দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্সুরেন্স (বিএনআইসিএল) লিমিটেড ২০২০ হিসাব বছরের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। কোম্পানি সচিব মাসুদ রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৩২ পয়সা।

৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য(এনএভি) হয়েছে ২০ টাকা ১৭ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ৫ টাকা ১৯ পয়সা। আগামী ২২ জুন কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ মে।

এদিকে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্সুরেন্স লিমিটেড (বিএনআইসিএল) চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫৬ পয়সা।

৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ২১ টাকা ২২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ২০ টাকা ১৭ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ১ টাকা ৮৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫২ পয়সা।

৩২ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩২ কোম্পানি লভ্যাংশ এবং প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ সংক্রান্ত পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভার তারিখ জানিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলো হলো : স্যোসাল ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ম্যারিকো, বারাকা পাওয়ার, ইন্দো-বাংলাা ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনডেক্স এগ্রো, নিউ লাইন ক্লোথিংস,

গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, ডরিন পাওয়ার, মতিন স্পিনিং, মালেক স্পিনিং, রহিম টেক্সটাইল, ভিএফএস থ্রেড ডাইং, ড্রাগন সোয়েটার, কেঅ্যান্ডকিউ, দুলামিয়া কটন, কেডিএস এক্সেসরিজ, শেফার্ড, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, কাট্টালি টেক্সটাইল, ন্যাশনাল টিউবস, ন্যাশনাল টি, উসমানিয়া গ্লাস, এমজেএলবিডি, সেন্ট্রাল ফার্মা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এবং আইডিএলসি।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্যোসাল ইসলামী ব্যাংকের ২৯ এপ্রিল দুপুর দেড়টায়, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ২৯ এপ্রিল দুপুর ২.৩০টায়, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ২৯ এপ্রিল দুপুর ২টায়, ম্যারিকোর ২৭ এপ্রিল বিকাল ৪টায়, বারাকা পাওয়ারের ২৯ এপ্রিল বিকাল ৫টায়,

ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের ২৯ এপ্রিল দুপুর ২টায়, ইনডেক্স এগ্রোর ২৮ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, নিউ লাইন ক্লোথিংসের ২৯ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের ২৯ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, ডরিন পাওয়ারের ২৯ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, মতিন স্পিনিংয়ের ২৯ এপ্রিল দুপুর ২টায়,

মালেক স্পিনিংয়ের ২৯ এপ্রিল দুপুর ২টায়, রহিম টেক্সটাইলের ২৯ এপ্রিল দুপুর ২.৩৫টায়, ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ২৮ এপ্রিল দুপুর দেড়টায়, ড্রাগন সোয়েটারের ২৮ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, কেঅ্যান্ডকিউয়ের ২৯ এপ্রিল দুপুর ২.৩৫টায়, দুলামিয়া কটনের ২৯ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৩টায়,

কেডিএস এক্সেসরিজের ২৮ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, শেফার্ডের ২৯ এপ্রিল দুপুর দেড়টায়, সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের ২৯ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৩টায়, কাট্টালি টেক্সটাইলের ২৮ এপ্রিল দুপুর দেড়টায়, ন্যাশনাল টিউবসের ২৭ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, ন্যাশনাল টির ২৮ এপ্রিল দুপুর ২টায়, উসমানিয়া গ্লাসের ২৮ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, এমজেএলবিডির ২৮ এপ্রিল দুপুর ২টায়, সেন্ট্রাল ফার্মার ২৯ এপ্রিল বিকাল ৪টায়,

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ২৮ এপ্রিল দুপুর ২টায়, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ২৮ এপ্রিল দুপুর দেড়টায়, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২৯ এপ্রিল দুপুর দেড়টায়, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ২৮ এপ্রিল দুপুর ১টায়, হাইডেলবার্গ সিমেন্টেরর ২৮ এপ্রিল দুপুর ২.৪৫টায় এবং আইডিএলসির বোর্ড সভা ২৯ এপ্রিল বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্যোসাল ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও ম্যারিকোর বোর্ড সভায় লভ্যাংশ এবং বারাকা পাওয়ার, ইন্দো-বাংলাা ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনডেক্স এগ্রো, নিউ লাইন ক্লোথিংস, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, ডরিন পাওয়ার, মতিন স্পিনিং, মালেক স্পিনিং, রহিম টেক্সটাইল, ভিএফএস থ্রেড ডাইং, ড্রাগন সোয়েটার, কেঅ্যান্ডকিউ, দুলামিয়া কটন, কেডিএস এক্সেসরিজ,

শেফার্ড, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, কাট্টালি টেক্সটাইল, ন্যাশনাল টিউবস, ন্যাশনাল টি, উসমানিয়া গ্লাস, এমজেএলবিডি, সেন্ট্রাল ফার্মা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ও আইডিএলসির বোর্ড সভায় প্রান্তিক সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তা শেয়ারহোল্ডারদের জন্য প্রকাশ করা হবে।

ব্লক মার্কেটে লেনদেনের শীর্ষে ৩ কোম্পানি: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (২৫ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ২৬টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ১৮৭ কোটি ৮৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর ১ কোটি ৬১ লাখ ১৫ হাজার ১২০টি শেয়ার ৭২ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ১৮৭ কোটি ৮৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৫৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ারের শেয়ার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৫ কোটি ৪ লাখ টাকার গ্রামীণ ফোন এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩১ লাখ ৮৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল ফিড মিল লিমিটেডের শেয়ার।

এছাড়া শাহজিবাজার পাওয়ারের ১৬ কোটি ৪ লাখ ৮১ হাজার টাকার শেয়ার, বেক্সিমকো ফার্মার ৫ কোটি ১৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকার শেয়ার, স্কয়ার ফার্মার ১ কোটি ৯০ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার, সেন্ট্রাল ইন্সুরেন্সের ১ কোটি ৮২ লাখ ৭৯ হাজার টাকার শেয়ার, বিডি থাইয়ের ১ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার, ইস্টার্ণ ইন্সুরেন্সের ১ কোটি ৬ লাখ ১৩ হাজার টাকার শেয়ার, জেনেক্স ইনফোসিসের ৮৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকার শেয়ার, প্রভাতী ইন্সুরেন্সের ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার, প্রগ্রেসিফ লাইফের ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকার শেয়ার,

প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্সের ৪৬ লাখ ৭৩ হাজার, শাইন পুকুর সিরামিকসের ২৫ লাখ টাকার শেয়ার, মুন্নু সিরামিকসের ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার, এডিএন টেলিকমের ১১ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার, মীর আখতারের ৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকার শেয়ার, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার, পূরবী জেনারেলের ৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকার শেয়ার, এসএস স্টিলের ৫ লাখ ১৩ হাজার টাকার শেয়ার,

ই-জেনারেশনের ৫ লাখ ১১ হাজার টাকার শেয়ার, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৫ লাখ ১১ হাজার টাকার শেয়ার, এক্সপ্রেস ইন্সুরেন্সের ৫ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার, স্টানডার্ড ইন্সুরেন্সের ৫ লাখ ৬ হাজার টাকার শেয়ার, এবং বেক্সিমকো লিমিটেডের ৫ লাখ ২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

পুঁজিবাজারে উত্থানের নেপথ্যে চার খাতের দাপট: পুঁজিবাজার বড় পতনের পর ৯ কার্যদিবস ধরে উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন চলছে। সূচকের পাশাপাশি বাড়ছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। পাশাপাশি লকডাউনের মধ্যে লেনদেন রয়েছে বেশ সন্তোষজনক অবস্থায়। প্রকৌশল, বস্ত্র, টেলিযোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের শেয়ারের দাম বাড়ায় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (২৫ এপ্রিল) দেশের পুঁজিবাজারে উত্থান হয়েছে। এদিন লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় সূচক ও লেনদেন দুই বেড়েছে। এর ফলে টানা নয় কার্যদিবস পুঁজিবাজারে উত্থান হলো।

তার আগে চলতি মাসের ১১ এপ্রিল ‘লকডাউনে’ পুঁজিবাজার বন্ধ থাকতে পারে এমন খবরে দরপতন হয়েছিল। তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছিল ৯০ পয়েন্ট। তবে ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পুঁজিবাজারও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৯ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এই নয়দিনই পুঁজিবাজারে উত্থান হয়েছে।

রোববার বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, টেলিযোগাযোগ খাতের তিন কোম্পানি গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারের দাম বেড়েছে। তাতে সূচক বৃদ্ধিতে এই খাতের অবদান প্রায় ১৮ শতাংশ।

এছাড়াও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ৫টির, আর অপরিবর্তীত রয়েছে পাঁচটির। লেনদেন হয়নি একটির। বস্ত্র খাতের ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৯টির, কমেছে ১১টির, আর অপরিবর্তীত রয়েছে ছয়টির।

অন্যদিকে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২২টির, কমেছে ১১টির, আর অপরিবর্তীত ছিল ৯টির। অর্থাৎ এই চার খাত রোববার সূচক বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি। আর তাতে বড় উত্থান হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যমতে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৩ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৯৮ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১৮ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৩০ দশমিক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১১৭ পয়েন্টে।

এদিন লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২০১টির, কমেছে ৭৮টির, অপরিবর্তীত রয়েছে ৭৮টির। মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৮৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে ৩শ কোটি টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে ডিএসইতে।

রোববার ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল- বেক্সিমকো, বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, রেনেটা, বিডি ফাইন্যান্স, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, রবি আজিয়াটা, ঢাকা ও এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৪৪ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৮৬৭ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩২টির, কমেছে ৬৩টির, আর অপরিবর্তীত রয়েছে ৪১টির। লেনদেন হয়েছে মোট ৬২কোটি ৮৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।

জনতা ইন্স্যুরেন্সের শেষ প্রান্তিকে মুনাফায় ধস: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জনতা ইন্স্যুরেন্সের ২০২০ সালের প্রথম ৩টি প্রান্তিকের ব্যবসায় ভালো করলেও শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০) ধস নেমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিটির ২০২০ সালের ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছিল ১.১১ টাকা। এক্ষেত্রে গড়ে প্রতিটি প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছিল ০.৩৭ টাকা। তবে বছরের শেষ প্রান্তিকে এই ইপিএস নেমে এসেছে ০.১৪ টাকায়।

ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ি, কোম্পানিটির ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছিল ০.৪০ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে ০.৩০ টাকা ও তৃতীয় প্রান্তিকে ০.৪১ টাকা হয়েছিল। তবে শেষ প্রান্তিকে এই ইপিএস কমে এসেছে ০.১৪ টাকায়। যাতে করে পুরো বছরে ইপিএস হয়েছে ১.২৫ টাকা। শেষ প্রান্তিকে ধস সত্ত্বেও কোম্পানিটির আগের বছরের তুলনায় ২০২০ সালে মুনাফা বেড়েছে। আগের বছরের ১.০৮ টাকার ইপিএস এ বছর বেড়ে হয়েছে ১.২৫ টাকা।

কোম্পানিটির ২০২০ সালের অর্জিত ৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার নিট মুনাফার মধ্য থেকে ৬ শতাংশ হারে শেয়ারপ্রতি ০.৬০ টাকা হিসাবে শেয়ারহোল্ডারদেরকে ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হবে। এছাড়া ৫ শতাংশ হিসেবে ২ কোটি ১১ লাখ টাকা দিয়ে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো হবে। মুনাফার বাকি ৬৪ লাখ টাকা রিজার্ভে যোগ হবে। উল্লেখ্য ১৯৯৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া জনতা ইন্স্যুরেন্সের বর্তমানে ৪২ কোটি ২৮ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধন রয়েছে। শনিবার (২৪ এপ্রিল) কোম্পানিটির শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ৩৮.৪০ টাকায়।

৮ কোম্পানির বোর্ড সভা বিকালে: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৮ কোম্পানির লভ্যাংশ এবং প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ সংক্রান্ত পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভা আজ (২৫ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানি সাতটি হলো : ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, রানার অটোমোবাইলস, আইসিবি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইউনিক হোটেল, এসকে ট্রিমস এবং আমান কটন।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের দুপুর ২টায়, রানার অটোমোবাইলসের দুপুর ২.৩৫টায়, আইসিবির বিকাল ৩টায়, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের দুপুর ২টায়, ইউনিক হোটেলের বিকাল ৩টায়, এসকে ট্রিমসের বিকাল ৩টায় এবং আমান কটনের বোর্ড সভা দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের বোর্ড সভায় লভ্যাংশ এবং রানার অটোমোবাইলস, আইসিবি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইউনিক হোটেল, এসকে ট্রিমস ও আমান কটনের বোর্ড সভায় প্রান্তিক সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তা শেয়ারহোল্ডারদের জন্য প্রকাশ করা হবে।

৫ কোম্পানির শেয়ারে বিক্রেতা উধাও: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করার মতো কোনো বিনিয়োগকারী নেই। আজ (২৫ এপ্রিল) লেনদেন চলাকালীন সময় কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর হলো : প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল ফিড মিলস, ফরচুন সুজ এবং শ্যামপুর সুগার।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১২৫.৬০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১২৫.২০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৮.১০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১২.৫০ টাকা বা ৯.৯৫ শতাংশ বেড়েছে।

ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স : বৃহস্পতিবার ফনিক্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৪১.৮০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৪২.৫০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৫.৯০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.১০ টাকা বা ৯.৮০ শতাংশ বেড়েছে।

ন্যাশনাল ফিড মিলস : বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল ফিড মিলসের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৮.৭০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৯.৩০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০.৫০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৮০ টাকা বা ৯.৬২ শতাংশ বেড়েছে।

ফরচুন সুজ : বৃহস্পতিবার ফরচুন সুজের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৭.৭০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৮ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯.৪০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৭০ টাকা বা ৯.৬০ শতাংশ বেড়েছে।

শ্যামপুর সুগার : বৃহস্পতিবার শ্যামপুর সুগারের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৪৯.৫০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৫১.৭০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৪ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.৫০ টাকা বা ৯.০৯ শতাংশ বেড়েছে।

৬ কোম্পানির ইপিএস প্রকাশ, বেড়েছে ৫টি কমেছে ১টি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি বৃহস্পতিবার প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ’২১) অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি ৩টি হলো- মার্কেন্টাইল ব্যাংক, আইপিডিসি ও লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট। এদিকে শনিবার আরও তিন কোম্পানি প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ’২১) প্রকাশ করেছে। কোম্পানিগুলো হলো: ইবনে সিনা, সোনালী পেপার ও জনতা ইন্সুরেন্স।

ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস: চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) সহযোগী কোম্পানির আয়সহ কোম্পানিটির সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস ছিল ২ টাকা ৩৩ পয়সা। তিন প্রান্তিক অর্থাৎ নয় মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিতভাবে ইবনে সিনার শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১০ টাকা ৯২ পয়সা।

যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯ টাকা ৬৩ পয়সা। তৃতীয় প্রান্তিকে এককভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (Solo EPS/Standalone EPS) হয়েছে ২ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে একক ইপিএস ছিল ২ টাকা ৩৩ পয়সা। তিন প্রান্তিকে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ১৭ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে এনওসিএফপিএস ছিল ৯ টাকা ৫৪ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৬৪ টাকা ০৮ পয়সা।

সোনালী পেপার অ্যান্ড বোড মিলস: তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২২ পয়সা। গত হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৩২ পয়সা। তিন প্রান্তিক (জুলাই’২০-মার্চ’২১) মিলিয়ে তথা নয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ২৯ পয়সা। গত হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২ টাকা ৮ পয়সা।

তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৭ টাকা ৮০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে তা ৭ টাকা ১০ পয়সা ছিল। ৩১ মার্চ, ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার নিট প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) ছিল ২৮১ টাকা ৭৩ পয়সা।

জনতা ইন্স্যুরেন্স: প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৪৪ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪০ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ৭৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৪ টাকা ৩৮ পয়সা।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক: প্রথম প্রান্তিকে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সমন্বিত শেয়ার প্রতি আ্য় (ইপিএস) হয়েছে ৬৪ পয়সা। গত বছর একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস ছিল ৫৫ পয়সা। অন্যদিকে প্রথম প্রান্তিকে এককভাবে ব্যাংকটির ইপিএস আয় হয়েছে ৫৬ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৫৩ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ২২ টাকা ৯৯ পয়সা।

আইপিডিসি : প্রথম প্রান্তিকে আইপিডিসি ‌২০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা নীট মুনাফা করেছে। গত বছর একই সময়ে মুনাফার পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি টাকা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৫৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৪০ পয়সা।৩১ মার্চ, ২০২১ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৬ টাকা ৫২ পয়সা।

লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট : প্রথম প্রান্তিকে লাফার্জহোলসিমের শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৮৯ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ছিল ৪৫ পয়সা। ইপিএস বেড়েছে ৪৪ পয়সা বা ৯৮ শতাংশ। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ১০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার। যার পরিমাণ আগের বছরের একইসময়ে হয়েছিল ৫২ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ হিসেবে মুনাফা বেড়েছে ৫১ কোটি ৩০ লাখ টাকার বা ৯৮ শতাংশ।

জনতা ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ ঘোষণা ও প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি জনতা ইন্সুরেন্স সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য ১১ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে ৬ শতাংশ ক্যাশ এবং ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১ টাকা ২৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১ টাকা ৮ পয়সা।

৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির মোট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আগের হিসাব বছরে যার পরিমাণ ছিল ৬০ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ১৪ টাকা ৪৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৪ টাকা ২২ পয়সা। আগামী ২৯ জুলাই, বেলা ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এ কোম্পানির ৩৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ জুন, ২০২১।

এদিকে জনতা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৪৪ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪০ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ৭৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৪ টাকা ৩৮ পয়সা।

বেক্সিমকো এ বছরেই টিকা উৎপাদনে যাচ্ছে: দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলতি বছরই টিকা উৎপাদনে যাচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন। শনিবার  দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়া শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের শুরুতে পরিকল্পনা ছিল সরকারকে টিকা এনে সহযোগিতা করা। কিন্তু এখন টিকা নিয়ে যে অবস্থা, নিজেদেরই টিকা বানানো ছাড়া কোনো পথ নেই। নাজমুল হাসান পাপন বলেন, টিকা উৎপাদনে যাদের সক্ষমতা রয়েছে তারা কেন এটা বানাচ্ছে না? তারা কেন এগিয়ে আসল না? কিন্তু একটা জিনিস আমরা বলতে পারি, বেক্সিমকো এ বছরের মধ্যে টিকা উৎপাদনে যেতে পারে। তবে এটা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

রাশিয়ার ফর্মুলার টিকা বাংলাদেশে তৈরি হবে বলে জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। এ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? জানতে চাইলে পাপন বলেন, বিশ্বে এখন অনুমোদন পাওয়া চারটি টিকা রয়েছে। ফাইজার, মর্ডানা, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং জনসন অ্যান্ড জনসন। এগুলো ছাড়া অনুমোদনের আগে রাশিয়ার টিকা উৎপাদন করে লাভ নেই। আপনার কী বলতে চাচ্ছেন যেটা এখনও অনুমোদন পায়নি এমন টিকা আমাদের দেশে উৎপাদন করব?

রাশিয়ার টিকার অনুমোদন নিয়ে পাপন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অথবা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অনুমোদন পেতে হবে। যদি এদের কোনো একটিতেও অনুমোদন না হয়ে থাকে তাহলে কেন এটা আমার বানাব? এটা সরকারও অনুমোদন দেবে না। সুতরাং আমি বলতে চাচ্ছি, যেকোনো মূল্যে অনুমোদন পাইলে অবশ্যই আমরা সেটি বানাবো।

টিকার সংকট থাকবে না জানিয়ে পাপন বলেন, আগামী দুই মাসে পর টিকার সংকট থাকবে না, প্রচুর টিকা চলে আসবে। দুই মাস পর আমাদের কাছে আরও অনেক অপশন চলে আসবে। টিকার সংকট জুন পর্যন্ত থাকবে। এরপর আর কোনো সংকট থাকবে না।

সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ টিকার চুক্তি হলেও দেড় কোটি ডোজ টিকার টাকা আমরা দিয়ে দিয়েছি। এই টিকা মে মাসের মধ্যে দেওয়ার কথা ছিল। সেখানে আমার পেয়েছি মাত্র ৭০ লাখ। বাকি টিকা আমাদের দিয়ে দিক। তারপর হয়তো ওদের দিকে তাকিয়ে থাকবো না। ‘ভারতও সেরামকে অগ্রিম টাকা দেয়নি, আমরা দিয়েছি’

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন বলেন, আমরা সেরাম ইনস্টিটিউটকে টিকা পেতে অগ্রিম টাকা দিয়েছি। আর কোনো দেশ অগ্রিম টাকা দেয়নি, এমনকি ভারতও দেয়নি। সুতরাং আমাদের টিকা দিতেই হবে।

তিনি বলেন, ‘সরকার সেরামকে অগ্রিম যে টাকা দিয়েছে সে অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেবে না, তা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের স্পষ্ট ভাষায় বলা উচিত অগ্রিম টাকা অনুযায়ী ভ্যাকসিন আমাদের দিতে হবে।’ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি টিকার প্রথম ডোজ নেন পাপন। দেশজুড়ে শুরু হওয়া গণ-টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেব রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকা নিয়েছিলেন তিনি।

কবে নাগাদ টিকা আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বলা কঠিন। তারা বলছে আমাদের জন্য ৫০ লাখ ডোজ প্রস্তুত করে রেখে দিয়েছে। সরকারের অনুমতি পেলেই তারা পাঠিয়ে দেবে। গত মাসে ৫০ লাখ ডোজ আসার কথা থাকলেও দিয়েছে ২০ লাখ, এ মাসেরটা তারা এখনও দেয়নি।

পাপন বলেন, আমার কথা হলো, আমাদের সরকার অগ্রিম টাকা দিয়ে যে টিকা নিশ্চিত করেছে, সেটা সে দেশের সরকার কোনোভাবেই আটকাতে পারে না। কেনোভাবেই সেটা পারে না। অন্য দেশের সঙ্গে কী হলো এটা আমাদের দেখার বিষয় না। প্রথমত এটা আমাদের টাকা, টাকা নিয়ে টিকা দেবে না, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। দ্বিতীয়ত, আমাদের এরইমধ্যে দ্বিতীয় ডোজের সংকট চলে এসেছে।

আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি, যেহেতু সেরাম আমাদের কাছে লিখিত জানিয়েছে, সরকার আটকে রেখেছে। কাজেই আমি মনে করি, এরপরে আমাদের সরকারের চুপ করে থাকা উচিত নয়। আমাদের বলা উচিত আমরা অগ্রিম টাকা দিয়েছি, আমাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই টিকা দিতে হবে। আনঅফিসিয়ালি বা ফোনে একটু কথা বললে হবে না। এটা নিয়ে সরকারের শক্ত অবস্থান নিতে হবে।’

ইবনে সিনার তৃতীয় প্রান্তিক মুনাফা বাড়ছে: পুঁজিবাজারে তালিকভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) সহযোগী কোম্পানির আয়সহ কোম্পানিটির সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস ছিল ২ টাকা ৩৩ পয়সা।

তিন প্রান্তিক অর্থাৎ নয় মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিতভাবে ইবনে সিনার শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১০ টাকা ৯২ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯ টাকা ৬৩ পয়সা। তৃতীয় প্রান্তিকে এককভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (Solo EPS/Standalone EPS) হয়েছে ২ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে একক ইপিএস ছিল ২ টাকা ৩৩ পয়সা।

তিন প্রান্তিকে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ১৭ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে এনওসিএফপিএস ছিল ৯ টাকা ৫৪ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৬৪ টাকা ০৮ পয়সা।

বীমা খাতের ১২ কোম্পানির শেয়ারে পালে হাওয়া: বিমা খাতের শেয়ারের আবারও অস্বাভাবিক উত্থান শুরু হয়েছে পুঁজিবাজারে।কয়েক দিন ধরে এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এটিকে কারসাজির সন্দেহ বলে মনে করছেন। তবে তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তৎপর হতে হবে। কারন বিমা খাতের শেয়ারের ইস্যুতে বিএসইসির নিরব ভুমিকা পালন করছে। অভিযোগ রয়েছে হিরু ও মিজান পুঁজিবাজার থেকে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করলে শত শত কোটি টাকার আয়ের উৎস বেড়িয়ে আসবে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিমার শেয়ার নিয়ে প্রথম র‌্যালিটি হয়েছিল গত বছরের আগস্ট-নভেম্বরে। তখন এ খাতের কোনো কোনো শেয়ারের দাম ৪-৫ গুণ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। পরে ওই দাম কমতে শুরু করে। তাতেই বেশি দামে শেয়ার কিনে সবচেয়ে বেশি লোকসানে পড়েন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

গত বছর একটি সংঘবদ্ধ চক্র কারসাজির মাধ্যমে বিমার শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটায়। নানা তদন্তে সেসব কারসাজিকারকদের নামও বেরিয়ে আসে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন এসে আবারও পুরোনো কারসাজিকারকেরা বিমা শেয়ার নিয়ে কারসাজিতে মেতেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বীমা খাতের ১২ কোম্পানির শেয়ার দর এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে ৪৫ শতাংশ থেকে ১৭৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এর আগেও এসব কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে দ্বিগুণ থেকে পাঁচ গুণ। কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে কারসাজিকারীরা ফের বেপরোয় হয়ে উঠেছে। এসব শেয়ার থেকে সমূহ দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

তবে পুঁজিবাজারে কয়েক মাস ধরে শেয়ার কারসাজি নিয়ে আলোচনার শীর্ষে বীমা খাত। যৌক্তিক কারন ছাড়াই একটি চক্র এই খাতের শেয়ার দর বাড়াচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে নিরব নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশনের এই নিরব ভূমিকার কারনেই ব্যাংকের থেকে লভ্যাংশে পিছিয়ে থেকেও শেয়ার দরে কয়েকগুণ বেশিতে এখন বীমা খাত। এই বৃদ্ধিতে কারসাজির বিষয়টি প্রমাণসহ গণমাধ্যমে আসলেও কমিশন তাতে কর্ণপাত করেনি। এখনো বীমা কোম্পানিগুলোর প্রতি মানুষের মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ অনাস্থা।

এই কোম্পানিগুলোকে অনেকেই প্রতারক হিসেবে মূল্যায়ন করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন নাটকেও বীমা কোম্পানিতে চাকরী করা মার্কেটিং অফিসারদের দূর্দশা ও তাদেরকে যে কি পরিমাণ হাসির পাত্র হতে হয়, তা তুলে ধরা হয়। কিন্তু সেইসব কোম্পানির শেয়ারই অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পরে।

তবে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে বীমা কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি মিজানুর রহমান ও আবুল খায়ের হিরুসহ একটি গ্রুপের কারসাজির খতিয়ান তুলে ধরা হলেও দর্শক ভূমিকা পালন করে বিএসইসি। স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও বীমায় গেম্বলারদেরকে সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে। তারা অন্যসব খাতের শেয়ার অস্বাভাবিক বাড়ার ক্ষেত্রে কারন জানতে চাইলেও বীমায় অনেকটা নিরব। এ নিয়ে রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্ষোভ।

সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুঁজিবাজারে চাঙ্গাভাব ফেরাতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর ফলে পুঁজিবাজারে চাঙ্গাভাবও ফিরতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে কারসাজি চক্র বাজারকে ম্যানুপুলেট করার চক্রান্তে মেতে উঠেছে। তারা কোনো কারণ ছাড়াই স্বল্প মূলধনী ও দুর্বল মৌলের কিছু শেয়ার দর আকাশচুম্বী করে তুলেছে।

এখন কোম্পানিগুলো সম্পর্কে নানা রকম গুজব ছড়াচ্ছে, যাতে কোম্পানিগুলোর শেয়ারে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আর আকাশচুম্বী দরের এসব শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাঁধে ফেলে অনায়াশে তারা সটকে পড়তে পারে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে অদৃশী শক্তি ১৯৯৬ সালে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রাস্তার নিয়ে খেলেছিলেন, তারাই আবার নতুন রুপে নুতন কিছু পুঁজিপতি নিয়ে অশুভ খেলায় মেতেছেন। এ শক্তিটিই খেলেছে ২০১০ সালেও। মূলত ২০১০ সালের ধস পরবর্তী সময়ে বিপর্যস্ত বাজারে যতবার আশার আলো দেখা গেছে, এ চক্রটির কারণেই সেই আলো বার বার নিবে গেছে।

এক ব্রোকারেজ হাউজের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বীমা কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করলেই ডিএসই থেকে চিঠি দিয়ে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়। এক্ষেত্রে বিক্রি করে দেওয়া ওই নির্দিষ্ট বীমা কোম্পানির বিনিয়োগের তথ্য চাওয়া হয়। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বীমার শেয়ার বিক্রিতে আতঙ্ক তৈরী করা হয়। এটা কখনোই স্বাভাবিক লক্ষণ না। দেখা গেছে, ২০২০ সালের ব্যবসায় ১৫টি ব্যাংক ও ১০টি বীমা কোম্পানির পর্ষদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে ব্যাংকের গড় লভ্যাংশ ঘোষণার পরিমাণ ১৬.৪০ শতাংশ। আর বীমা কোম্পানির গড় ১৪.৫০ শতাংশ।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক মাসের কম সময়ে তালিকাভুক্ত ১২টি কোম্পানির শেয়ার দর ৪৫ শতাংশ হতে ১৭৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এসব শেয়ার কিছুদিন আগেও দ্বিগুণ, তিনগুণ হারে বেড়েছে। তারপর কিছুদিন বিরতি দিয়ে এসব শেয়ার নিয়ে ফের কারসাজিতে মেতেছে তারা। এখন বাজারে গুজব ছড়াচ্ছে, বীমা খাতের কোন শেয়ারই ১০০ টাকার নিচে থাকবে না। কোন কোন শেয়ার দর ২০০ টাকার বেশি হয়ে যাবে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সদ্য তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি দেশ জেনারেল ইন্সুরেন্স, প্রভাতী ইন্সুরেন্স, বিএনআইসিএল ইন্সুরেন্স, ফেডারেল ইন্সুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্স, অগ্রণী ইন্সুরেন্স, পূরবী ইন্সুরেন্স, ঢাকা ইন্সুরেন্স, সোনারবাংলা ইন্সুরেন্স, নর্দার্ন ইন্সুরেন্স ও প্রাইম ইন্সুরেন্সের।

দেশ জেনারেল ইন্সুরেন্স: কোম্পানিটি গত ২৯ মার্চ অভিহিত মূল্যে পুঁজিবাজারে আসে। প্রথমদিন কোম্পানিটির শেয়ার ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে লেনদেন হয় ১৫ টাকায়। পরের দিনও ৫০ শতাংশ দর বৃদ্ধি নিয়ে উঠে ২২ টাকা ৫০ পয়সায়। এরপর টানা ১০ শতাংশ দর বৃদ্ধি নিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার ৪১ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দর বেড়েছে ১৭৩ শতাংশ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূল্য আয় অনুপাত (পিই) অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৬ টাকার পরই ঝুঁকিতে পড়েছে। এখন মহাঝুঁকিতে রয়েছে। কোম্পানিটির বর্তমানে পিই ৬১.৫০।

প্রভাতী ইন্সুরেন্স: গত ২৪ মার্চ ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৭৫ টাকা ১০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৫ টাকা ৬০ পয়সায়। দর বেড়েছে ৬৭.২৪ শতাংশ। ঘোষিত ১৭ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড বিবেচনায় নিলে এর বৃদ্ধির হার আরও বাড়বে। কোম্পানিটির বর্তমান পিই ৪০.৫২।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্সুরেন্স কোম্পানি (বিএনআইসিএল): গত ২৪ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৬৫ টাকা ৯০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৯ টাকায়। দর বেড়েছে ৬৫.৪০ শতাংশ। কোম্পানিটির পিই ৫২.৭৪।

ঢাকা ইন্সুরেন্স: গত ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৩৫ টাকা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৩.৫০ টাকায়। দর বেড়েছে ৫২.৮৫ শতাংশ। কোম্পানিটির ঘোষিত ডিভিডেন্ড বিবেচেনায় নিলে দর বেড়েছে ৬০ শতাংশ।

প্রাইম ইন্সুরেন্স: গত ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ২৯ টাকা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪২ টাকা ৮০ পয়সায়। দর বেড়েছে ৪৭.৫৮ শতাংশ। ঘোষিত ডিভিডেন্ডে বিবেচনায় নিলে দর বেড়েছে ৬২.৩৪ শতাংশ।

ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্স: গত ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৩২ টাকা ৪০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫২ টাকা ৩০ পয়সায়। দর বেড়েছে ৬১.৪২ শতাংশ।

ফেডারেল ইন্সুরেন্স: গত ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১৭ টাকা ৫০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭ টাকা ৬০ পয়সায়। দর বেড়েছে ৫৭.৭১ শতাংশ।

পূরবী ইন্সুরেন্স: গত ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ২৪ টাকা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ টাকা ৯০ পয়সায়। দর বেড়েছে ৪৯.৫৮ শতাংশ।

সোনারবাংলা ইন্সুরেন্স: গত ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৪২ টাকা ৮০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৩ টাকা ১০ পয়সায়। দর বেড়েছে ৪৭.৪২ শতাংশ।

নর্দার্ন ইন্সুরেন্স: গত ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ২৯ টাকা ৬০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪২ টাকা ৯০ পয়সায়। দর বেড়েছে ৪৫ শতাংশ।

প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুরেন্সে ঘোষণা ছাড়াই মালিকানা পরিবর্তন: চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছিল মাত্র দুই হাজার ১২২টি। আর ব্লক মার্কেটে একটিও শেয়ার লেনদেন হয়নি। পাশাপাশি কোনো শেয়ার উপহার কিংবা শেয়ার স্থান্তান্তর হয়নি। অথচ লেনদেনবিহীন ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ৫৭২টি শেয়ারের মালিকানা বদল হয়ে গেছে রাতারাতি।

ফলে প্রতিষ্ঠানটির আগের মাসের তুলনায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার হোল্ডিং বেড়েছে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এমন তথ্য চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত হচ্ছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হতভম্ব হয়ে পড়ে।

সূত্রে জানা যায়, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রতি মাসের লেনদেনকৃত শেয়ারের হালনাগাদ তথ্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে অবহিত করতে হয়, যা পরে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো তাদের ওয়েবসাইটে আপটেড করে। আর এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে একজন বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অথচ জীবন বিমা খাতের নিবন্ধিত কোম্পানি প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ভুল তথ্য দিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জকে!

প্রতিষ্ঠানটিতে মার্চ মাস শেষে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার হোল্ডিং বেড়েছে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মোট শেয়ার হোল্ডিং দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আগের মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণ ছিল ১৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। অর্থাৎ এ সময়ে ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ৫৭২টি শেয়ারের লেনদেনবিহীন মালিকানা বদল হয়েছে। অথচ পুরো মাসে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছিল মাত্র দুই হাজার ১২২টি।

কোম্পানিটির লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ মার্চে লেনদেন হয়েছিল মাত্র ১০০টি শেয়ার, ৭ মার্চ হয়েছিল এক হাজার ৪৬৪টি, ২১ মার্চ ৯৯টি, ২৫ মার্চ ৪৪০টি এবং মাসের অন্যান্য দিনগুলোয় ১৯টি। একই সঙ্গে ব্লক লেনদেন ছিল শূন্য। পাশাপাশি কোনো ধরনের শেয়ার উপহার কিংবা শেয়ার স্থানান্তরের আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা ছিল না।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত হচ্ছে এমন তথ্য। অপরদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এখনও মার্চ মাসের শেয়ার হোল্ডিংয়ের তথ্য আপটেড করেনি। গত ফেব্রুয়ারি মাসের তথ্য দেখানো হচ্ছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হতভম্ব হয়ে পড়ে, যা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে প্রতারণা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একাধিক বিনিয়োগকারী এ প্রতিবেদককে বলেন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে মার্চ মাসে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির আগের মাসের তুলনায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার হোল্ডিং বেড়েছে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অথচ মার্চ মাসে মূল মার্কেটে প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছিল মাত্র দুই হাজার ১২২টি। ব্লক মার্কেটে একটিও শেয়ার লেনদেন হয়নি। পাশাপাশি কোনো শেয়ার উপহার কিংবা শেয়ার স্থানান্তর হয়নি।

অথচ লেনদেনবিহীন ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ৫৭২টি শেয়ারের মালিকানা বদল হয়ে গেছে রাতারাতি। এটা কীভাবে সম্ভব? তাহলে কি এভাবে স্টক এক্সচেঞ্জ ও কোম্পানি মিলে ভুল তথ্য দেয়? আবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ তো মার্চ মাসের হালনাগাদ তথ্য সংযোজন করেনি। তাহলে আমরা সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কোথায় যাব? এসব কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দায় কে নেবে? এটি একটিমাত্র অপরাধ নয়, কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা বাধ্যতামূলক। আর পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ জোগান দেবে উদ্যোক্তা পরিচালকরা।

এমনটাই বলা আছে দেশের বিমা আইনে। অথচ প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে পরিশোধিত মূলধন আছে মাত্র ১৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ধারণ আছে ৩৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর আইন পরিচালনে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের। অপরদিকে বিমা আইন লঙ্ঘন করলেও রীরব ভূমিকা পালন করছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম বলেন, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণ বৃদ্ধির তথ্যটির ক্ষেত্রে কোম্পানি কর্তৃপক্ষই ভুল তথ্য দিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জকে, আমাদের সিস্টেম অপারেটর সেভাবে তথ্য উপস্থাপন করেছে।

এ বিষয়ে আমরা প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে নোটিস দিয়েছি। তারা এখন পর্যন্ত নোটিসের জবাব দেয়নি। তবে এটা জানিয়েছে, তাদের তথ্য ভুল দিয়েছে। আর ভুল তথ্যের জন্য কমিশন শাস্তি দিতে পারে। কারণ শাস্তি দেয়ার এখতিয়ার আমাদের হাতে নেই। অপরদিকে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ জহির উদ্দিন বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার হোল্ডিং ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধির তথ্যটি ভুল। আমরা সংশোধনে কাজ করছি।

উল্লেখ্য, জীবন বিমা খাতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০০ সালে কার্যক্রম শুরু করেছিল প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। আর পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হয় ২০০৬ সালে। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ধারণ ৩৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। গত এক বছরের প্রতিষ্ঠানটির সর্বনিম্ন শেয়ারদর ছিল ১০৩ টাকা ২০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ১৫৮ টাকা ৫০ পয়সা।

আর ২০১৯ সাল শেষে নিট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৩৩ কোটি টাকা। আর সেই বছরের ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয়া হয়। সেই সময়ে পাঁচ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় কম হয়েছিল, অপরদিকে বিনিয়োগ আয় এক কোটি ৬৭ লাখ টাকা বেশি আয় হয়েছিল।