দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ শেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে লঞ্চও চালাতে চান মালিকেরা। সরকারের কাছে মালিকদের পক্ষে এমন দাবি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

মারণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর লকডাউন শেষ হচ্ছে আগামী ২৮ এপ্রিল মধ্যরাতে। তবে মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৫ এপ্রিল) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। ২৯ এপ্রিল থেকে বাস চালানোর দাবি জানিয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্ট।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হচ্ছে। লকডাউনের মেয়াদ আর বাড়ছে না। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে কঠোর হবে সরকার। আজ শনিবার (২৪ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চলমান লকডাউনের পরে জনস্বার্থ বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে সরকার গণপরিবহন চালুর সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।

আজ শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা লঞ্চ চালু করার দাবি জানিয়েছি। ২৯ এপ্রিল থেকে আমরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চালাতে চাই। নদীতে তো করোনা নেই। আগেও যখন আমরা লঞ্চ চালিয়েছি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চালিয়েছি। যাত্রীরাও আমাদের সহযোগিতা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কিছুদিন ধরেই লঞ্চ চালু করার আবেদন জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের কথা শোনেনি। আমরা বলেছি, ছোট ছোট লঞ্চগুলো যেগুলো কাছাকাছি দূরত্বে চলাচল করে, এই লঞ্চের মালিকরা অনেকটা দিনে আনে দিনে খায়, এদের অবস্থা খুবই খারাপ। এই ধরনের লঞ্চের সংখ্যা সাড়ে ৬০০’র মতো। যখন ঢাকার মধ্যে বাস ছাড়ল আমরা বলেছি, ছোট ছোট লঞ্চগুলো যেগুলো ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলাচল করে সেগুলো চলতে দেওয়া হোক। কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দীন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘লঞ্চ চলবে কী চলবে না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তারা অনুমোদন দিলে লঞ্চ চলবে। তবে মালিকদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা সচেতন আছি। আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গেও কথা বলব।’ ‘সিদ্ধান্ত মূলত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেই আসবে, সেটাই আমরা ফলো করব’ বলেন নৌপরিবহন সচিব।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়ে কিছু বলার নেই, সরকারের নির্দেশনা আমরা ফলো করব। সরকার যদি ২৯ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন খুলে দেয় তবে লঞ্চও চলবে। আমাদেরও সেভাবে প্রস্তুতি আছে।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সরকারি নির্দেশনার প্রেক্ষাপটে গত ১ এপ্রিল থেকে লঞ্চে ডেকের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়। পরে ৫ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন দেওয়া হলে ওই দিন থেকে যাত্রীবাহী নৌযান (লঞ্চ) চালাচল বন্ধ রয়েছে।’