দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সকল শঙ্কা ও কল্পনা এবং গুজবের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হয়েছে। করোনার প্রকোপ রোধে সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় দফা বিধিনিষেধের মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের শুরুর প্রথম ১০ মিনিটে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ২৩ পয়েন্ট।

বিমা, মিউচুয়াল ফান্ড ও ওষুধ খাতের শেয়ারের দাম বৃদ্ধির মধ্যদিয়ে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন চলছে। এ সময়ে স্বাভাবিক লেনদেন হতে দেখা গেছে পুঁজিবাজারে। সূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৫১ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৫৪৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

এদিকে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন। এর মাঝে নানা নাটকীয়তার মধ্যে শেষ পর্যন্ত চালু রাখা হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন। চলমান পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা যেন সহজে নিজ কর্মস্থলে যেতে পারেন, এ জন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়।

নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থায় মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৫০ শতাংশের উপস্থিতিতে চলছে ডিএসইর কার্যক্রম। সরকারের সর্বাত্মক লকডাউনে জনসাধারণের চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যাতায়াতে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানিয়েছেন ডিএসইর উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান।

৫ এপ্রিল থেকে প্রথমে এক সপ্তাহের বিধিনিষেধ জারি হলে পুঁজিবাজারে লেনদেন চালু করতে ব্রোকারেজ হাউজের কর্মীরা যাতায়াতে কোনো সমস্যায় পড়েননি। সে সময়ে আসলে পুলিশ কাউকে বাধা দেয়নি।

তবে এবার কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতার কারণে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ ছিল। কারণ, পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকার যে তালিকা দেয়া হয়েছে, তাতে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কথা লেখা ছিল না।

এই অবস্থায় বিএসইসির যুগ্ম পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ হোসেন খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার কর্তৃক বিধিনিষেধের মধ্যে ব্যাংকের পাশাপাশি পুঁজিবাজার চালু থাকবে। বিএসইসি ও পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

এ সময়ে বিএসইসি ও পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের দাপ্তরিক যাতায়াত আরোপিত বিধিনিষেধের আওতামুক্ত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

পাঁচ কোম্পানির লভ্যাংশের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভার তারিখ জানিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানি পাঁচটি হলো : এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।

এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এনসিসি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা ২৬ এপ্রিল বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে কোম্পানিটির গত ১২ এপ্রিল বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনিবারয কারণে কোম্পানিটি পর্ষদ সভা স্থগিত করেছে।

সভায় ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। ২০১৯ সাল কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৭ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

জনতা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জনতা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আজ ১৫ এপ্রিল দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনিবারয কারণে কোম্পানিটি পর্ষদ সভা স্থগিত করেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, পর্ষদ সভার নতুন তারিখ ও সময় পরবর্তী নোটিসের মাধ্যমে জানানো হবে।

সভায় ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। একই সভায় কোম্পানির প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পরযালোচনা ও প্রকাশ করা হবে।
২০১৯ সাল কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ২৮ এপ্রিল বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। ২০১৯ সাল কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

ইসলামী ইন্স্যুরেন্স: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইসলামী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ২৯ এপ্রিল বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। ২০১৯ সাল কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ২৬ এপ্রিল দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। একই সভায় কোম্পানির প্রথম প্রান্তিকের অনীরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদনও পরযালোচনা করা হবে। ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স ২০২০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

আইপিও ফান্ড ব্যবহারে সময় পেয়েছে এডিএন টেলিকম: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এডিএন টেলিকমের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ফান্ড ব্যবহারের পরিবর্তন এবং এই ফান্ড ব্যবহারে আরো দুই বছর সময় বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, বিএমআরই এর অধীনে ফান্ডের ২৮ কোটি ৮৫ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৮ টাকা ব্যবহারে আরো দুই বিছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

ডাটা সেন্টারের ঠিকানা পরিবর্তন কাজে ৩ কোটি ২৬ লাখ ৩২ হাজার ৮১৩ টাকা ব্যবহারে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সিটি ব্যাংকের ১ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ৩১ টাকার লোন যত তাড়াতারি সম্ভব পরিশোধ করার অনুমোদন পেয়েছে কোম্পানিটি।