালে তার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। ওইদিনই তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।

গত ২৮ মার্চ রাত ১২টার দিকে আব্দুল মতিন খসরুকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে ১ এপ্রিল করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসে। গত ৩ এপ্রিল অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরুকে সিএমএইচের আইসিইউ থেকে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। ৬ এপ্রিল সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আব্দুল মতিন খসরু আর নেই: করোনা আক্রান্ত হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী অ্যাডভোকেট মো. মহিন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম ও কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু গত ১৫ মার্চ সংসদ সচিবালয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ১৬ মার্চ সকালে তার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। ওইদিনই তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।

গত ২৮ মার্চ রাত ১২টার দিকে আব্দুল মতিন খসরুকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে ১ এপ্রিল করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসে। গত ৩ এপ্রিল অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরুকে সিএমএইচের আইসিইউ থেকে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। ৬ এপ্রিল সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির শোক: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বুধবার (১৪ এপ্রিল) শোক বার্তায় তিনি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু মৃত্যুতে‌ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি জনাব সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করে প্রধান বিচারপতি শোক বার্তায় জানান, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু অত্যন্ত নির্লোভ, নিরহংকারী এবং সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তার অসামান্য অবদান রয়েছে। আইন অঙ্গনের সকলেই তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবেন।

সংক্ষিপ্ত জীবনী: আব্দুল মতিন খসরু ১৯৫০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মিরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মো. আবদুল মালেক এবং মাতা জাহানারা বেগম। তারা চার ভাই, এক বোন। আব্দুল মতিন খসরু ব্যক্তিজীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। আব্দুল মতিন খসরু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৬-২০০১ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৬ সালে সংবিধান ও মানবতাবিরোধী কালো আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যবস্থা করেন তিনি। পরবর্তীকালে সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারবর্গের আত্মস্বীকৃত খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।

বাংলাদেশের বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থাকে আমূল সংস্কার ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে তিনি আইনমন্ত্রী থাকাকালীন বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যান্ড জুডিশিয়াল ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোজেক্ট নামে ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এনেক্স ভবন এবং অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ভবন নির্মাণের সমূদয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন, যা পরবর্তীতে বাস্তবায়িত হয়।

হাইকোর্টের মূল ভবন ও পুরাতন ভবনের মধ্যে যাতায়াত সুবিধার জন্য একটি গ্যাংওয়ের নির্মাণ করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট এনেক্স ভবনসহ সারা বাংলাদেশে বিচারালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেন। ১০ম ও ১১তম জাতীয় সংসদে (২০১৭ সাল থেকে অদ্যাবধি) তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১২ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে তিনি সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন এবং ২০১৫ সালে পুনরায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। বার কাউন্সিলের সদস্য থাকাকালে তিনি আইনজীবীদের কল্যাণে ১৫ তলা বিশিষ্ট একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন যা বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে। কুমিল্লা-৫ আসন থেকে তিনি ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।